উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস! রাশ ধরুক আরএসএস, জোর চর্চা দলের অন্দরে

উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস, দলীয় সংগঠনের উপর আর ভরসা নেই । বরং, বাগান শ্রমিকদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে চা বলয়ের রাশ এখন থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) হাতে থাকুক— এমনই চাইছেন খোদ বিজেপি নেতাদের একাংশও। কিন্তু চাইলেও সেই কাজ তত সহজ নয় বলেও মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের ওই নেতাদের অনেকেই।

এবার লোকসভা ভোটে চা শ্রমিকদের মন জয়ে বিজেপিও চেষ্টার কোনও কসুর করেনি। এদিকে চা বলয়ের অন্যতম আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে এবারও জিতেছে বিজেপি। তবে দুটি কেন্দ্রেই জয়ের ব্যবধান কমেছে। আর সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের মালবাজার আর আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের নাগরাকাটা এই দুটি জায়গায় রয়েছে একাধিক চা বাগান। আর এখানকার ভোট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেন চা শ্রমিকরা। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে বিজেপির থেকে। আর আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের অপর চা বাগান অধ্য়ুষিত এলাকা মাদারিহাট ও কালচিনিতে তৃণমূলের থেকে বিজেপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে যতটা ব্যবধান তৈরি করতে পেরেছিল ততটা নয়। এটাই বিজেপির কাছে চিন্তার বড় কারণ।

কারণ চা বলয়ে সংগঠন যদি ধস নামে তাহলে বিরাট সমস্যায় পড়তে পারে বিজেপি। আর ইতিহাস বলছে চা শ্রমিকরা একবার পাশ থেকে সরে গেলে তাদের ফের সেই পতাকার নীচে ফেরানো বেশ কষ্টকর। সেক্ষেত্রে বিজেপি শেষ পর্যন্ত এই কাজ কতটা করতে পারবে সেটাই দেখার।

আরো পড়ুন- একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!

চা সুন্দরী প্রকল্প, চা শ্রমিকদের রেশন, চা সুন্দরী এক্সটেনশন সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের জেরে চা বলয়ে খুব দ্রুত সংগঠন করতে পেরেছে তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপিও ধাপে ধাপে নানা বঞ্চনাকে সামনে রেখে সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এবারের ফল দেখে বোঝা যাচ্ছে ধস নামছে বিজেপির ভোটে। সেক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে এখন ভরসা বলতে আরএসএস। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। কিন্তু প্রকাশ্যে এনিয়ে বিজেপি নেতারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

যদিও সেই বিজেপি নেতাদের একাংশই জানাচ্ছেন, বিষয়টি তত সহজ নয়। কারণ, চা বলয়ের রাজনীতির ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলীয় পতাকাও বড় ‘ফ্যাক্টর’। যে পতাকাকে সামনে রেখে নির্বাচনে কোনও দল লড়াই করে। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “চা বলয়ের দলের ভোট কেন কমল, সে বিষয়ে দলে অবশ্যই পর্যালোচনা করা হবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের মাথায় রয়েছেন জন বার্লা। তিনি এবার ভোটে কিছুটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সেক্ষেত্রে তাঁর সংগঠন এবার কতটা মাঠে নেমেছিল সেটাও দেখার।

একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!

ভোটের রেজাল্ট বেরিয়েছে, কিন্তু প্রত্যাশার ধারে কাছে পৌঁছাতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। পরিস্থিতিতে যে এতটা খারাপ হবে তাও বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। তার মধ্যেই এবার বিজেপির রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, এখন বিজেপির সাংসদ ২৪০। ইন্ডিয়ার সাংসদ সংখ্য়া ২৩৭। তিনজন এলে বিজেপি হয়ে যাবে….। আর ইন্ডিয়া হয়ে যাবে ২৪০।

সাকেত লিখেছেন, তিনজন বিজেপি সাংসদ বাংলার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এবার একটা শীঘ্রই ভালো চমক আসছে। মোদীর অস্থায়ী কাঠাবো বেশি দিন টিকবে না।

তবে কোন তিনজন বিজেপি এমপি যোগাযোগ রাখছেন তা তিনি লেখেননি। তবে এসবের মধ্য়েই বিজেপির অন্দরে টেনশন ক্রমশ বাড়ছে। কারণ ভোটে জিতে যাওয়ার পরে বিজেপির বিধায়কদের মধ্য়ে কয়েকজন অতীতে তৃণমূলে গিয়েছে এমন অনেক নজির রয়েছে। এবার যদি এমপিও চলে যায় তাহলে তো আরও ফাঁকা হয়ে যাবে বিজেপি।

আরো পড়ুন- জামাইষষ্ঠীতে জামাই আসতে পারছেনা, ফোনেই পাঠান শুভেচ্ছাবার্তা

এদিকে ভোটে পরাজিত হওয়ার পরে খোদ দিলীপ ঘোষই মুখ খুলেছিলেন। দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘বর্ষীয়ান এবং প্রতিষ্ঠিত নেতাদের কি পরাজিত করার জন্যই পাঠানো হয়েছিল? রাজনৈতিক দলগুলি সাধারণত যে আসনগুলি আগে হেরেছিল সেগুলি জিততে পরিকল্পনা করে। কিন্তু এখানে মনে হচ্ছে আমরা যে আসনগুলি আগে জিতেছিলাম সেগুলি হারানোর একটি ইচ্ছাকৃত পরিকল্পনা ছিল।’ ক্ষুব্ধ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেছিলেন, ২৫ জন নেতার মূল কমিটিতে তাঁর মতো ‘যোদ্ধাদের’ জন্য কোনও স্থান নেই। তাঁর মতে ‘কমিটি অযোগ্য লোকদের দিয়ে ভরা ছিল। আমাদের এমন নেতাদের প্রয়োজন যারা লড়াই করতে পারে এবং যারা কৌশল নির্ধারণ করতে পারে।’

আবার বিজেপির কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃতা রায় বলেছেন, দলের পশ্চিমবঙ্গ ইউনিটে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি দলের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্ব দেখেছি। যদি এটি চলতে থাকে, তা আমাদের ভবিষ্যতে ক্ষতি করবে। আমি শুনেছি যে প্রচারের জন্য অনেক টাকা এসেছে, কিন্তু আমি সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলাম। আমি অপমানিত বোধ করেছি।’

‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন’, তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের বার্তা অভিষেকের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ২৪ ঘণ্টা আগে শেষ হয়ে গিয়েছে শেষ দফার ভোট। ৪ তারিখ ভোটগননা। ভোটটগণনার আগে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে বিশেষ নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে দলের জেলা সভাপতি ও প্রার্থী সঙ্গে বৈঠকে অভিষেকের পরামর্শ, বিজেপি নানাভাবে প্রভাবিত করবে, হইহল্লা করে তৃণমূলের (TMC)কাউন্টিং এজেন্টদের মনোবল ভেঙে আগে থেকেই জয়ের ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু সেসবে কান দিলে চলবে না। ‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন।’ পাশাপাশি তিনি দলের নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করে এও বলেন, ষষ্ঠ দফার ভোটেই ২৩ আসন পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। কাজেই আসন সংখ্যা নিয়ে ভাবার দরকার নেই।

১ জুন লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabbha Election 2024) ভোটগ্রহণ পর্ব শেষের পরই বেরিয়েছে এক্সিট পোল। তাতে ইঙ্গিত, বাংলায় বিজেপির (BJP) আসনবৃদ্ধি হবে। তৃণমূলের শক্তিক্ষয় হবে। আর তার পরই দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে রবিবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন’। ছেড়ে আসবেন না। বিজেপি এজেন্টদের প্রভাবিত করতে পারে, ভয় দেখাতে পারে, হুমকি দিতে পারে। বাইরে এসে ‘জয়ী হয়ে গিয়েছি’ বলে চিৎকারও করতে পারে। নন্দীগ্রামের মতো আপনারা গণনা শেষ না করে বেরিয়ে আসবেন না। শেষ পর্যন্ত থাকবেন।”

তৃণমূল সূত্রে খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক কেউই বুথফেরত সমীক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনুযায়ী বেশির ভাগ লোকসভা আসনে জোড়া ফুল ফুটবে বলে মনে করছেন তাঁরা। কিন্তু যে কোনও ভোটের গণনা পর্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সাংগঠনিক ভাবে দল কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে, সেই বিষয়ে জানতেই বৈঠকে বসছেন ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ। ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে ডায়মন্ড হারবারে একঝাঁক বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছে বিজেপি। পদ্মশিবিরের এমন দাবি নিয়ে বৈঠকে অভিষেক কোনও মন্তব্য করেন কি না, সে দিকেই তাকিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, বুথফেরত সমীক্ষাকে ‘ফেক’ বা ভুয়ো বলে অভিহিত করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তৃণমূল কর্মীদের শক্ত থাকার বার্তা দিয়ে ‘টিভি নাইন’ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূলনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের রাজ্য নিয়ে যেটা দেখাচ্ছে, তাকে আমি বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না। এটা একেবারে ভেগ, একেবারে ফেক।’’ তিনি আরও বলেন ‘‘সংবাদমাধ্যম কী করে বলে দিচ্ছে, ওই আসনে ও জিতবে, অমুক আসনে কে জিতবে… কত টাকার বিনিময়ে? আমি এই সংবাদমাধ্যমের হিসাব মানি না। কর্মীদের বলব শক্ত থাকতে। গণনা ভাল করে করতে। যা দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম, তার দ্বিগুণ পাব। প্রত্যেকটা আসন আমরা জিতব।’’ তবে রাজ্যে তৃণমূল ঠিক কতগুলি আসন পাবে, সেই সংখ্যা সংক্রান্ত বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাননি মমতা। সেই প্রশ্নে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘আমি কোনও নম্বরে যাব না। কিন্তু একটা কথা আপনাদের বলতে পারি, আমরা যে ভাবে মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করেছি, লোকের চোখ দেখেছি, তাতে আমার কখনও মনে হয়নি যে, মানুষ আমাদের ভোট দেবেন না।’’

মিঠুন চক্রবর্তীকে ঘিরে ‘চোর চোর’ স্লোগান! অস্বস্তিতে মিঠুন

শনিবার সকালে বেলগাছিয়ার একটি বুথে ভোট দেওয়ার জন্য পৌঁছোন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুন যেতেই বুথে তাঁকে ঘিরে ওঠে ‘চোর চোর’ স্লোগান। এই ঘটনায় বেশ বিব্রত দেখায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। ভোট দিতে বুথে ঢুকে যান মিঠুন। পরে ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে তিনি জানান, যে এবার আর রাজনীতির কথা বলবেন না তিনি। সিনেমার জগতেই ফিরে যেতে চান তিনি।


আরো পড়ুন- সারা বছর আমের ফলন! দিশা দেখাচ্ছেন মালদার রাজীব রাজবংশী

শনিবার সপ্তম তথা শেষ পর্বের নির্বাচনের শুরু থেকেই দিকে দিকে অশান্তির খবর সামনে আসতে শুরু করে। জেলাগুলি থেকে তো বটেই, শহর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গন্ডগোলের ছবি সামনে আসে। কাশীপুর, বেলেঘাটায় বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়কে ঘিরে বেনজির বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। মিঠুনকে দেখে ‘চোর চোর’ স্লোগান তোলেন। মিঠুন লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ভোট দিয়ে বেরনোর সময় সেই নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলে, জানান, নির্বাচন কমিশনের আদর্শ আচরণ বিধি জারি রয়েছে। তাঁর কথায় ভোটে প্রভাব পড়তে পারে, সন্ধে ৬টার পর যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি তৈরি বলে মন্তব্য করেন মিঠুন। (Lok Sabha Elections 2024)।

https://x.com/ANI/status/1796732594597609737?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1796732594597609737%7Ctwgr%5E58db6e17fbf1ee92903990cba5e0d4996999fe15%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fd-29657901071151022889.ampproject.net%2F2405160547000%2Fframe.html

ভোট দিতে বাধা, পুকুরে ইভিএম ফেললেন গ্রামবাসীরা! উত্তপ্ত কুলতলি

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, রেগে গিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে ইভিএম নিয়ে পুকুরেই ফেলে দিলেন গ্রামবাসীরা। উত্তপ্ত কুলতলি । এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তবে মাঝপথেই পুলিশকে আটকানো হয়। রাস্তার মাঝে গাছের গুঁড়ি ফেলে দিয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

লোকসভা ভোটগ্রহণের শেষপর্বে ফিরল অশান্তির ‘চেনা’ ছবি। ভোট শুরুর আগে থেকেই দফায়-দফায় উত্তেজনার ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। এর মধ্য়ে অন্যতম জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুলতলির মেরিগঞ্জ ২ নম্বর অঞ্চলের ৪০ ও ৪১ নম্বর বুথের ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদেই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পুকুরে ফেলে দেয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশ এলে তাদের গাড়ির সামনে গাছের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ চলতে থাকে।

বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারীর অভিযোগ, বিরোধী এজেন্টদের বসতে দিচ্ছিল না তৃণমূল। এদিকে নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি।

বিজেপির দাবি, সকাল থেকেই বিজেপি কর্মীদের একাংশের দাবি তাদের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। এমন মারধর করা হয়েছে তিনি আর উঠতে পারছেন না। পুলিশ এসে কিছুই করতে পারছে না। এদিকে গ্রামবাসীদেরও অভিযোগ, তাদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এদিকে এই সব উত্তেজনার মাঝে আহত হন এক বিজেপি কর্মী। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর মা জানান, তাঁর ছেলে এবারে বিজেপির বুথ এজেন্ট হয়েছেন। তবে ছেলে বুথে বসতে গেলে তাঁকে ধরে মারধর করা হয়।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান কমিশনের আধিকারিকরা। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে কমিশন। এদিকে সকাল ৭টা থেকে ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মেরিগঞ্জ ২ নম্বর অঞ্চলের ৪০ ও ৪১ নম্বর বুথে ভোটগ্রহণ ব্যাহত হয়। পরে বিকল্প ইভিএম এনে সেখানে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। উল্লেখ্য, এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে রাজ্যের বহু জায়গায়। সেখানে ব্যালট বাক্স জলে ফেলা হয়েছিল। এই নিয়ে বিজেপি প্রার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘৪১ ও ৪১ নম্বর বুথে এজেন্টদের বসতে না দেওয়ার গ্রামের মহিলারা জমায়েত করেন। তাঁদের দাবি এজেন্টদের বসতে দিতে হবে। কিন্তু শাসকদল বাধা দেয়। এজেন্টদের বসতে দিতে চাইছে না। সেই জন্য সমস্ত মহিলারা একজোট হয়ে ইভিএম জলে ফেলে দেন।’

বাবা CPM-এর হোলটাইমার! ভাতায় চলে সংসার, মাধ্যমিকে তৃতীয় উদয়ন হতে চায় ডাক্তার

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বাবা সিপিআইএমের হোলটাইমার। ভাতায় চলে সংসার, সেই উদয়ন প্রসাদ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছে। ৭০০-র মধ্যে পেয়েছে ৬৯১ নম্বর। আর তারপর বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্রকে সিপিআইএমের তরফে অভিনন্দন জানানো হল। সিপিআইএমের তরফে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় তৃতীয় হয়েছে উদয়ন প্রসাদ। উদয়নের ডাক নাম লেনিন। বালুরঘাটে বাড়ি। অভিনন্দন উদয়নকে।

উদয়নের বাবা, উমেশ প্রসাদ বালুরঘাট পার্টি অফিসের সিপিআই (এম)-র সর্বক্ষণের কর্মী। মা বিন্দু বারুই প্রসাদ গৃহবধু। জানা যায়, ডাক্তার হতে চান উদয়ন। উদয়ন বলেন ‘এতটা সাফল্য পাবো আশা করিনি। তবে এই ফলাফল ভালো লাগছে। দিনে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা পড়তাম আমি। আর টেস্ট পরীক্ষার পরে পড়াশোনাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলাম’।

উদয়ন জানান, অনেক কষ্টে সংসার চলে আমাদের। বাবা পার্টির হোলটাইমার। পার্টি যা ভাতা দেয় তাতেই চলে সংসার।

আর ছেলে যে সেই কষ্টের দাম দিয়েছে, তাতে গর্বে বুকে ফুলে যাচ্ছে বাবা উমেশ। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম যে ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে। ছোট থেকেই ও ভালো রেজাল্ট করে আসে। (মাধ্যমিকের তৃতীয় হয়েছে) জানার পরে খুবই ভালো লাগছে।’

ছিল না গৃহশিক্ষক, মাধ্যমিকে তৃতীয় বীরভূমের কন্যা, কেমন ছিল পুষ্পিতার লড়াই

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পুষ্পিতা বাঁশুড়ি। মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে সে আর মেয়েদের মধ্যে প্রথম পুষ্পিতা। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১ । বীরভূমের ইলামবাজার থানার কামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পুষ্পিতার এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর আত্মীয়স্বজন। গ্রামের বাসিন্দারা।

দারোন্দা হাই স্কুলের বাংলার পার্শ্বশিক্ষক মা তনুশ্রী ঘোষ এবং বিজ্ঞান শাখার গৃহশিক্ষক বাবা সত্যনারায়ণ বাঁশুরি মেয়ের সাফল্যে আপ্লুত। সংবাদমাধ্যমকে পুষ্পিতা বলে, “গৃহশিক্ষক ছাড়াই এত ভাল ফল করব এটা আশা করিনি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং মা-বাবাকে ছাড়া এই ফল মিলত না।”

পুষ্পিতার কথায়, “খুব ভালো লাগছে এই সাফল্যে। তৃতীয় হব এটা ভাবতে পারিনি। আমার সাফল্যর নেপথ্যে আমার মা-বাবা। স্কুলের শিক্ষকদের অবদান রয়েছে অনেকটাই। আমি প্রতিদিনই স্কুলে যেতাম। আর স্কুলের সময় বাদ দিয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করার চেষ্টা করতাম। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।”

এবার যারা মাধ্যমিক দিতে চায় তাদের জন্য টিপস দিয়েছে পুষ্পিতা। সে জানিয়েছেন, ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে।

পুষ্পিতার মা তনুশ্রী ঘোষ জানিয়েছেন, আমরা আশা করেছিলাম যে ও মাধ্যমিকে একটা ভালো জায়গায় থাকবে। কিন্তু এতটা ভালো করবে এটা ভাবতে পারিনি। ছোট থেকে ওর মধ্য়ে একটা চেষ্টা ছিল যে আমায় কিছু একটা ভালো করতে হবে। ওর চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। একজন প্রাইভেট টিউশনও ছিল না। নিজের চেষ্টাতে করেছে। আমরা যতটা পেরেছি ততটা করেছি। আমার স্কুলের সহকর্মীরাও খুব সহায়তা করেছে। খুব লড়াই করেছে মেয়েটা। মেয়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। তারপর দেখা যাক কী হয়। ইঞ্জিনিরায়িং নিয়ে পড়তে চায়।

প্রথম দফার ভোট মিটতেই উত্তরের ৩ আসনে বিজয় মিছিল তৃণমূলের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ তিন কেন্দ্রেই গতবার জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। উত্তরবঙ্গকে কার্যত গড় বলা হয় গেরুয়া শিবিরের। সেই উত্তরবঙ্গের তিনটি কেন্দ্রে আজ নির্বাচন সংগঠিত হয়। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে মোটের উপর শান্তিতেই ভোট হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনই। ভোট মেটার পর দেখা গেল, তিন কেন্দ্রেই পালা করে ‘আনন্দ মিছিল’ বা আক্ষরিক অর্থে আগাম বিজয় মিছিলের আয়োজন করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে।

অন্যদিকে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এদিন লাড্ডু খাওয়ালেন দলের কর্মীরা। তাঁরা নিশীথের জয় নিয়ে আশাবাদী। বলেন, “নিশীথ প্রামাণিক এবার জিতছেনই। বিভিন্ন মণ্ডল থেকে যে সমস্ত ইতিবাচক খবর এসেছে, তাতে আমাদের জয় নিশ্চিত।”

সব মিলিয়ে, গণনার আগেই জয়ের দাবি করে ‘বিজয় মিছিলে’ মেতে উঠল কোচবিহার। যদিও কে কার আগে মিছিল বার করবে, তা নিয়ে চাপা চাপানউতর ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোচবিহারের জেলা সভাপতি ঘোষণা করেন, জয় তাঁদেরই হচ্ছে। তাই জয়ের আগাম মিছিল হবে। সন্ধ্যায় মিছিলও করেন তাঁরা। কোচবিহার তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের কথায়, ‘‘মানুষের রায় আমাদের কাছে পরিষ্কার। প্রতিটি বুথ থেকে আসা রিপোর্ট খুবই ভাল। বিজেপি দেওয়ালের লিখন পড়তে পারছে না। আমরা লিখে দিচ্ছি, কোচবিহারে বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক লক্ষাধিক ভোটে হারছেন। বিজেপি কোনও বিধানসভাতেই লিড পাচ্ছে না। এমনকি কোচবিহার শহরেও আমরা অপ্রত্যাশিত ফলাফল করতে চলেছি।’’

কোচবিহারের বিজেপির সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে কোচবিহারে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। এ বার তার জবাব দিলেন মানুষ। জয়ের ব্যাপারে আমরা ১০০ শতাংশ আশাবাদী। এ জন্য আমরা মিষ্টিমুখ করলাম, বাজি পোড়ালাম। তৃণমূল বিজয় মিছিল করছে, না পরাজয় মিছিল করছে, সেটা ৪ তারিখে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরে নাকা চেকিং এর সময় উদ্ধার বিপুল পরিমাণে ফেনসিডিল! ধৃত ২

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হরিশ্চন্দ্রপুরে নাকা চেকিং এর সময় ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশের হাতে ৩১৪ বোতল ফেনসিডিল ধরা পড়লো। আর এই ফেনসিডিল পাচার করতে গিয়ে ধৃত ২ পাচারকারী। দুই পাচারকারীর নাম বিজয় কুমার সাহা(৪৫), বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায়। অন্যজন সেতাব উদ্দিন (৩০), তার বাড়ি মালদার বৈষ্ণবনগর এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে লোকসভা ভোট উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ প্রশাসন কড়া নাকা চেকিং করছে। আজ ভালুকায় মনিপুর এর কাছে ঢালাই মোড়ে নাকা চেকিং করতে গিয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ। এদের কাছ থেকে তিনটি ব্যাগে উদ্ধার হয় প্রায় ৩১৪ টি ফেনসিডিলের বোতল। জানা গিয়েছে ঝাড়খন্ড থেকে এই নেশা সামগ্রী, বাংলায় প্রচার করা হচ্ছিল। এই দুজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ প্রশাসন। আগামীকাল তাদের কোর্টে তোলা হবে।

Arjun Singh: বিশ্বাসঘাতকতা করেছে দল! ব্যারাকপুরে টিকিট না পেয়ে বিস্ফোরক অর্জুন

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পার্থ ভৌমিককে প্রার্থী করেছে তৃণমুল। টিকিট না পেয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। ১০ ই মার্চ ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় সামনের সারিতে বসে থাকা অর্জুন রীতিমতো অপমানিত বোধ করছেন। তাঁর সাফ কথা, টিকিট পাবেন না জানলে, তিনি তৃণমূলে ফিরতেনই না। তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে দল।

অর্জুন জানান, তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব৷ ঘনিষ্ঠ মহলে অর্জুন দাবি করেছেন, তাঁকে প্রার্থী করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে৷ শুক্রবার পর্যন্ত তাঁর নামই ব্যারাকপুরের প্রার্থী হিসেবে পাকা হয়েছিল বলেও দাবি করছেন অর্জুন ঘনিষ্ঠরা৷ শেষ পর্যন্ত তাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। পার্থ ভোমিককে প্রার্থী করেছে তৃণমুল।

অর্জুন সিং আরও বলেন, ‘আমি মরশুমী ফল নয়, বারো মাসের ফল। সবসময় রাজনীতিতে থাকি,মানুষের সঙ্গে থাকি। মনে আক্ষেপ তো থাকবেই। আমি ব্যারাকপুরের মানুষকে ঠকাইনি। ব্যারাকপুরকে ছেড়ে যাব না, এখানে জন্মেছি, এখানে মরব।’

বিজেপি সূত্রে খবর, অর্জুনের জন্য দলের দরজা খোলা রয়েছে। রবিবার তেমনই এক মৃদু ইঙ্গিত দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, বিজেপি মনে করে না, অর্জুন তৃণমূলে গেছেন! কারণ তার পরিবার তার পুত্র এখনো বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। তাই তাকে দলে নিতে বিজেপির কোনো বাধা নেই। কিন্তু ব্যারাকপুরে বিজেপি তাকে প্রার্থী করবে কিনা সেটা ঠিক করবে দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে।

তবে দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ব্যারাকপুরে তৃণমূল পার্থকে প্রার্থী করায় ‘খুশি’ বিজেপি নেতারা। কারণ, বিজেপি এখনও পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে অর্জুনের ‘বিকল্প’ খুঁজে পায়নি।

কিন্তু অর্জুন সিং কি বিজেপি ডাকলে সাড়া দেবেন? না কি নিজে থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন? অর্জুনের স্পষ্ট জবাব, ‘‘সবার আগে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলব। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত জানাবেন, সেটাই আমার সিদ্ধান্ত।’’

এদিকে অর্জুনের কর্মী-সমর্থকরা যদি তাঁকে বিজেপিতে যেতে বলেন, তাতে অবাক হওয়ার খুব বেশি কিছু থাকবে না। মনে করা হচ্ছে দু’এক দিনের মধ্যেই অর্জুনের পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ জানা যাবে। অর্জুন যে বিজেপিতেই যাবেন, তাও স্পষ্ট করে বলেননি। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, ‘‘তৃণমূল কথা দিয়ে কথা রাখেনি। দাদা তাই বিজেপিতে যেতে তৈরি।’’

রাজনৈতিক মহলের মতে, অর্জুনের বিজেপিতে যাওয়ার কেবল সময়ের অপেক্ষা। দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সিগন্যাল এলেই দুই এক দিনের মধ্যেই অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেবেন। তখন ব্যারাকপুরে পার্থ বনাম অর্জুনের লড়াই আরো একবার জমে উঠবে। এখন দেখার লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের কোনও বড় পদক্ষেপ করেন কি না, ভাটপাড়ার তথা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।

প্রসঙ্গত গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন অর্জুন সিং। ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে অর্জুনকে প্রার্থীও করে বিজেপি। কড়া টক্করের মধ্যে দিয়ে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে ১৪,৮৫৭ ভোটে জয়ী হন অর্জুন সিং। যদিও বিজেপিতে থেকেই নিজের সাংসদ পদের পাঁচ বছর শেষ করেননি তিনি। ২০২২ সালের মে মাসেই ফের তৃণমূলে’ঘর ওয়াপসি’ হয়। তারপর থেকে তৃণমূলেই রয়েছেন তিনি। যদিও খাতায়কলমে তিনি বিজেপি সাংসদই রয়ে গিয়েছেন।

কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রমরমিয়ে চলছে পুকুর ভরাট, হেলদোল নেই প্রশাসনের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রকাশ্য দিবালোকে রমরমিয়ে চলছে পুকুর ভরাট। কাউন্সিলারের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছে পুকুর ভরাট। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলার এবং পৌরপ্রধানকে বারবার জানিয়েও তারা কোন ব্যাবস্থা নেননি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন বারবার পুকুর ভরাটের (Pond Filling) বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলছেন, প্রশাসনিক আধিকারিকদের, ঠিক তখন মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিকে পাত্তা না দিয়েই কাঁচরাপাড়া পৌর অঞ্চলের মধ্যে কাউন্সিলারের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছে পুকুর ভরাট।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এটি একটি বহু পুরনো পুকুর। এলাকায় এটি সূর্যপুকুর নামে পরিচিত। এক সময় বহু মানুষ এখানে স্নান করতে আসতেন। কিন্তু সিপিএমের রাজত্বকালের পরে নতুন সরকার আসার পরেই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্মে পুকুরটি ভরাট হতে থাকে। এখন যদি এই পুকুরটি পুরো ভরাট হয়ে যায় তাহলে এলাকার জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা পুরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। এখন যদি এই পুকুরটি ভরাট হয়ে যায় তাহলে সেই জল কোথায় যাবে? পৌর প্রশাসন কেন এদিকে নজর দিচ্ছে না? কোন স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে কি?

এদিকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানোর পরে পৌরপ্রধান কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রীতিমত তারা অপমানিত বোধ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, এই পুকুরটির ব্যাপারে জানাতে কোথায় না গিয়েছি? থানা, পৌর প্রশাসন, বি এল আরও অফিস কিন্তু কোন সুরাও হচ্ছে না। প্রকাশ্য দিবালোকে কিছু লোক মুখ ঢেকে এসে পুকুর ভরাট করে চলেছে। প্রশাসনের কোন হেল দোল নেই।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলার শর্মিষ্ঠা মজুমদারকে প্রশ্ন করা হল, তিনি বলেন বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। স্থানীয় মানুষ লিখিতভাবে আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। পুরো বিষয়টি আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানিয়েছি।

আইন কি বলছে?

সম্প্রতি, একটি মামলায় বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট রুখতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরেই এবার জলাভূমি ভরাট নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের মৎস্য দফতর।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলাভূমি ভরাটের কোনও অভিযোগ পেলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুধু তাই নয়, এই সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার পরেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকরাও কোনও পদক্ষেপ না করলে তাদেরকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া অন্যায়ভাবে কেউ জমির চরিত্র বদল করলেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি এনিয়ে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলাভূমির চরিত্র কোনভাবেই বদল করা যাবে না, জলাভূমির চরিত্র বদলের কোনও অভিযোগ পেলেই সেই মুহূর্তে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ব্যবস্থা না নিলেই ওই সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার।

কিন্তু, এখন প্রশ্ন হল প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এই পুকুর ভরাটের কাজ চলছে বহাল তবিয়তে ! কীভাবেই বা এত সাহস পাচ্ছেন আইনভঙ্গকারীরা? তাহলে কি পিছনে প্রভাবশালী কারোর মদত রয়েছে? যে কারণে আইনকে তোয়াক্কা না করে পুকুর ভরাট করতেও হাত কাঁপছে না তাঁদের? এমনই সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে । যদিও, পুকুর ভরাটের অভিযোগ সামনে আসতেই চাপে পড়ে শেষ বেআইনি সেই কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ প্রশাসন ।

রাজ্যের মিড ডে মিল নিয়ে ভুয়সী প্রশংসা কেন্দ্রের, বরাদ্দ ৪ হাজার কোটি

রাজ্যের মিড ডে মিল নিয়ে ভুয়সী প্রশংসা কেন্দ্রের, বাংলার মিড-ডে মিল প্রকল্পকে গোটা দেশে মডেল বানানোর ডাক দিল কেন্দ্র। দিল্লিতে কেন্দ্র-রাজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর কেন্দ্রের আধিকারিকদের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ, গোটা দেশে বাংলার মডেলই অনুসরণ করা উচিত। রাজ্যের এই সাফল্যের কথা উল্লেখ করে শুক্রবার এক্স হ‌্যান্ডলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘‘গতকাল দিল্লিতে কেন্দ্র-রাজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মিড ডে মিল প্রোগ্রাম এবং তা চালানোর মডেলকে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে! মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সরকারের উন্নয়নের মডেল আরও একবার প্রমাণিত হল।’’

প্রসঙ্গত, মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বারবার সরব হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় মিড-ডে মিল নিয়ে তদন্ত করতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় দলও। এদিন মন্ত্রী সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন। লেখেন, ‘‘কিছুদিন আগের কেন্দ্রীয় দলের অপপ্রচার এবং বিরোধী কুৎসা আবার একবার ভুল প্রমাণিত হল! অশোকস্তম্ভের তলার লেখাটাই আবার প্রতিষ্ঠিত হল।’’

এখানেই শেষ নয়, বাংলার মিড-ডে মিলের মডেল বিরোধীদের কুৎসা উড়িয়ে যেভাবে প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে তাকে ‘সত্যের জয়’ বলেই অভিহিত করেছেন ব্রাত্য। হ্যাশটাগ দিয়েছেন ‘সত্যমেব জয়তে’।

আরো পড়ুন- লোকসভা ভোটের আগে উত্তপ্ত সন্দেশখালি, তড়িঘড়ি বিশেষ বৈঠক কমিশনের

প্রশংসার পাশাপাশি রাজ্যকে নতুন করে এই খাতে টাকাও বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। মোট চার হাজার কোটি টাকা রাজ্যকে বরাদ্দ করল কেন্দ্র। স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও মিড ডে মিলের ব্যয় নির্মাণে ব্যবহার হবে এই টাকা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিজেপির রাজ্য নেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যকে টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্র। লোকসভা ভোটের আগে এটাই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়!

আসলে সমগ্র শিক্ষা মিশনের মিড-ডে মিল প্রকল্পকে এমন কায়দায় বাস্তবায়িত করেছে রাজ‌্য যে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন দিক খুলে গিয়েছে।

যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের কথাই ধরা যাক। কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে প্রায় তিন হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মহিলা যুক্ত। মহিলারা এতদিন নিজেদের উদ্যোগে হাঁস, মুরগি পালন করতেন। কেউ সবজি ও মাশরুম চাষ‌ করেন। কিন্তু তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করতে সমস‌্যা হচ্ছিল। পঞ্চায়েত সমিতি মারফৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সেই সব উৎপাদিত পণ্য সরাসরি কিনে নিচ্ছে ৪০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ১৫২টি প্রাথমিক ও ৪৫টি জুনিয়র ও উচ্চ বিদ্যালয়।

মিড ডে মিলের সূত্র ধরে অনেক স্কুল সবজি চাষও শুরু করেছে। যেমন হুগলির গোঘাট হাইস্কুলের কথাই ধরা যাক। এখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলেই কিচেন গার্ডেন করে মরশুমি সবজি ফলাচ্ছেন। সম্পূর্ণ জৈব উপায়ে ফলানো সেই সবজি দিয়ে তৈরি মিড-ডে মিল ছাত্র-ছাত্রীদের খাওয়ানো হচ্ছে। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। রাজ্যের এমন উদ্ভাবনী মনোভাবই প্রশংসিত হয়েছে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। যা নিয়ে তৃণমূলের কটাক্ষ, বাংলার টাকা আটকে রাখা যে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিষয় তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।