Basanti Puja: বাঙালির আদি দুর্গাপুজো আসলে বাসন্তী পূজো! জেনে নিন এই পূজো কি কেন? এর ইতিহাস

এখন যতই আমরা আশ্বিন মাসে দুর্গাপুজো করি না কেন, বাঙালির আদি দুর্গাপুজো বাসন্তী পূজো ( Basanti Puja) হত এই চৈত্র মাসেই।

অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য সব কালেই মানুষ আদ্যাশক্তির আরাধনা করে। রামায়ণ অনুযায়ী, অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন, যা অকাল বোধন হিসেবে খ্যাত। আর পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো (Basanti Puja) নামে প্রসিদ্ধ হয়। দেবী দুর্গার প্রথম পুজোরী হিসাবে চণ্ডীতে রাজা সুরথের উল্লেখ রয়েছে।

সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ খ্যাত ছিলেন। কোনও যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হারেননি। কিন্তু প্রতিবেশী রাজ্য একদিন তাঁকে আক্রমণ করে এবং সুরথ পরাজিত হন। এই সুযোগে তাঁর সভাসদরাও লুটপাট চালায়। কাছের মানুষের এমন আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যান সুরথ। বনে ঘুরতে ঘুরতে তিনি মেধাসাশ্রমে পৌঁছোন। ঋষি তাঁকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তাঁর সমাধির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন, সমাধিকেও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবুও তিনি বৌ-ছেলের ভালোমন্দ এখনও ভেবে চলেছেন।

তাঁরা দুজনেই তখন ভাবলেন, যাদের কারণে তাদের সব কিছু হারিয়েছে, তাদের ভালো আজও তারা চেয়ে যাচ্ছেন। ঋষিকে একথা বলায়, তিনি বলেন সবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনি বর্ণনা করেন। ঋষির উপদেশেই রাজা কঠিন তপস্যা শুরু করেন। পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই বসন্ত কালের শুক্ল পক্ষে রাজা পুজো শুরু করেন। শুরু হয় বাসন্তী পুজো।

বাঙালি কিন্তু তার আদি দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। সে এখনও দুর্গাপুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করে। যদিও এই পুজো কোনও দিনই বারোয়ারির আকার নেয়নি। যে সময়ে রমরম করে বাসন্তী পুজো হত তখনও তা আয়োজিত হত মূলত জমিদার নায়েব গোমস্তা গোষ্ঠীর লোকজনদের দ্বারাই। এই পুজো কোনও দিনই সাধারণের পুজো হয়ে ওঠেনি।

এখনও এই পুজো পরিবার-তন্ত্রেই আটকে, বারোয়ারি হয়নি। এবং খোঁজ করলে দেখা যাবে, আজও এ শহরের (kolkata) কিছু ভুঁইফোঁড় উঠতি বড়লোকের বাড়ির হঠাৎ-শুরু-হওয়া বাসন্তী পুজো ছাড়া তা মূলত হয় বনেদি বড়লোকদের বাড়িতেই। পড়তি বড়লোকের বাড়িতে হলেও এই পুজোর সঙ্গে ধন-তন্ত্রের যোগ প্রবলই।

কেন এক সময় রমরম করে বাসন্তী পুজো হত, তার একটা অন্য কারণও কেউ কেউ বলে থাকে। বসন্ত ঋতুর শেষে গ্রীষ্মের শুরুর এই সময়টায় সেকালে বসন্ত রোগের (pox) খুব প্রকোপ ছিল। টিকাহীন চিকিৎসাহীন সেই অতীতে দুর্বার বসন্তের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য মায়ের আরাধনা করে মায়ের কৃপা প্রার্থনা করা হত হত। রোগকে প্রশমিত করার জন্য়ও তাই বাসন্তীদেবীর পুজোর চল হয়েছিল বলে ধরে নেওয়া যেতেই পারে।

Sovan-Baisakhi in Kashmir: চোখে চোখ, কাশ্মীরে বরফের মাঝে শোভনকে জাপটে বৈশাখী! দেখুন যুগলের ভাইরাল সব ছবি

শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Baisakhi Banerjee) প্রেম কাহিনি হার মানাবে যে কোনও ফিল্মের চিত্রনাট্যকে। সমাজ, বয়স কোনও কিছুর পরোয়া করেননি তাঁরা। আপতত বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুকের দেওয়াল বলছে ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরে কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছেন এই প্রেমিক যুগল। (ছবি-ফেসবুক)।

আরো পড়ুন- Aliya University: হেনস্থার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পরলেন উপাচার্য! অপমানে আলিয়া ছাড়তে চান তিনি

সোশ্যাল মিডিয়ায় রোজই ঘোরার নানান ছবি পোস্ট করছেন তাঁরা। একটি ছবিতে মেয়ে মেহুলের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee) দেখা গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায় (Sovan Chatterjee)।

ছবিতে ‘বিশেষ বন্ধু’ বৈশাখীর সঙ্গে বিভিন্ন মধুর মুহূর্ত কাটাতে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন মেয়রকে।

কখনও সাদা বরফে মাখামাখি করছেন দুজনে, আবার কখনও টিউলিপ গার্ডেনে বসে হাসি মুখে পোজ দিচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝড়ের গতিতে ভাইরাল কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও তাঁর প্রেমিকার এই ছবি।

একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রাক্তন মেয়রকে পিছন থেকে জাপটে ধরে রয়েছেন বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee)। চোখে রোদ চশমা, হাসি হাসি মুখে ‘বিশেষ বন্ধু’র দিকে তাকিয়ে শোভন চট্টোপাধ্য়ায় (Sovan Chatterjee)।

চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো

রাহুল চক্রবর্তীঃ আমি জীবনে প্রথমবারের জন্য আজ চন্দননগরের ঠাকুর দেখতে গেছিলাম। কল্যাণী তে থাকি, এত কাছেই এত বড় উৎসব তাও কোনবার‌ই যাওয়া হয়ে ওঠেনা। স্কুটি নিয়ে ঘুরেছি গোটা শহরটা। চোখধাঁধানো মায়ের মূর্তি, ডাকের সাজের নিপুণ কারুকার্য আর চমকৎকার সব প্যান্ডেল এক কথায় অভূতপূর্ব। দিনের বেলায় যাওয়ায় আলোর শহরের আলোর খেলা যদিও দেখতে পাইনি। সত্যি বলতে প্রথমবার এই উৎসবের স্বাদ পেয়ে এখন‌ও একটা ঘোরের মধ্যে আছি এবং বলাই বাহুল্য যে আগামী দিনে কোনবছর‌ই যে আর মিস করতে চাইবো না, সেটাও সত্যি।

এবার কয়েকটা বিষয় নিয়ে না বললেই নয় তাই বলতেই হচ্ছে। আমার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা এই সুন্দর ঐতিহ্যশালী শহরের সকলকে। এই উৎসব আর শহরের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেল এক ঝটকায়।

১. এত বড় বড় পুজো এত মানুষ সারা বাংলা থেকে আসছেন, অথচ কোন রাস্তা ব্লক নেই, ঘুরিয়ে দেওয়া নেই। পুলিশ অসম্ভব সক্রিয়।

২. কোন পুজোর কৃত্রিম ভীড় তৈরীর প্রক্রিয়া নেই। আমাদের এখানকার মত দরজায় তিনটি পর্দা লাগিয়ে, রাস্তায় বাঁশ আটকে মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে বিভ্রান্ত করবার প্রচেষ্টা নেই। সবাই ঠাকুর দেখছে, ছবি তুলছে কেউ বলেও না, ‘তাড়াতাড়ি করুন’, এগিয়ে চলুন ইত্যাদি।

৩. এত কাছাকাছি এত বড়-বড় পুজো কিন্তু মাইকের চোটে কান ঝালাপালা অবস্থা নয়। ট্রাফিক স্লো কিন্তু জানজট নেই। এবং প্রাচীন শহর হ‌ওয়ায় রাস্তা তেমন চ‌ওড়া নয়। যথেষ্ট মানুষের সমাগম তাও রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া, ঘুরিয়ে দেওয়া এসব করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার কোনরকম প্রয়াস নেই।

৪. চ্যাংড়া ছেলের দলের মাতব্বরী, চ্যাংড়ামি, অসভ্যের মতো বাইক চালানো নেই। গোটা পঞ্চাশেক পুজো ঘুরলাম কোথাও কর্মকর্তাদের হেকুপণা, স্বেচ্ছাসেবকদের মাতব্বরী চোখে পড়েনি। সর্বোপরি কোন পুজোর রাজনীতিকরণ নেই।

৫. গোটা শহরের সব ধরণের মানুষের কাছ থেকে অমায়িক ব্যাবহার পেয়েছি। টোটো দাদা থেকে পাড়ার মোড়ের বয়স্ক কাকু যার কাছে যতবার ঠিকানা বা বড় পুজোর খোঁজ চেয়েছি হাসি মুখে সময় নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এমন ভাবে কথা বলেছেন যেন বাড়ীতে কুটুম এসেছে পুজো দেখতে। সত্যিই আপ্লুত।

৬. আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় তা হলো, যত বড় পুজোই হোক বা ছোট। থিম হোক কি সাবেকি প্যান্ডেল, প্রতিমা বা পুজোর আচারের মধ্যে কোন থিমের প্রবেশ নেই। ঐতিহ্যশালী মায়ের রূপ, দূরন্ত কারুকার্য করা ডাকের সাজে মায়ের মূর্তিগুলি সাবেকি সনাতনী ঐতিহ্য রক্ষা করছে।

সব মিলিয়ে আমি এমন উৎসবে শামিল হতে পেরে আপ্লুত, আনন্দিত। এ যেন এক প্রাণের উৎসব। আগামী বছরের অপেক্ষায় র‌ইলাম।

কে ছিলেন এই বুড়িমা! বুড়িমা চকলেট বোম এর অজানা গল্প জানুন

ধার করা দশটা একশো টাকার নোট। তাই দিয়ে নানা রকম বাজি কিনে দোকান সাজিয়ে বসলেন। জমল বিক্রিবাটা। তিন দিনের মাথায় পুলিশ এসে হাজির। বাজি বিক্রির লাইসেন্স আছে? বাজি বিক্রি করতে লাইসেন্স লাগে, জানা ছিল না। বললেন, “এ বারের মতো ছেড়ে দিন।” কাজ হল না। বাজি বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ, গুঁড়িয়ে দিল দোকান। জেদ চেপে গেল। বাজির ব্যবসাই করবেন তিনি। করলেনও। ধীরে ধীরে বাংলার বাজি ব্যবসায় এক নম্বর জায়গাটি পাকা করে ফেললেন অন্নপূর্ণা দেবী। সবার ‘বুড়িমা’।

আরো পড়ুন- রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের লিঙ্ক

সাল ১৯৪৮। সদ্য স্বাধীন হয়েছে ভারত। দেশভাগের যন্ত্রণা কাঁটার মত বিঁধে আছে বহু মানুষের মনে। সেই যন্ত্রণা নিয়েই অন্নপূর্ণা পাড়ি দিলেন গঙ্গারামপুর। স্বামী হারা অন্নপূর্ণার চোখে তখন দুই ছেলে মেয়েকে বড় করে তোলার স্বপ্ন। বিড়ি বাঁধা দিয়ে শুরু হল তাঁর জীবনের নতুন লড়াই। ইতিমধ্যে বেশ কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে বরানগরে চলে এলেন তিনি। বেলুড়ে নশো টাকায় কিনলেন একটি ছোট্ট দোকান।

গল্পের শুরু এখান থেকেই। ছেলেকে দোকানে বসিয়ে চষে ফেলেন উত্তরপাড়া, সালকিয়া, বড়বাজার। কী ব্যবসা করবেন? কিসে লাভ? সরস্বতীপুজোর আগে পিলখানার যোগেন্দ্র পালের কারখানা থেকে ঠেলাভর্তি করে প্রতিমা নিয়ে এলেন। বেলুড়ে কোথাও ঠাকুর তৈরি হত না, ছুটতে হত দূরে। হাতের কাছে প্রতিমা পেয়ে সবাই হামলে পড়ল। দোলের আগে রঙের পসরা নিয়ে বসলেন। সেটাও জমল।

এক দিন দোকানে এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে হাজির। “বুড়িমা, লজেন্স দাও!” কী বলল ওরা? দোকানে রাখা আয়নাটা সামনে ধরলেন। চুলে পাক, শরীরে বয়সের ছাপ। আশ্চর্য, বুড়িমা নামটাও কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ল। অন্নপূর্ণা দেবী হয়ে গেলেন ‘বুড়িমা’।

কালীপুজো। বুড়িমার ইচ্ছে দোকানে বাজি তুলবেন। হাতে পয়সা নেই। ধারের টাকায় বাজি কিনলেন, তার পরই সেই ঘটনা। দোকান ভাঙল পুলিশ। এর ক’দিন পরেই এক দুপুরে ছেলেকে চমকে দিলেন, “এই দেখ বাজি বিক্রির লাইসেন্স। আর বাজি তৈরির অনুমতিপত্রও!”

লাইসেন্স তো হল। কিন্তু কে শেখাবে বাজি বানানো? বাঁকড়ায় দেখা আকবর আলির সঙ্গে। হাতে ধরে শেখালেন— কাকে বলে সোরা, ব্যাটরা, গন্ধক কী রকম দেখতে। প্রথম মরশুমেই বাজিমাত। সব বিক্রি হয়ে গেল। আকবরের ফর্মুলাতেই তৈরি হল ‘বুড়ীমার চকলেট বোম’।

বাজি-কারখানার জন্য তালবান্দা, ডানকুনি, শিবকালীতে জায়গা কিনলেন। ডানকুনিতে মাটি খুঁড়তে বেরল বিশাল শিবলিঙ্গ। চকলেট বোমের লোগো হল তা। কারখানার জন্য কিনলেও তালবান্দার জমি বিলিয়ে দিলেন গরিবদের। এক সময় যাঁর মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, তিনিই পঞ্চাশটি পরিবারকে বাড়ি বানিয়ে দিলেন। বলতেন, “ব্যবসাটা তুচ্ছ! এসেছি মানুষকে ভালবাসতে।”

১৬/১ পিয়ারীমোহন মুখার্জি স্ট্রিটের বিরাট বাড়ির সর্বত্র বুড়িমা। তাঁর শেষ দিনটা আজও চোখে ভাসে নাতি সুমন দাসের। লোকে ভর্তি বাড়ি, থমথমে। এরই মধ্যে বাইরে কারা ‘বুড়ীমার চকলেট বোম’ ফাটাচ্ছে। শোকের সময় চ্যাংড়ামো! উত্তর এল, ‘‘চ্যাংড়ামো নয়, জয়ধ্বনি। যে চকলেট বোম বানিয়ে গোটা বাজির বাজার জিতে নিয়েছেন, সেটা ফাটিয়েই বুড়িমাকে শ্রদ্ধা জানালাম!”

বসন্ত পঞ্চমী মানেই বাঙালির ভালবাসার দিন, এককথায় বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে

বালুরঘাট; বসন্ত পঞ্চমী মানেই বাঙালির ভালবাসার দিন। এককথায় বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে। এই দিনের জন্য বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হয় অপেক্ষা। অন্যদিকে সরস্বতী পুজো এবং হাতে খড়ির সম্পর্ক! আজও চলে আসছে সেই সাবেকি প্রথা। বাঙালির ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’-এর অন্যতম, সরস্বতী পুজো। আর সরস্বতী পুজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িয়ে রয়েছে সাবেকি এক প্রথা এই হাতে খড়ি।যেটি না হলে শিক্ষার শুরুই যে হয় না!শিশুদের বিদ্যার সূচনা হওয়ার আগেই দেবী সরস্বতীর কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে হাতেখড়ি দেওয়ানো হয়। চক খড়ি এবং স্লেটের সাহায্যে লেখার শুভারম্ভ হয় শিক্ষার্থীদের। স্নান সেরে পরিষ্কার বসন পরে স্লেট এবং খড়ি হাতে দেবী সরস্বতীর সামনে বসে প্রথম লেখা শেখানো হয় তাকে।

যতই ডিজিটাল যুগহোক, এটাই পুরোনো রেওয়াজ হাতেখড়ি আজও সেই সাবেকি স্লেটে।বর্তমানের ‘হাইটেক’ যুগে ছোটদের পড়াশোনা শেখানোর হাজার উপকরণ সহজলভ্য। যে কোনও শপিং মল বা অনলাইনে হাতের লেখা শেখানোর উপকরণের বাহুল্য। তবু, পুরোনো এই বিধি এখনও ঐতিহ্য হিসেবে সগর্বে বহন করছেন বাঙালিদের একটা বড় অংশ। এখনও সরস্বতী পুজোয় ছোটদের হাতেখড়ি হয়।

সরস্বতী হলেন বিদ্যার দেবী। তিনি আমাদের বিদ্যা দান করেন। আমরা বড়, ছোট সকলেই সরস্বতী পুজো করি ও নিজের নিজের প্রার্থনা জানাই। প্রায় প্রত্যেক বিদ্যা প্রতিষ্ঠানেই সরস্বতী পুজো হয়ে থাকে। তবে এবার কোভীড পরিস্থিতিতে চিত্রটা একটু ভিন্ন।শুক্লা পঞ্চমী খুব শুভ দিন, শুভ দিনের একটা গুরুত্ব আছে সাফল্যের জন্য। সেদিকে লক্ষ রেখেই সন্তানদের বিদ্যার সুচনা হওয়ার আগেই সরস্বতী ঠাকুরের কাছে শুভ কামনা হেতু হাতেখড়ি দেওয়া হয়। পুরোহিত মহাশয় স্লেট ও খড়িকে পবিত্র করেন, এরপর নতুন জামা কাপড় পরিহিত জাতক বা জাতিকাকে মায়ের সামনে বসিয়ে প্রথম লেখা শেখানো হয়।কালো স্লেটের মাঝে ‘অ’-এর উপরে ঘুরপাক খাচ্ছে ছোট্ট হাতে ধরা চকখড়ি। সে ছোট্ট চঞ্চল হাত ধরে রয়েছেন পুরোহিতমশাই। সরস্বতী পুজোর দিন এ ছবি যুগ যুগ ধরে দেখে আসছে বঙ্গসমাজ।
পাশাপাশি আমাদের বাঙালিদের বারো মাসে তেরো পার্বন। বৈশাখ থেকে চৈত্র পর্যন্ত প্রতি মাসে কোনও না কোনও উৎসব আছেই। প্রত্যেক পুজোর আলাদা আলাদা গুরুত্ব এবং উপকারিতা আছে। এই সরস্বতী পুজোকে ঘিরে শৈশব কৈশোর বা সদ্য যৌবনের অনাবিল আনন্দের উপকরনটা থাকনা ওদের কাছে ওদের মতো করে।

পুরানো সংবাদপত্র দিয়ে খেজুরির যুবক তৈরি করলেন এক অভিনব সংগ্রহশালা

বাংলা হান্ট ডেস্ক;  সংবাদপত্র সমাজ জীবনের দলিল। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে সংবাদপত্র পড়ার রেয়াজ ক্রমশ কমছে। অথচ সংবাদপত্র পড়ার রেওয়াজ একসময় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল। আজ ইন্টারনেটের যুগে আমরা মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মাধ্যমে সংবাদ যতটা সহজে পড়তে পারি, আগে কিন্তু ততটা সহজ ছিল না। দেশ ও বিদেশের সংবাদ পাওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে বসে থাকতে হত। সাতসকালে সংবাদপত্র পাঠকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংবাদ কর্মীকে করতে কঠোর পরিশ্রম। আর সেই সংবাদ পড়া হয়ে গেলে সেই সংবাদপত্রের ঠিকানা হত বাড়ির কোন গুরুত্বহীন স্থানে। কিন্তু ফেলে দেওয়ার সংবাদ পত্রের রাশি রাশি তথ্যই ইতিহাস বদলে দেয়। সেই কারণেই পূর্ব মেদিনীপুরে খেজুরির বাসিন্দা ‘মধুসূদন জানা’ পুরোনো খবরের কাগজের নানা কাটিং সংগ্রহ করে তৈরি করেছেন এক সংগ্রহশালা। যার পোশাকি নাম “অমূল্য সম্পদে ভরা খবরের কাগজ”।

এ বিষয়ে যুবকটি বলেন, একজন সাংবাদিক বহু পরিশ্রম করে খবরের সত‍্যতা যাচাই করে খবর সংগ্রহ করে। সেটি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে প্রিন্ট করে পৌঁছে যায় পাঠক পাঠিকাদের হাতে। সকালে সযত্নে গ্রহন করার পর পরেরদিন সকালে পৌঁছে যায় ডাস্টবিনে। এমন কি খবর কাগজ বিছিয়ে বসা,কাঁচ পরিষ্কার,বোতল পরিষ্কার,ঢোঙা,খাওয়ার টেবিলে বিছানো,দেওয়ালে মাড়ানো। বিভিন্ন কাজে ব‍্যবহার করা হয়। বলা যায়, শিক্ষা সংস্কৃতির মেরুদন্ড হল এই খবরের কাগজ। সেই মূল‍্যহীন কাগজের মধ্যে যে অমূল্য সম্পদ ভরা রয়েছে সেই তথ‍্য গুলি তুলে ধরতে চেয়েছি জনসমক্ষে। খবর কাগজের মধ্যে যে সব তথ‍্য থাকে তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা যায় সংরক্ষণের মাধ্যমে। এই সংরক্ষণ নিয়ে একটি প্রোজেক্ট তৈরি করেছি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে। প্রোজেক্টির নাম “অমূল‍্য সম্পদে ভরা খবরের কাগজ”।

তিনি আরো জানান, “আমার প্রোজেক্টির মূল উদ্দেশ্য, সংবাদের মূল‍্য, সাংবাদিকের মূল‍্য এবং সর্বোপরি খবর কাগজের মূল‍্য সমাজের কাছে বোঝানোর করেছি, যে পত্র পত্রিকার ভিতরে কী অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন তথ‍্যচিএ লুকানো থাকে। আমার প্রোজেক্টে বহু পুরোনো প্রায় ৭০_৮০ বছরের খবর কাগজের তথ‍্যচিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। ৫২ রকমের পত্র পত্রিকার সংবাদ সংগ্রহ করেছি। শুধু তাই নয় ১০ টি ভাষায় পত্র পত্রিকার উপর কাজ করেছি। যে সমস্ত তথ‍্যচিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে তার মধ‍্যে কয়েকটি হল
১. জওহরলাল নেহেরুর প্রথম পতকা উত্তলোনের তথ‍্যচিত্র।
২. মহাত্মা গান্ধীর শেষ অনশন ও অসহযোগ আন্দোলনের বৈঠকের তথ‍্যচিত্র ।
৩. ১৮৭৪ সালে কলকাতা দৃশ‍্যের তথ‍্যচিত্র।
৪. কলকাতাতে যেদিন প্রথম ট্রাম চলে তার তথ‍্যচিত্র।
৫. ১৯৫০ সালে প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবেসর তথ‍্যচিত্র।
৬. ক্ষুদিরামের ফাঁসির স্থলের তথ‍্যচিত্র।
৭. ১৯১২ সালে টাইটানিক দৃশ‍্যের তথ‍্যচিত্র।
৮. মাদার টেরিজা যেদিন মারা যায় তার তথ‍্যচিত্র।
৯. প্রথম কার্গিল যুদ্ধ ও প্রথম বিধবা বিবাহের তথ‍্যচিএ।
১০. ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ,পুলওয়ামা অ‍্যাটাক,নোট বাতিল,ভুজের ভূমিকম্প,বুলবুল, আমফান ইত‍্যাদি।এই রকমের ৯০০টি প্রমাণ পত্র সংরক্ষণ করছি। B4 সাইজের কাগজের উপর খবর কাগজ মাড়িয়ে ল‍্যামিনেশান করেছি।”

সরস্বতী পুজোর আগে আমরা কুল খাই না কেন? জেনে নিন

মঙ্গলবার সরস্বতী পুজো ৷ ঘরে ঘরে চলবে দেবীর আরাধনা ৷ উপোস করে অঞ্জলিতে ব্যস্ত থাকবে পড়ুয়ারা ৷ আর তারপরী কুল খাওয়া?

ছোটবেলা থেকে আমরা সবাই শুনে আসছি যে সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই। বাড়ির বড়রা ছোটদের প্রায়ই বলে থাকেন সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে পরীক্ষায় নাকি ফেল করবে। বলা হয় কুল খেলে নাকি দেবী সরস্বতী ঠাকুর রাগ করবেন! কিন্তু কেন এই নিয়ম? কুলের সঙ্গে পরীক্ষায় পাশেরই বা কী সম্পর্ক? অথচ ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্বাস করে, সত্যিই কুল খেলে মা সরস্বতী কুপিতা হবেন। এবং সে কারণে পরীক্ষায় ভাল ফল হবে না। সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন রাজ্যে নানারকম লোকাচার চালু আছে। পাঞ্জাবে এই উপলক্ষে আকাশে দেদার ঘুড়ি ওড়ে। আবার মধ্যপ্রদেশ, মাহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে সরস্বতীর পাশাপাশি শিব ও পার্বতীরও পুজো করা হয়। তবে বাংলায় যে নিয়ম চালু আছে, তা আর কোথাও নেই। পুজোর পাশাপাশি এই যে কুল দাঁতে না কাটার রীতি, তা বাংলার একান্ত নিজস্বই বলতে হয়।

কৃষিপ্রধান রাজ্য বাংলা। তাই যে কোনও ফসলই প্রথমে দেবতাকে উৎসর্গ করার রীতি রয়েছে। এমনকী নতুন ধান উঠলেও তা নিয়ে উৎসব পালিত হয়। শীতেরই ফল কুল। আর সরস্বতী পুজো বা বসন্তপঞ্চমীর সময়েই কুল হয়। তাই প্রথা মেনে এই ফলটিও প্রথমে দেবতাকে উৎসর্গ করা হয়। আর এটাই প্রসাদ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়।

আরও একটি কারনও রয়েছে এই লোকাচারের পিছনে। বসন্ত শুরু হওয়ার সময় থেকে পেটের রোগ, জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে। আর এই সময়েই কুলে পাক ধরে। তার আগে কাঁচা কুল খেলে পেট খারাপের সম্ভাবনা থাকে।
এ ছাড়া কাঁচা কুলের মারাত্মক টক স্বাদ দাঁতকে একপ্রকার কষ্ট দেওয়া।

আরো পড়ুন- ২০২১ সরস্বতী পুজোর দিন ক্ষণ, তিথি ও মন্ত্র জেনে নিন

শাস্ত্রে বলা আছে যে, সরস্বতী দেবীকে তুষ্ট করতে মহামুনি ব্যাসদেব বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা করেছিলেন। আর এই তপস্যা শুরুর আগে তাঁর তপস্যাস্থলের কাছে একটি কুল বীজ রেখে দিয়ে দেবী একটি শর্ত দেন। যতদিন না এই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে বড় গাছে নতুন কুল হবে, সেই কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পরবে ততদিন দেবীর তপস্যা করতে হবে। তবেই সরস্বতী দেবী তুষ্ট হবেন।

ব্যাসদেবও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করলেন, আর যেদিন নতুন কুল তাঁর মাথায় পরে, তিনি বুঝতে পারেন যে, সরস্বতী দেবী তাঁর প্রতি তুষ্ট হয়েছেন। সেই দিনটি ছিল পঞ্চমী।

২০২১ সরস্বতী পুজোর দিন ক্ষণ, তিথি ও মন্ত্র জেনে নিন

বসন্ত পঞ্চমী মানেই বাঙালির ভালবাসার দিন। এককথায় বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে। সেই দিনে দেবী সরস্বতীর আরাধনা ঘিরেও মিশে থাকে পবিত্রতার এক স্নিগ্ধতা, থাকে বাঙালিয়ানার পরশ। সবমিলিয়ে এই দিনের জন্য বছরের প্রথমের দিকে অপেক্ষা শুরু হয় বাঙালির। দেখে নেওয়া যাক ২০২১ সালে সরস্বতী পুজো কবে, জেনে নেওয়া যাক কিছু খুঁটিনাটি।

২০২১ বসন্ত পঞ্চমী তিথি কখন থেকে পড়ছে?

পঞ্জিকা অনুসারে বসন্ত পঞ্চমীর উৎসব ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত ৩:৩৬ মিনিট থেতে তা চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫:৪৬ মিনিট পর্যন্ত। পণ্ডিতরা বলছেন, যে দিনে চতুর্থী এবং পঞ্চমী দু’টোই পড়ছে, সেই দিনেই পুজো করা ভাল। সেই হিসেবে পুজো করুন মঙ্গলবার।

এই দিন রেবতী নক্ষত্র এবং চন্দ্র মীন রাশিতে উপস্থিত থাকবে। বসন্ত পঞ্চমীর দিন শুভ যোগ হবে। এই দিনে সরস্বতীর উপাসনা করার বিশেষ উপকার মেলে।

আরো পড়ুন- সরস্বতী পূজার আগে আমরা কুল খাই না কেন? জেনে নিন

শাস্ত্র অনুযায়ী, শ্রী পঞ্চমীর দিন সকালে সরস্বতী পুজো হয়। তবে পুজোয় বেশ কয়েকটি বিশেষ জিনিষ লাগে। সরস্বতীর পুজো সাধারণ পুজোর নিয়মানুসারেই হয়। তবে এই পুজোয় কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যেমন অভ্র-আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শিষ।

সরস্বতী পুজোর প্রণাম মন্ত্র।

সরস্বতী পুজোর প্রণাম মন্ত্র হল ,’সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে। বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।।

জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।’

সরস্বতী পুজোর মন্ত্র।

মূলত, অঞ্চলীর সময় সরস্বতী পুজোতে যে মন্ত্র রয়েছে , তার মধ্যে এই অংশটি তাৎপর্যপূর্ণ, ‘ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।

নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ। বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ।।

এস স-চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বতৈ নমঃ।।’ এরপর রয়েছে সরস্বতি স্তব মন্ত্র। সেটি হল –

‘শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা। শ্বেতাম্ভরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলেপনা।। শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা। শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারব‌ভূষিতা। বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বৈর্চ্চিতা দেবদানবৈঃ। পূঝিতা মুনিভি: সর্ব্বৈঋষিভিঃ স্তূয়তে সদা।। স্তোত্রেণানেন তাং দেবীং জগদ্ধাত্রীং সরস্বতীম্।
যে স্মরতি ত্রিসন্ধ্যায়ং সর্ব্বাং বিদ্যাং লভন্তি তে।।’

অক্ষয় তৃতীয়া কি এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ! আসুন জেনে নিই

অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়া তিথি। অক্ষয় তৃতীয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি।
অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। যদি ভালো কাজ করা হয় তার জন্যে আমাদের লাভ হয় অক্ষয় পূণ্য আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ।
আর এদিন পূজা, জপ, ধ্যান, দান, অপরের মনে আনন্দ দেওয়ার মত কাজ করা উচিত। যেহেতু এই তৃতীয়ার সব কাজ অক্ষয় থাকে তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় সতর্কভাবে। এদিনটা ভালোভাবে কাটানোর অর্থ সাধনজগতের অনেকটা পথ একদিনে চলে ফেলা। এবারের অক্ষয়তৃতীয়া সবার ভালো কাটুক-এই কামনা রইলো।এদিন যেসকল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।

১) এদিনই বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নেন পৃথিবীতে।

২) এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন।

৩) এদিনই গণপতি গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত রচনা শুরু করেন।

৪) এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে।

৫) এদিনই সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়।

৬) এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন।
এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।

৭) এদিনই ভক্তরাজ সুদামা শ্রী কৃষ্ণের সাথে দ্বারকায় গিয়ে দেখা করেন এবং তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সকল দুঃখ মোচন করেন।

৮) এদিনই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং সখী কৃষ্ণাকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ। শরনাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন শ্রী কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।

৯) এদিন থেকেই পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রথ নির্মাণ শুরু হয়।

১০) কেদার-বদরী গঙ্গোত্রী যমুনত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এইদিনেই তার দ্বার উদঘাটন হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল।

১১) এদিনই সত্যযুগের শেষ হয়ে প্রতি কল্পে ত্রেতা যুগ শুরু হয়।

পরিশেষে এই শুভ অক্ষয় তৃতীয়াতে ঈশ্বরের কাছে এই প্রাথনা,যেন এই করোনা নামক মৃত্যুর মিছিল যাতে থেমে যায় এবং স্বয়ং ঈশ্বর সৃষ্টিকে যেন রক্ষা করেন।

আপনার কাছে যদি পুরনো ১টাকার নোট থাকে তাহলে আপনিও হতে পারেন লাখপতি।

আমরা জানি পুরনো জিনিসের দাম অনেকটাই বেশি হয়। সেইজন্যই প্রাচীনকালের সব জিনিসপত্র বহু মূল্যবান হয়। এগুলির দাম অনেক বেশি হয়, এবং সে গুলোকে কড়া নিরাপত্তায় সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
অনেক মানুষেরই শখ আছে কিছু পুরনো জিনিস যত্ন করে রেখে দেওয়া,আবার কারো শখ পুরনো জিনিস কিনে এনে নিজের বাড়িকে সাজিয়ে তোলা। সেজন্যই তো সব পুরনো জিনিসপত্রের দাম এত বেশি হয়।
এখন যেমন সেই এক টাকা, দুই টাকার নোটের কথাই ধরা যাক। এখন সেই এক টাকার নোট আর তেমন দেখাই যায় না। শুধু এই এক টাকা নয়, অন্যান্য আরও নোটও এখন বাজারে তেমন দেখা যায় না। এখন এই এক টাকার নোটের পরিবর্তে চলে এসেছে এক টাকার কয়েন। ঠিক তেমনই দুই টাকার নোটের পরিবর্তে চলে এসেছে দুই টাকার কয়েন। এখন প্রায় দেখাই যায় না এসব নোট।
জয়পুরের এমনই এক ব্যক্তি সংরক্ষণ করতো এক টাকার নোট। তিনি একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে বলছেন আমার কাছে একটি ১টাকার নোটের দাম ১লক্ষ টাকা ।
তিনি একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানিয়েছেন তার কাছে ১৯৭১সালের একটি ১ টাকা নোটের মূল্য ১ লাখ টাকা।এখনো পর্যন্ত কেউ তার এই ১ টাকার নোটটি কিনবেন কিনা সেটা তারা অজানা। তবে যার পুরনো নোট সংরক্ষণ করে বা যাদের কাছে এটি একটি নেশা তাদের মধ্যেই কেউ এই এক টাকার নোট ১ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনবেন বলে তিনি আশাবাদী।