জার্মান লেখক পিটার উললেবেনের বক্তব্য সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে। উনি বলছেন যে নিজেদের মধ্যে কথোপকথন করে থাকে গাছেরাও অনেকটা আড়ালে আড়ালেই ভূগর্ভস্থ মাইসেলিয়াল তন্তুর মধ্যে দিয়েই,
অর্থাৎ মাটির নীচে ইন্টারনেট’-এর মতো!
অরণ্যের মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে সরু পথ। এই পথ ধরেই প্রতিদিন হেঁটে বাড়ি ফিরতেন তিনি। সে-সময় প্রায়শই তাঁর মনে হত, নিঃশব্দে কারা যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলে চলেছে এই জনহীন অরণ্যে। কিন্তু কোথাও যে কোনো মানুষের চিহ্ন মাত্র নেই। তবে কাদের এই ফিসফিসানি? বড়ো হওয়ার পর তাঁর মনে হয়েছিল, আসলে নিশ্চুপে, সকলের দৃষ্টির আড়ালে কথা বলে গাছেরা। বড়ো গাছ, মহীরুহেরা সযত্নে আগলে রাখার চেষ্টা করে তার সন্তানদের।
পিটার উললেবেন (Peter Wohlleben)। এই জার্মান লেখকের লেখা গ্রন্থ ‘দ্য হিডেন লাইফ অফ ট্রিস’ (The Hidden Life Of Trees) ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। জার্মানি তো বটেই, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য-সহ বর্তমানে ১১টি দেশে বেস্টসেলার তাঁর এই গ্রন্থ। এমনকি এই গ্রন্থের জন্য একাধিক পুরস্কারের স্বাদও পেয়েছেন ৫৩ বছর বয়সি লেখক। এই গ্রন্থের প্রতিটি পাতায় ফুটে উঠেছে কীভাবে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলে গাছেরা, তাদের আদৌ কোনো মন আছে কিনা, যদি মন থেকেই থাকে তবে কী কী অনুভূতি অনুভব করতে পারে গাছেরা— এসব প্রশ্ন নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা করেছেন পিটার।
আরো পড়ুন- পৃথিবীর এমন একটি জায়গা, যেটি ৬ মাস এক দেশে, ৬ মাস অন্য দেশে! বদলে যায় আইনও
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, পিটারের এই দাবি এবং তত্ত্বের সত্যতা ঠিক কতটা? না, এই গ্রন্থের উপস্থাপিত তথ্য একেবারে মনগড়া নয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণাকেন্দ্র এবং প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করেই লেখা হয়েছে এই বই। অর্থাৎ, গাছেদের কথোপকথনের প্রমাণ হিসাবে যে যে বিষয়গুলি তিনি তুলে ধরেছেন, সেগুলি সকলই কোনো না কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ফলাফল।
এই প্রসঙ্গে আবশ্যিকভাবেই উঠে আসে ১৯৯০ দশকের শেষের দিকে অধ্যয়ন করা একটি গবেষণার কথা। মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেসন হোয়েকসেমা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই গবেষণার। ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে তিনিই প্রথম দেখান, একটি গাছ থেকে অন্য গাছের মধ্যে খাদ্য, খনিজ এবং তথ্য সরবরাহিত করে অন্য গাছ। আর এই গোটা প্রক্রিয়াটাই ঘটে মাটির নিচে। অন্যদিকে তথ্য ও খাদ্য আদানপ্রদানের এই নেটওয়ার্কের মধ্যস্থতা করে মাইসেলিয়াম গোত্রের বিভিন্ন ছত্রাক। গাছের থেকে তারা সংগ্রহ করে পুষ্টি, বিনিময়ে শর্করা বহন করে পৌঁছে দেয় অন্য গাছকে। উল্লেখ্য, এই ধরনের ছত্রাকের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায় সর্বত্রই।
এখানেই শেষ নয়, ১৯৯৭ সালে নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ সুজান সিমার্ডের আরও একটি গবেষণাপত্র। সেখানেও একইধরনের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল উপস্থাপন করেন তিনি। ‘উড-ওয়াইড-ওয়েব’ নামের এক আশ্চর্য তত্ত্ব সামনে আনেন তিনি। জানান, আমাদের ‘ইন্টারনেট’-এর মতোই, আন্তর্জাল রয়েছে গাছেদের। ভূগর্ভস্থ মাইসেলিয়াল তন্তুর মধ্যে দিয়েই এক গাছ অন্যগাছের সঙ্গে কথোপকথন করে। কোনো বৃহৎ মহীরুহের পাশে চারা গাছ জন্মালে, সাধারণত সূর্যের আলো পায় না তারা। এক্ষেত্রে মহীরুহরাই গ্লুকোজ জাতীয় শর্করা স্থানান্তরিত করে এই ধরনের চারা গাছের দেহে। এই আদানপ্রদানের সময় ছত্রাকদের ভূমিকাও কম থাকে না।
দু’-একটি নয়, এধরনের একাধিক গবেষণার ফলাফল নিজের গ্রন্থে তুলে ধরেছেন পিটার। বা বলা ভালো, তাঁর গ্রন্থ গাছ সংক্রান্ত একাধিক গবেষণার এক সংকলন। সেইসঙ্গে তাঁর নিজস্ব কল্পনা তো রয়েছেই। আগামীদিনে গাছেদের এই কথোপকথনের পাঠোদ্ধার হবে, সে-ব্যাপারেও সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে পিটারের। তবে বৈজ্ঞানিক গুরুত্বের বাইরে, তাঁর এই গ্রন্থ নতুন করে উদ্ভিদ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলছে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো।
ভাঙন পদ্ম শিবিরে, মালদায় তৃণমূলে যোগদান শতাধিক কর্মী সমর্থকের
গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক নাবালিকার
Dilip Ghosh: আজ বিয়ের পিড়িতে দিলীপ ঘোষ! কিভাবে ফুটল বিয়ের ফুল?
‘Bangladesh Should Be Broken Apart,’ Says Tripura’s ‘King’ in Response to Yunus’ Comments
পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খানের বলিউড প্রত্যাবর্তন ঘিরে উত্তাল মহারাষ্ট্র!
Taslima Nasrin: ‘Islam is not my religion…’—A Definitive Statement on Eid
Heatwave Alert: West Bengal, 16 Other States Brace for Extended Heatwave Days from April to June
Former Pakistani Prime Minister Imran Khan Nominated for the Nobel Peace Prize
কল্যাণীতে দুঃসাহসিক ছিনতাই! কাঁচরাপাড়ার ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা লুঠ
Durga Puja 2024: অভিনব উদ্যোগ! মহালয়ার দিন অঙ্কন প্রতিযোগিতা করল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাব