বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বারানসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Mosque) নীচে বিশাল একটি বড় মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের বেশ কিছু নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ASI)। আদালতের নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা চালায় গবেষকরা। আদালতের নির্দেশে ৮৩৯ পাতার রিপোর্টের কপি পাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন।
হিন্দুদের পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শংকর জৈন জানান, ASI রিপোর্ট বলছে জ্ঞানবাপী মসজিদের নীচে হিন্দু মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের কাঠামোও পাওয়া গিয়েছে বলে সমিক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে এএসআই-এর ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ পদ্ধতি নিয়ে। মুসলিম পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ রিপোর্টটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখে তারা প্রতিক্রিয়া জানাবে।
#WATCH | Varanasi, Uttar Pradesh | Advocate Vishnu Shankar Jain, representing the Hindu side, gives details on the Gyanvapi case.
He says, "The ASI has said that there existed a large Hindu Temple prior to the construction of the existing structure. This is the conclusive… pic.twitter.com/rwAV0Vi4wj
— ANI (@ANI) January 25, 2024
এএসআই রিপোর্ট উদ্ধৃত করে হিন্দু পক্ষের দাবি, মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব ১৬৬৯ সালের ২ নভেম্বর মন্দির ভেঙে জ্ঞানবাপী মসজিদ নির্মাণের ফরমান দিয়েছিলেন। বিষ্ণুশঙ্কর জানিয়েছেন, সেই ফরমান সংক্রান্ত শিলালিপির সন্ধান মিলেছে সমীক্ষায়। রিপোর্টে ‘হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব’ সম্পর্কে এ ধরনের মোট ৩২টি প্রমাণ মিলেছে বলে তাঁর দাবি। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘হিন্দু মন্দির ভাঙার চেষ্টার কথা রয়েছে এএসআই রিপোর্টে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এএসআই-এর রিপোর্ট বলছে, মসজিদ তৈরির সময় কিছু বদল আনা হয়েছিল কাঠামোয়। সামান্য বদল এনে মন্দিরের স্তম্ভ এবং অন্যান্য অংশ ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন কাঠামো তৈরি করতে হিন্দু মন্দিরের পিলারের চরিত্রে সামান্য বদল আনা হয়েছিল।’’
আরো পড়ুন- ভাটপাড়া উৎসবে মর্মান্তিক কান্ড! মঞ্চ থেকে পড়ে মৃত্যু নৃত্যশিল্পীর
সংগৃহীত ভাস্কর্য, মাটির পাত্র, টেরাকোটার নমুনা, মুদ্রা, ধাতু এবং কাচ থেকে হিন্দু মনন্দিরের অস্তিত্বের ‘প্রমাণ’ মিলেছে বলে বিষ্ণুশঙ্করের দাবি। তবে এএসআই রিপোর্টে কোথাও ‘মসজিদ’ শব্দটির উল্লেখ নেই। পরিবর্তে রয়েছে ‘বর্তমান কাঠামো’ শব্দবন্ধটি। বিষ্ণুশঙ্কর দাবি করেছেন মোট ৩৪টি লিপি উদ্ধার হয়েছে জ্ঞানবাপী থেকে। তার অনেকগুলিই প্রাক্-ইসলামি যুগের। দেবনগরী, তেলুগু, কন্নড় ভাষায় লেখা সেই সব লিপি সাধারণ প্রাচীন হিন্দু মন্দিরেই দেখা যায়। জৈনের কথায়, ‘‘এএসআই রিপোর্ট বলছে, বর্তমান ও প্রাচীন কাঠামোয় বেশ কয়েকটি লিপি নজরে এসেছে। প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের গায়ে সেই সব লিপি খোদাই করা হয়েছিল। পরে সেই সব পাথর নতুন কাঠামো তৈরিতে কাজে লাগানো হয়।
উদ্ধার হওয়া লিপিতে জনার্দন, রুদ্র এবং উমেশ্বর এই দেবতার নাম পাওয়া গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে ‘ত্রিশূল’ চিহ্ন।’’ জ্ঞানবাপী মসজিদের ২১৫০.৫ বর্গমিটার এলাকার সমীক্ষা ক্ষেত্রের মধ্যে পশ্চিমের দেওয়াল, তহখানা এবং মূল কাঠামোর একাংশ থাকলেও ছিল না বিতর্কিত ওজুখানা। সেখানেই তথাকথিত শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব রয়েছে বলে হিন্দু পক্ষের দাবি। তাদের মতে, সেখানেই ছিল ‘স্বয়ম্ভূ বিশ্বেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ’। মুসলিম পক্ষের মতে সেটি পুরনো একটি ফোয়ারার অংশ। ওজুখানা অঞ্চলের সমীক্ষার জন্য হিন্দু পক্ষের একটি আবেদন এখন শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন। তহখানা এবং পশ্চিমের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্ব এএসআইয়ের বিশেষজ্ঞেরা রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিষ্ণুশঙ্কর।
এএসআই রিপোর্টে ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার’ ব্যবহার করে মাটির নীচের নানা স্তরে বিন্যস্ত বিভিন্ন যুগের কাঠামোর পরীক্ষার কথা রিপোর্টে উল্লিখিত হয়েছে বলে হিন্দু পক্ষের তরফে দাবি। বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে লিপি পাঠ, মুদ্রা, মূর্তি এবং অন্য ভাস্কর্যের প্রকৃতি দেখে তা কোন যুগের নির্মাণ, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষা করেনি এএসআই। সেই পরীক্ষার জন্যও পৃথক আবেদন হয়েছে আদালতে। পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষা হয়ে ‘ধ্বংস হওয়া বড় হিন্দু মন্দিরের’ বয়স চিহ্নিত করা যেতে পারে।
তবে কোনও শিলাখণ্ডের বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিং পদ্ধতির প্রয়োগ নিয়ে সংশয়ে বিশেষজ্ঞদের আর এক অংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে মূলত জীবাশ্ম বা দেহাবশেষের বয়স নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু শিলার বয়স নির্ধারণ করা কঠিন। প্রসঙ্গ, প্রাকৃতিক পরিবেশে কার্বনের সবচেয়ে বেশি যে আইসোটোপ পাওয়া যায় তা হল কার্বন-১২। সেই সঙ্গে খুব অল্প পরিমাণ কার্বন-১৪-ও পাওয়া যায়। পরিবেশে এই দুই আইসোটোপের অনুপাত প্রায় স্থির।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, পরিবেশ থেকে এই দুই ধরনের কার্বন আইসোটোপই গ্রহণ এবং ত্যাগ করে প্রাণী বা উদ্ভিদ। মৃত্যুর পরে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়। কার্বন-১২ আইসোটোপের ক্ষয় হয় না। কিন্তু কার্বন-১৪ আইসোটোপ তেজস্ক্রিয়। ৫,৭৩০ বছর পরে কার্বন-১৪-এর পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যায়। একেই বিজ্ঞানীরা বলেন ‘হাফ লাইফ’। ফলে প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পরে কার্বনের এই দুই আইসোটোপের অনুপাত বদলায়। কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে সেই পরিবর্তনের হিসেব করে ওই প্রাণী বা উদ্ভিদের মৃত্যুর আনুমানিক সময় নির্ধারণ করা সম্ভব। কিন্তু শিলার মতো বস্তুর ক্ষেত্রে এ ভাবে বয়স নির্ধারণ কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এ ক্ষেত্রে মূলত শিলাখণ্ডের নীচে চাপা পড়া কোনও জৈব বস্তুর উপস্থিতির উপর নির্ভর করতে হয়।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগেই অয্যোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে। আবেগে ভাসছে গোটা দেশ। আর এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এল আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এই রিপোর্ট।
কল্যাণীতে দুঃসাহসিক ছিনতাই! কাঁচরাপাড়ার ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা লুঠ
Durga Puja 2024: অভিনব উদ্যোগ! মহালয়ার দিন অঙ্কন প্রতিযোগিতা করল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাব
কাঁচরাপাড়ায় ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ২৫ লক্ষ টাকার মাল চুরি, মুল পান্ডা সুমন রায় গ্রেফতার
Durga Puja 2024: খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু হল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাবের এ বছরের পুজো
ইটালিতে জি৭ বৈঠকে জেলেনস্কি-মোদী বৈঠক, যুদ্ধ বন্ধের জন্য কী বললেন?
নিয়োগ মামলার তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও জমি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
রাজ্যের ৪ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষনা তৃণমূলের
চন্দবাবুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কেনো এলেন না নীতিশ? খোঁচা বিরোধীদের, নীতিশকে ঘিরে জল্পনা
উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস! রাশ ধরুক আরএসএস, জোর চর্চা দলের অন্দরে
একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!