'বঙ্গ বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে', দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ হিরণের - Bangla Hunt

‘বঙ্গ বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে’, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ হিরণের

By Bangla Hunt Desk - January 06, 2022

বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ক্ষোভ। আর তার জেরে ইতিমধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন খড়গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। চরম অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভের কারণেই তিনি গ্রুপ ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন- বিজেপিতে বিদ্রোহ চরমে, এবার দল ছাড়লেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি

বুধবার দিলীপ ঘোষের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে হিরণ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তৃণমূলের মতো অত বড় একটা দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে প্রাপ্য গুরুত্ব পাচ্ছি না। দিলীপ ঘোষ নিজের মতো দল পরিচালনা করেন। খড়গপুরে আসেন, নিজেদের সময়মতো সভা করেন। আমাকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেন না। সেই কারণেই বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই না। অন্যদিকে, বুধবার মেদিনীপুর শহরের এক অনুষ্ঠানে এসে দিলীপ ঘোষের পাল্টা যুক্তি, উনি ওঁর মতো চলেন। তবে দলের নিয়ম মেনে চলা উচিত। যদিও এনিয়ে তৃণমূলের পাল্টা কটাক্ষ, বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে হিরণের। বিজেপির মতো একটি দলে কোনও মানুষের পক্ষে থাকা সম্ভব না। একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হিরণ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপিতে যোগদান করে দিলীপ ঘোষের পা ছুঁয়ে তাঁকে প্রণামও করেন। দিলীপবাবুর প্রাক্তন বিধানসভা কেন্দ্র খড়গপুর সদর থেকে প্রার্থী হন তিনি। কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর থেকে ক্রমশই সাংসদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে হিরণের। গত কয়েকমাসে কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। খড়গপুরে কোনও দলীয় কর্মসূচিতে একজন থাকলে অপরজনকে দেখা যেত না। এমনকী সাংসদকে এড়িয়ে পাল্টা নিজের মতো কর্মসূচি নিতেও দেখা গিয়েছে বিধায়ককে। গত ২ ও ৪ জানুয়ারি দিলীপবাবুর নেতৃত্বে পুরসভা নির্বাচন সংক্রান্ত দলীয় বৈঠক হলেও একটিতেও উপস্থিত ছিলেন না হিরণ। যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে দিলীপবাবুর যুক্তি, ওঁকে পুরভোট সংক্রান্ত বৈঠকে থাকার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে ছিলেন। হিরণের অবশ্য দাবি, দিলীপবাবুকে বৈঠক পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
তবে, শুধুমাত্র দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত নয়, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একাধিকবার মতবিরোধেও জড়িয়েছেন হিরণ। খড়গপুরে তিনটি ওভারব্রিজ তৈরি করেছিল ভারতীয় রেল। সেই কাজে রেলের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। কিন্তু সাংসদের বিরুদ্ধে গিয়ে রেলের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন বিধায়ক। ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের সুরক্ষা থেকে শুরু করে রেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছিলেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রেলের ফুটব্রিজ উদ্বোধন করতে আসেন বিজেপি সাংসদ। সেখানে ফাঁকাই ছিল বিধায়কের আসন। এমনকী মাসখানেক আগে বিধায়কের অনুগামীদের সঙ্গে সাংসদের অনুগামীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ বিজেপি যুব মোর্চার সভানেত্রী তৃষা চাকলাদারের অভিযোগের ভিত্তিতে সাংসদ গোষ্ঠীর দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ফলে দুই নেতার মধ্যে এতদিন ধরে যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল, বুধবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগের মধ্যে দিয়ে তা আরও প্রকট হল। তবে এরই সঙ্গে হিরণের তৃণমূলে যোগদানের গুঞ্জনও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, যোগদানের বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর