উত্তরপ্রদেশে কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন! ঝুলিয়ে দেওয়া হলো দেহ

এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু ধর্ষণ এবং খুনই নয়, কিশোরীর দেহ ঝুলিয়েও দেন অভিযুক্ত। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে।

পুলিশ সূত্রে খবর, লখনউয়ের ইন্দিরানগরের বাসিন্দা ওই কিশোরী। বুধবার দুপুরে বাড়িতে একাই ছিল সে। অভিযোগ, সেই সুযোগ নিয়ে এক ব্যক্তি কিশোরীর বাড়িতে ঢোকেন। তাকে ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করেন। তার পর ঘরের মধ্যেই কিশোরীর দেহ ঝুলিয়ে দেন।

আরো পড়ুন- রাজ্যে কবে আসছে বর্ষা? কি বলছে হাওয়া অফিস, জানুন

পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরীর বাবা শাহিদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক শাহিদ। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। এই ঘটনার পর থেকে ইন্দিরানগরে একটা চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়েরা।

আরও একটি ঘটনায় এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশেই। রাজ্যের বস্তি জেলায় কিশোরীকে গণধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে এক বিজেপি নেতা, নাবালক-সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে। ৩ জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কলকাতায় প্রথম রসগোল্লা রোল! ‘স্পেশ্যাল রেসিপি’ তুমুল ভাইরাল

কলকাতায় প্রথম রসগোল্লা রোল! সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ‘স্পেশ্যাল রেসিপি’ আপলোড হতেই তুমুল ভাইরাল। ইন্টারনেটে তোলপাড় ফেলেছে রসগোল্লা রোল।

আপনি যদি নিয়মিত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন, আপনি সম্ভবত রসগোল্লা রোলের এই ভিডিওটি দেখেছেন। ভিডিওটির শুরুতেই দেখা যায় এক স্ট্রিট ভেন্ডার রোল তৈরি করছেন। তিনি পাত্রে রাখা সসে রসগোল্লা জাতীয় কিছু মিশিয়ে সেগুলি রোলের ভিতর সুন্দর করে পরপর সাজিয়ে দিতে থাকেন এবং তার ওপরে মেহনিজ দিতে দেখা যায় ।

রসগোল্লা রোল

পোস্টটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। এক লক্ষ আট হাজারের বেশি মানুষ এই ভিডিওটি দেখেছেন। অজস্র ভিউ এবং কমেন্টের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রেসিপিটি ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু যাকে রসগোল্লা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হলেও সেগুলি আসলে রসগোল্লা নয়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে “এই ভিডিওটির জন্য এই বিশেষ রোলটি বানানোর চেষ্টা করেছি এবং এটি পনির রোলের মতো যা আমরা সাধারণত খাই। ছানার কোফতা ব্যবহার করা হয়েছে। যেটা দেখে রসগোল্লা বলে মনে হচ্ছে। এটা কিন্তু আদৈও মিষ্টি নয়। এই কোফতাগুলো দেখতে রসগোল্লার মতো বলেই রোলটির নাম রসগোল্লা রোল,”।

টিকটিকির উৎপাতে অতিষ্ঠ? এই ছোট্ট কাজটি করুন, ২ মিনিটেই বাপ বাপ বলে পালাবে টিকটিকি

বাড়িতে টিকটিকির উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন? লাঠি, ঝাড়ু দিয়ে তাড়ালেও ফিরে আসছে? আপনাদের জন্য রইল গৃহগোধিকা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়-

ঘর থেকে টিকটিকি দূর করার সহজ ৮ উপায় (How To Get Rid From Lizard) যা মেনে চললে ঘরের মধ্যে একটা টিকটিকিও থাকবে না।

ডিমের খোসা : ডিমের খোসা টিকটিকি দূর করতে সহায়ক। ঘরের মধ্যে বা রান্নাঘরের এমন জায়গায় ডিমের খোসা রেখে দিন যেখানে টিকটিকি আসে। ডিমের খোসা দেখলে টিকটিকি শিকারি বলে মনে করে এবং সাধারণত সেই জায়গার ধারেকাছেও ঘেঁষে না। গোটা ডিম মাঝ বরাবর অর্ধেক করে রাখতে পারেন। ৩-৪ সপ্তাহ অন্তর ডিমের খোসা বদলে নিন।

পেপার স্প্রে : পেপার স্প্রে টিকটিকি দূর করতে দারুণ কার্যকরী উপায়। স্প্রে বোতলে সামান্য জল এবং গোলমরিচ ভাল করে মিশিয়ে ফ্রিজ এবং সোফার পিছনে, দেয়ালে এবং যে কোনও জায়গাতে স্প্রে করতে পারেন। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন লাল লঙ্কার গুঁড়ো অথবা ট্যাবাসকো সস। তবে এই ঝাঁজালো স্প্রে ব্যবহার করার আগে অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

ফ্লাইপেপার : টিকটিকি সাধারণত বাড়ির যেখানে আলো থাকে সেখানেই পোকামাকড় ধরার জন্য বেশি ঘোরাফেরা করে। তাই ঘরের বাল্বের কাছে রাখতে পারেন ফ্লাই পেপার। এভাবে সহজে টিকটিকি এবং পোকা ধরে ফেলতে পারবেন। তারপর পেপারসমেত ডাস্টবিনে ফেলে দিলেই হল।

কীটনাশক ট্যাবলেট : গ্যাস, ফ্রিজ এবং সিঙ্কের নীচে রেখে দিতে পারেন কীটনাশক ট্যাবলেট। একবার খেলেই মরে যাবে টিকটিকি। তবে বাড়িতে বাচ্চা এবং পোষ্য থাকলে যেন তাদের নাগালের বাইরে থাকে এই বিষাক্ত ট্যাবলেট।

কফি এবং তামাকের তৈরি বিষ : কিছুটা কফি এবং তামাকের গুঁড়ো নিয়ে হাতের সাহায্যে ছোট ছোট বল তৈরি করুন। তারপর টুথপিকের গোড়ায় লাগিয়ে টিকটিকি আসা-যাওয়ার পথে রেখে দিন। এই বলগুলো আসলে টিকটিকির জন্য বিষ।

রসুন : রসুনের তীব্র গন্ধ টিকটিকি সহ্য করতে পারে না। বিশেষত রান্না ঘরে রেখে দিতে পারেন রসুন। তাহলে আর ধারেকাছে টিকটিকি আসবে না।

পেঁয়াজ : রসুনের মতো পেঁয়াজের গন্ধটাও টিকটিকি সহ্য করতে পারে না। পেঁয়াজ দুই টুকরো করে নিয়ে টিকটিকি আসা-যাওয়ার পথে রেখে দিন। তাহলে টিকটিকি আর আসবে না।

ন্যাপথলিন : ন্যাপথলিনের উগ্র গন্ধ টিকটিকি একেবারেই সহ্য করতে পারে না। ঘরে পোকামাকড়ের উপদ্রব এবং টিকটিকির উপদ্রব কমানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন ন্যাপথলিন।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের কালের সামাজিক অবস্থা’ (প্রথম পর্ব)

রানা চক্রবর্তীঃ  প্রবন্ধের শুরুতেই প্রথমে চতুর্দশ শতকের বাঙলার রাজনৈতিক পটভূমিকার দিকে দৃষ্টিপাত করে নেওয়া যাক। ত্রয়োদশের শেষপাদে ‘বুগরাখান’ ও তাঁর দ্বিতীয় পুত্র ‘রুকনুদ্দীন কাইকাউস’ বাঙলার স্বাধীন সুলতান হিসাবে রাজ্য চালিয়েছিলেন। তারপরে তাঁদেরই একজন অনুচর ‘শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ’ শক্তিশালী হয়ে উঠে বাঙলার তখত দখল করে নিয়েছিলেন। তিনি শুধু তখ্তেই বসেন নি, নিজের রাজ্যের প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিমে লখনৌতি বা গৌড়ে ও পূর্বদিকে সোনার-গাঁয়ে শক্ত ঘাঁটি তৈরী করেছিলেন, আর সেই দুটি ঘাঁটির যোগসূত্র হিসাবে মধ্যপথে সপ্তগ্রামে বা সাত-গাঁয়ে তৃতীয় একটি ঘাঁটিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর আগে থেকে সোনারগাঁ বাঙলার একটি প্রসিদ্ধ বন্দর তো ছিলই, তখন থেকে সাতগাঁয়েও বন্দরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। উক্ত শামসুদ্দীনের কালেই পীর-দরবেশদের সাহায্যে মুসলমানেরা শ্রীহট্ট দখল করেছিলেন। সে কথায় পরে আসা যাবে। শামসুদ্দীনের মৃত্যুর পরে তাঁর তিন পুত্রের মধ্যে তখ্তের অধিকার নিয়ে লড়াই শুরু হয়েছিল। ‘গীয়াসুদ্দীন তুঘলক’ তখন দিল্লীর তখতে আসীন ছিলেন; ওই সব গোলযোগের ফয়সালা করতে তিনি প্রচুর সৈন্য নিয়ে বাঙলায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি শামসুদ্দীনের এক পুত্র ‘নাসিরউদ্দীন’কে লখনৌতির তখতে বসিয়ে পূর্ববাঙলাকে দিল্লীর খাসদখলে নিয়ে এসে, ‘বাহরাম খান’কে সেখানকার শাসক নিযুক্ত করেছিলেন। বাহরাম খানের মৃত্যুর পরে তাঁরই এক অনুচর ‘ফখরুদ্দীন’ গদি দখল করে নিয়েছিলেন; তাঁরই শাসনকালে ‘ইবন বতুতা’ বাঙলায় এসেছিলেন। তাঁর কথাও পরে বলা যাবে। ওই সব রাজনৈতিক গোলমালের ফলে বাঙলা তখন দিল্লী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, আর ‘ইলিয়াস শাহ’ সুযোগ বুঝে লখনৌতি, সোনারগাঁও ও সাতগাঁ দখল করে নিয়েছিলেন। ইলিয়াস শাহ প্রায় অজ্ঞাতকুলশীল একজন মানুষ হলেও তাঁর প্রতাপ কিন্তু অসাধারণ ছিল। দিল্লীর মসনদে তখন গীয়াসুদ্দীন তুঘলকের ভ্রাতুষ্পুত্র ‘ফিরোজ’ অবস্থান করছিলেন; তখন তিনি বাঙলার জমিদারী দখল করতে এগিয়ে এসেছিলেন। তবে ফিরোজ বহু তোড়জোড় করে বাঙলা অধিকার করতে এগিয়ে আসলেও, খুব একটা কিছু করতে পারেন নি। তাঁর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করবার জন্য ইলিয়াস একডালার দুর্ভেদ্য দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাঙালী পদাতিক সৈন্যবাহিনী তাঁর সহায় হয়েছিল; সেই দুর্ধর্ষ সৈন্যবাহিনীর ব্যূহ ভেদ করাটা দিল্লীর সৈন্যদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। ইলিয়াসের বাহিনীর কারণে বাঙালীর বীরত্ব অক্ষয় হয়ে ইতিহাসের পৃষ্ঠায় স্থান পেয়েছিল। বোঝাই যায় যে, ওই সময়ের বাঙালীর কাছে সামরিক জগৎ অগম্য ও ভয়াবহ ছিল না। সেই বিখ্যাত একডালা দুর্গটি যে ঠিক কোথায় অবস্থিত ছিল, তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতদ্বৈধ রয়েছে; কেউ কেউ বলেন যে, সেটি আধুনিক দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত ছিল, তো কেউ আবার বলেন যে, সেটি গৌড়ের কাছাকাছি কোথাও ছিল। ওদিকে প্রচলিত কিংবদন্তী আবার সেটিকে পূর্ববঙ্গে গঙ্গা (পদ্মা) ও যমুনার সঙ্গমস্থলে, অধুনাতন গোয়ালন্দের অনতিদূরে ঠেলে দিয়েছে। বলা বাহুল্য যে, ওই জায়গাটি বহুদিন আগেই জলমগ্ন হয়ে হারিয়ে গিয়েছে। যাই হোক, তখন ফিরোজকে শেষপর্যন্ত পিছিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু এরপরে তিনি আবার প্রায় ছ’বছর পরে, পূর্ববঙ্গের গদিচ্যুত নবাব ফখরুদ্দীনের জামাতার অনুরোধে বাঙলায় এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। তখন গৌড়-বঙ্গের গদিতে ইলিয়াসের ছেলে ‘সিকন্দর’ আসীন ছিলেন। তিনিও তাঁর পিতার মতোই একডালায়, বাঙালী সৈন্যের হেপাজতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেবারেও আগেরবারের মতোই ফল হতে চলেছিল। কিন্তু সিকন্দরের হঠাৎ কি মনে হওয়ায়, হয়ত তিনি চিরবিদ্রোহের অস্থিরতার চেয়ে স্বস্তিকে বেশি পছন্দ করায়, সোনারগাঁ ফিরিয়ে দিতে রাজী হয়েছিলেন। কিন্তু ফখরুদ্দীনের জামাতা দিল্লীর সুখসুবিধা ছেড়ে শেষপর্যন্ত পূর্ববঙ্গের জল-জঙ্গল ও রোগাকীর্ণ অঞ্চল, যেটাকে তখন ‘দোখজপুর নিয়ামত’ বা নানা আশীর্বাদপূত নরক বলা হত, সেখানে আর ফিরে আসতে চাননি। ফলে, ফিরোজ গৌড়-বঙ্গকে সিকন্দরের হাতেই তুলে দিয়ে, বার্ষিক কিছু ভেটের প্রত্যাশা নিয়ে দিল্লীতে ফিরে গিয়েছিলেন। তারপরে হয়ত তিনি উদ্যান-রচনায় মন দিয়েছিলেন; কারণ, ইতিহাস বলে যে, ওই সময়ের পরে তিনি দিল্লীর চারিদিকে বারোশো’ বাগ-বাগিচা তৈরি করিয়েছিলেন। ওই কাজটা অবশ্য নতুন কিছু ছিল না; বহু আগে থেকেই ভারতবর্ষের সর্বত্র ফুলের চাষ হত। তারপরে বাঙলার সুলতানের প্রায় দু’শো বছর ধরে দিল্লীর নামমাত্র তাঁবেদার হয়ে থেকে গিয়েছিলেন।
সামাজিক বিচারে চতুর্দশ শতক মূলতঃ ত্ৰয়োদশেরই অনুকৃতি ছিল; উক্ত কালের চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ দ্বাদশ শতকের জয়দেবের ‘গীত-গোবিন্দের’ই সার্থক অনুসরণ ছিল। দ্বাদশ, ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতকের বাঙালী হিন্দুসমাজ নিছকই কামচর্চায় মোহগ্রস্ত ও দুর্বল ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, সম্ভবতঃ চতুর্দশ শতকের প্রথম পাদে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচিত হয়েছিল, এবং সেটাই হয়ত প্রাচীনতম বাঙলা হরফের পুঁথি। ভাষার দিক থেকে পুঁথিটির ভাষা হয়ত চর্যাপদেরই পরিণতি, তবে সেটির মাঝে শূন্যপুরাণের ভাষাও পাওয়া যায়। ‘চণ্ডীদাস’ এক নাকি বহু, আদি চণ্ডীদাসের বাড়ি বাঁকুড়া নাকি বীরভূম, চতুর্দশ শতকের বাংলার সাধারণ মানুষের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে, ওই সব তর্কে ঢোকবার কোন প্রয়োজন নাই। চণ্ডীদাস বাঙালী ছিলেন, এবং শ্রীকৃষ্ণকীর্তন যে সেকালের বাঙালী-মানসের প্রতিচ্ছবি – এই তথ্যটিই শুধু এই প্রবন্ধের বিষয়ান্তর্গত। মনে রাখতে হবে যে, এই প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় সাহিত্য বা ভাষাগত নয়, সেটা হল সামাজিক। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের মূলকথা হল “ভাগিনা সুরতি মাগে দানের ছলে”। পরদার বলে রাধা রেহাই পেতে পারেন না কারণ,
“নিজ পরনারী দোষ নাহিক সংসারে
যত সতীপণ সব মিছা জাণ তারে॥
পরদারে পাপ নাহি বোলন্ত কাহ্নাঞিঁ।”
এই কামলালসা সহজযানের ‘স্বসংবেদ্য সুখের’ পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ; ‘স্বসংবেদ্য সুখ’, অর্থাৎ, যে সুখ শুধু নিজেই বোঝা যায়, কিন্তু অপরকে বোঝানো যায় না। সেই সুখ কি?
“সুন্দর যুবক সমে যে হএ শৃঙ্গার
সকল সংসার মানে সেই সুখসার।”
তবে শুধু সহজযান নয়, শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও তন্ত্রের ষটকর্মের প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় –
“স্তম্ভন মোহন আর দহন শোষণে
উছাটিন (উচাটন) বাণে লঅ রাধার পরাণে।”
এ ছাড়াও,
“ইড়া পিঙ্গলা সুসমনা সন্ধি
মন পবন তাত কৈল বন্দী।”
এ সব যে নিছক নির্লজ্জ যৌন অনাচার সেটার চিহ্ন –
“সহজে সুরতী ভুঞ্জ দেব গদাধর
নিশাস এড়িতেঁ মোকে দেহ অবসর।”
বাঙলার সামাজিক ইতিহাসের বিচারে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন চতুর্দশ শতকের পূতিগন্ধময় সমাজদেহের এক নগ্নমূর্তি মাত্র। অন্ধ ভক্তির পূত চন্দনেও সেই দুর্গন্ধকে দূর করা যায় না। তখনকার ক্রমবর্ধমান অন্ধ ভক্তিবাদ একদিকে যেমন বাঙালী হিন্দুসমাজকে দুর্বল করে তুলেছিল, তেমনি যৌন অনাচার প্রবল হয়ে মানুষ মোহগ্রস্ত-আত্মরক্ষায় অসমর্থ ও বিমুখ হয়ে উঠেছিল; তার উপরে গোড়া থেকেই তো সমাজ দ্বিধাবিভক্ত ছিল। নাহলে গৌড়-বঙ্গে তুর্কী সৈন্যের প্রবেশও অত সহজ হত বলে মনে হয় না। তখন বাঙালীর মধ্যে যে শৌর্যবীর্যের অভাব ছিল তা কিন্তু নয়, একডালায় বাঙালী পদাতিকের বীরত্ব – যার ফলে দিল্লী বহুকাল আর বঙ্গদেশের কাছে ঘেঁষতে সাহস পায়নি – সেটার ঐতিহাসিক প্রমাণ দেয়। কিন্তু বাঙালী হিন্দু শাসকদের চরিত্রহীনতার ফলে যে সংহত শক্তি বাঙলার হতে পারত, সেটাকে অনায়াসে তুর্কী শাসকেরা দখল করে বসেছিলেন, আর পীর-দরবেশদের কেরামতির ফলে তৎকালীন বাঙালী সমাজের একটি বিশিষ্ট অংশ ইসলামী উত্তরীয় গায়ে দিয়ে নতুন এক ধর্মসাধনায় মত্ত হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে উত্তর ও পূর্ববঙ্গে সেই পরিণতি ঘটেছিল। পুনরায় শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আসরে ফেরা যাক। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে সেকালের বাঙলার সামাজিক ইতিহাসের কিছু কিছু চিত্র পাওয়া যায়। তখন নানা ধরণের খোঁপা বাঁধাটা বাঙালী মেয়েদের সাজসজ্জার একটা অঙ্গ ছিল; তবে সেসবের মধ্যে ‘ঘোড়াচুলা’ তখন হয়ত শ্রেষ্ঠ ছিল। “খোঁপাত উপর তোর বউল মাল দেখী” – অর্থাৎ তখন বাঙালী নারীর খোঁপার উপরে বকুল মালা শোভা পেত। আর অলঙ্কার ছিল – “সাতেসরী হার, কানের কুণ্ডল, মুকুটমাথার, হাথের বলয়, বাহুটী, আ-আর আঙ্গুঠী, কঙ্কণ, নূপুর ও কেয়ূর। পায়ে মগর খাড়ু, হাথে বলয়া।” তারপরে,
“পাট পরিধান তোর নেতের আঁচল ল
মাণিকেঁ খঞ্চিল দুঈ পাশে”
উক্ত সময়ে মেয়েদের মধ্যে ওড়নারও প্রচলন ছিল। সেই সময়ে পাটের শাড়ি মেয়েদের অতি প্রিয় বস্তু ছিল, আর ‘নেতবাস’ ও ‘ময়ূরকণ্ঠী’ – এই দুটোই তখন বাঙলার প্রসিদ্ধ রেশমী কাপড় ছিল। তারপরে – “সীমন্তে সুরঙ্গ (হিঙ্গুলজাত উজ্জ্বলবর্ণবিশিষ্ট সিঁদুর), কাজলে উজল, কণ্ঠদেশে শঙ্খমালা, কর্পূরবাসিত তাম্বুল।” এবারে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন থেকে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের বরবেশের রূপটি দেখা যাক।
“ময়ুর পুছেঁ বান্ধিআঁ চুড়া
তাত কুসুমের মালা।
চন্দন তিলকে শোভিত ললাট
বেহ্ন চাঁদ ষোলকলা॥
নেত ধডি পরিধানে
হাথে কনকের বাঁশী।”
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের বৃন্দাবন খণ্ডে সেকালের বাঙলার ফলের একটি তালিকা পাওয়া যায়। সেই তালিকায় রয়েছে – “ছোলঙ্গ (টাবা), নারঙ্গ (কমলালেবু), কামরঙ্গ, আমু, লেম্বু, ডালিম্ব, জাম্বু, জাম্বীর, আম্বরা, ‘চেরু বেরু অফেরু’ (অজ্ঞাত), জলপায়ি, চালিতা, তেন্তলি, সতকড়া (কমলাজাতীয়), গুআ, নারিকেল, কণ্ঠোআল (কাঁঠাল), তাল, কদলক, শ্রীফল, খরমুজা, বাঙ্গী।” তখন যাত্রাকালে ‘হাছি জিঠী’, অর্থাৎ হাঁচি, টিকটিকি প্রবল বাধা বলে গণ্য হত; পায়ে আঘাত পাওয়াও তদ্রূপ ব্যাপার ছিল। এরপরে যাত্রাকালে আরো অশুভ লক্ষণ হিসেবে পাওয়া যায় –
“কথো দূরপথে মো দেখিলো সুগণী (ব্যাধ)।
হাথে খাপর (খর্পর = নরকপাল) ভিখ মাঙ্গএ যোগিনী॥
কান্ধে কুরুয়া লআঁ তেলী আগে জাএ।
সুখান ডালেতে বসি কাক কাঢ়ে রাএ॥”
ওই সময়ে দূতী পাঠাতে সঙ্গে পান-গুআ দেওয়া হত। তখন বিভিন্ন জিনিসের উপরে পণ্যশুল্কের প্রভেদ ছিল, ‘কুতঘাট’ বা শুল্ক আদায়ের নির্দিষ্ট স্থান ছিল, আর ‘দানী’ বা শুল্ক-সংগ্রাহক ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন থেকে তখনকার রক্ষকেরও খবর পাওয়া যায়। এছাড়া উক্ত গ্রন্থ থেকে করতাল ও মৃদঙ্গের উদ্দেশ্যও জানা যায়, সহজিয়া বৌদ্ধদের মত কৃষ্ণমন্ত্রী হিন্দুরাও সেকালে সংকীর্তনে মত্ত হয়েছিলেন। ‘নষ্টচন্দ্ৰ’ দেখলে মানুষের অপকলঙ্ক যে অনিবার্য, এই প্রবাদের শুরু হয়েছে হয়ত সেকালেই বা তারও আগে থেকে হয়েছিল।

“হরিতালী চন্দ্র দেখিলোঁ ভাদ্রমাসে।
হাথ ভরিলোঁ কিবা পুরিণ কলসে॥
ভূমিত আখর কিবা লিখিলোঁ জলে।
মিছা দোষে বন্ধন আম্বার তার ফলে॥”
উপরোক্ত সবগুলিই এখনো সারা গ্রাম-বাঙলার হিন্দুসমাজ মেনে চলে; কিছু কিছু তো মুসলমানেরাও মানেন। এগুলির মধ্যে নষ্টচন্দ্র বা ভাদ্রের শুক্লা চতুর্থীর চাঁদ দেখা, পূর্ণ-কলসীতে হাত পোরা, মাটির উপর জলের আঁক দেওয়া রয়েছে। তখন বাঙালী মেয়েরা পসরা সাজিয়ে হাটে যেতেন; রাধাও যেতেন।
“ঘৃত, দধি, দুধ, ঘোলেঁ সাজিআঁ পসার
নেত বসন দিয়া উপরে তাহার॥
আনুমতী লআঁ রাধা সামুড়ীর থানে” …
রাধা হাটের পথে পা বাড়াতেন। বাঙলার প্রচলিত প্রবাদ ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’, বা গোপনে দুশ্চরিত্রতা-সূচক কাজের সম্পর্কে শ্লেষ সেকালেরই উৎপত্তি বলে গবেষকরা মনে করে থাকেন। চর্যাপদের “আপনা মাংসে হরিণা বৈরী”, শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে “আপণ গাত্রর মাসে হরিণি বিকলী” রূপ পেয়েছে।

‘পিঙ্গল’ কথাটি যদিও অতি প্রাচীন, কিন্তু তবুও বিদ্বজ্জনের মতে ‘প্রাকৃত-পিঙ্গল’ চতুর্দশ শতকের আগে অধুনাতন আকারে গ্রথিত হয়নি। সেটির অনেক শ্লোকে বিখ্যাত রাজস্থানী রাজা ‘হামিরের’ উল্লেখ পাওয়া যায়। হামির ১৩০৪ খ্রীষ্টাব্দ থেকে শুরু করে প্রায় চৌষট্টি বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন। উক্ত গ্রন্থের কিছু কিছু শ্লোকে ‘খোরাসান’, ‘উল্লা’ প্রভৃতি মুসলমান-গন্ধী শব্দেরও সন্ধান পাওয়া যায়। প্রাকৃত-পিঙ্গলে ‘অবহট্ঠ’ বা অপভ্রংশ ভাষায় রচিত নানা শ্লোকের সমষ্টি রয়েছে বলে দেখতে পাওয়া যায়; উক্ত গ্রন্থটি সেকালে প্রচলিত নানা কবির রকমারি ছন্দের সংগ্রহ। প্রাচীন ভারতে ছন্দের স্থান উচ্চে ছিল; ছয়টি বেদাঙ্গের মধ্যে সেটি অন্যতম। সেই ছন্দোমালার মধ্যে কোনো কোনটিতে সেকালের বাঙলার রীতিনীতির কিছু কিছু উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। তবে প্রাকৃত-পিঙ্গল নিয়ে গবেষণা এখনো শেষ হয়নি, হয়ত কালক্রমে সেটা থেকে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। আপাততঃ স্থূলদৃষ্টিতে গ্রন্থটি থেকে যেটুকু তথ্য পাওয়া যায়, সেটাই এখানে উদ্ধৃত করা হল। গ্রন্থটির চম্পকমালায় পাওয়া যায় –
“ঔগগর ভত্তা রংভঅ পত্তা
গাইক ঘিত্তা দুধধ সজুত্তা
মোহণি মচ্ছা লালিচ গচ্ছা
দিজুহ কংতা খা পুণবংতা।”
অর্থাৎ, কলাপাতে গরম ভাত সঙ্গে গাওয়া ঘি, দুধ, মাছ ও নালিতা বা পাটশাক স্ত্রী পরিবেশন করছেন আর তাঁর পুণ্যবন্ত স্বামী সেসব আহার করছেন। এটি যে সেকালের বাঙালী গৃহের চিত্র, তাতে কোন সন্দেহ নেই; কারণ, গব্যঘৃতের সাথে তপ্ত অন্ন (কাঁচালঙ্কা সহযোগে কি?) অন্যান্য প্রদেশবাসীরও রুচিকর হতে পারে, কিন্তু নালিতা ও মাছ বাঙলার একান্তই নিজস্ব খাদ্য। টীকাকার বলেছিলেন, “ভক্তং উদগলিতমণ্ডং”, ‘ঔগর’ ধান্যবিশেষ; “মোহণি মচ্ছা মদগুর মৎস্য”, পাঠান্তরে মোদিনী মৎস্যা বা মনোজ্ঞ মৎস্য; ‘নালীচো’ গৌড়দেশে “অনেনৈব নাম্না প্রসিদ্ধঃ” শাকবৃক্ষবিশেষঃ। প্রাকৃত-পিঙ্গল থেকে আরেকটি শ্লোক উদ্ধৃত করা যাক। এতে তন্ত্রের পঞ্চ ‘ম’-কার সাধনার স্থূল ও নির্লজ্জ চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়।
“মংতং ণ তংতং ণহু কিংপি জাণে
ভাণং চ ণো কিংপি গুরুপ্পসাআে।
মজ্জং পিবামো মহিলং রমামো
মোক্‌খং বজামো কুলমগ গলগ গা॥”
অর্থাৎ, “মন্ত্রং ন তন্ত্রং ন হি কিমপি জানে ধ্যানংচ ন কিমপি গুরুপ্রসাদাৎ। মদ্যং পিবামো মহিলাং রমাম (মহে) মোক্ষং চ যামঃ কুলমার্গলগ্নাঃ।” চলতি বাঙলায় – মন্ত্র, তন্ত্র, ধ্যান কিছুই জানি না। শুধু গুরুপ্রসাদে কুলমার্গের পথ অনুসরণ করে, মদ-খেয়ে ও কামচর্চায় মোক্ষ লাভ করব। তখন সহজিয়া বৌদ্ধ ও নাথপন্থীদের সামাজিক বিভিন্নতা বিশেষ কিছুই ছিল না, তারপরে তান্ত্রিক উচ্ছৃঙ্খলতার সেতু বেয়ে সহজিয়া বৌদ্ধ ও সাধারণ পৌরাণিক হিন্দুসমাজ অনেক কাছাকাছি এসে পড়েছিল। এর ফলে সেই সময়ের গোঁড়া চাতুর্বর্ণ্য সমাজ তাঁদের থেকে আরো দূরে সরে গিয়েছিল; সেই গোঁড়া দলের স্তম্ভস্বরূপ ছিল ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও করণ বা কায়স্থ সম্প্রদায়। তাঁদের সামাজিক ব্যবস্থা স্মৃতিকারদের নির্দেশে চলত।
শামসুদ্দীনের আমলেও গৌড়-বঙ্গ পুরোপুরিভাবে তুর্কীদের অধিকারে চলে যায়নি। তখন তাঁদের দখলে ছিল উত্তর বঙ্গ বা গৌড়-লখোতি, উত্তর রাঢ়ের কিছু অংশ ও পশ্চিম-দক্ষিণ বঙ্গের কিছু অংশ। তৎকালীন গোঁড়া পৌরাণিক হিন্দুসমাজের বহুলাংশই তুর্কী অধিকারে থাকা অঞ্চলগুলি থেকে হিন্দু রাজার অধিকারে থাকা এলাকায় সরে গেলেও, তুর্কী এলাকাতেই সব সহজিয়া বৌদ্ধ, নাথপন্থী আর কিছু কিছু হিন্দু থেকে গিয়েছিলেন। ওদিকে চতুর্দশ শতক থেকেই পীর-দরবেশরা তান্ত্রিক সন্ন্যাসীদের একের পর এক আস্তানা দখল করতে শুরু করেছিলেন, সেসব জায়গায় একের পর এক মসজিদ, দরগা ও খানকা তৈরী হতে শুরু হয়েছিল। সেই পীর-দরবেশদের সাধারণ নাম ছিল ‘সূফী’; তাঁদের কথা পরে বলা যাবে। রাজ্য স্থাপনে বা রাজ্য শাসনে তখনকার তুর্কী শাসকদের যতটা না মন ছিল, রাজকোষে অর্থবৃদ্ধির দিকে তার চেয়ে বেশী নজর ছিল। তুর্কী শাসিত গৌড়-বঙ্গ তখন দিল্লী থেকে বিচ্ছিন্ন ও স্বাধীন থাকলেও, দিল্লী আবার বাঙলায় ছোঁ মারতে কতক্ষণ লাগত? তাই তুর্কীরা নিজেদের শক্তিরক্ষার জন্যই সেই সময়ের হিন্দু-প্রধানদের প্রাধান্য অব্যাহত রেখে দিয়েছিলেন, কিন্তু সাধারণজনের উপরে করভার বেড়ে উঠেছিল। দেশের দারিদ্র্য বেড়ে গিয়েছিল, আর সেই সঙ্গে খাদ্যের লোভে খানকাগুলিতে অতিথির সংখ্যাও ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখনকার তুর্কী শাসকদের কেউই দরগা, মসজিদ ও খানকা-স্থাপনে কোন কার্পণ্য করেন নি। এর ফলেও সেই সূফীদের চেষ্টায় বাঙলার তুর্কী-অধিকৃত অঞ্চলে ইসলামী ধর্মের প্রসার ঘটতে শুরু করেছিল। যেসব প্রখ্যাত সূফী চতুর্দশ শতকেই বাঙলায় নিজেদের আস্তানা গেড়ে বসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে গৌড়-পাণ্ডুয়ার ‘সিরাজ-অল-দীন ওসমান’, মহাস্থানগড়ের (বগুড়া) ‘শাহ সুলতান’, সাজাদপুরের (পাবনা) ‘শাহদৌলা শাহীদ’, মঙ্গলকোটের (বর্ধমান) ‘রাজাপীর’, এবং শ্রীহট্টের ‘শাহ জালাল’ সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ছিলেন। তবে সেক শুভোদয়া গ্রন্থের পীর সাহেব কোন ঐতিহাসিক মানুষ বলে প্রমাণিত হন নি। এরপরে ক্রমে ক্রমে তুর্কী রাজ্যও বেড়ে উঠেছিল, সেই সঙ্গে সূফীদের আস্তানাও বেড়ে গিয়েছিল। তখনকার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, গৌড়-বঙ্গে একদা এমন একটি শহর বা গ্রামও ছিল না যেখানে পীরদের কোন আস্তানা গড়ে ওঠেনি। ফলে সারা দেশে ইসলাম ধর্ম ব্যাপক আকার নিয়েছিল। তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে লোকগণনা শুরু না হলেও, বর্তমান সময়ের বিশেষজ্ঞদের অভিমত হল যে, শামসুদ্দীনের কালে সারা গৌড়-বঙ্গে হাজার ত্রিশেকের বেশী মুসলমান ছিলেন না, এবং তৎকালীন গৌড়ের জনসংখ্যা ছিল প্রায় দু’লক্ষ। সূফীদের সম্পর্কে বর্তমান জনসাধারণের একটা ভুল ধারণা রয়েছে; বর্তমানে তাঁদের সাধারণতঃ স্বধর্মনিষ্ঠ, কিন্তু পরধর্মসহিষ্ণু নিরীহ, উদার, সাধক সম্প্রদায় বলে গণ্য করা হয়। অনেকে আবার এটাও মনে করেন যে, তাঁরা প্রায় বেদান্তপন্থী ছিলেন। কেন একথা মনে করা হয়, সেটা পরে বলা যাবে। তবে দৃষ্টতঃ তাঁরা গোড়া ছিলেন না; কারণ সংগীত যদিও ইসলামে বর্জিত, তাঁরা কিন্তু বলেছিলেন যে, সংগীতের পথে পরমাত্মার সঙ্গলাভের আনন্দ ঘটে; এমনকি সিন্ধু প্রদেশে ‘শাহ লতিফ’ সম্প্রদায়ের সূফীরা তো হিন্দুদের ‘ওঁ’ মন্ত্রটিকেও গ্রহণ করে নিয়েছিলেন। কিন্তু একই সাথে একথাও ভুললে চলবে না যে, তাঁরা শুধু শাস্ত্র নিয়েই কারবার করতেন না, দরকার মত শস্ত্রপাণিও হতে জানতেন। তাঁরা ইসলাম ধর্মমতের ভিত্তিতে অমুসলমান শাসকদের বিরুদ্ধে কখনো নিজেরাই, তো কখনো আবার ইসলামী শাসকদের সহযোগে জিহাদ চালাতেন। এসবের অজস্র নজির ইতিহাসে পাওয়া যায়। সেসব থেকে এখানে শুধু প্রখ্যাত আরবী পর্যটক ইবন বতুতার লেখনী থেকে একটির কথা, অর্থাৎ শ্রীহট্ট দখলের কথা উদ্ধৃত করলেই যথেষ্ট হবে।
(চলবে)

(তথ্যসূত্র:
১- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী রচনা সমগ্র।
২- বৌদ্ধধর্ম, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
৩- বাঙ্গালীর ইতিহাস, আদিপর্ব, নীহাররঞ্জন রায়।
৪- বাঙ্গালার ইতিহাস, রাখালদাস বন্দোপাধ্যায়।
৫- বাংলা দেশের ইতিহাস, রমেশচন্দ্র মজুমদার।
৬- বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা, বিনয় ঘোষ।
৭- বাঙ্গালার ইতিহাস (সামাজিক বিবর্তন), ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত।
৮- বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, আশুতোষ ভট্টাচার্য।
৯- বাংলা ও বাঙালীর বিবর্তন, অতুল সুর।
১০- বৃহৎ বঙ্গ, দীনেশচন্দ্র সেন।
১১- পৌরাণিক উপাখ্যান, যোগেশচন্দ্র রায়।
১২- পূজা-পার্বণ, যোগেশচন্দ্র রায়।
১৩- প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যের ইতিহাস, ডঃ তমোনাশ চন্দ্র দাশগুপ্ত।
১৪- বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য।)

আইআইটি খড়গপুরে ফেরিওয়ালার ছেলে! পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার

বাঁকুড়াঃ বাবা চুড়ি-বালা-মালা-খেলনা গ্রামেগঞ্জে ফেরি করে বহু কষ্টে সংসার চালান। তারমধ্যে ছোট ছেলে এবার আইআইটি খড়্গপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এতদিন কষ্টেসৃষ্টে সংসার টানলেও ছোট ছেলের পড়ার খরচ চালাবেন কী ভাবে? ইদানীং সে ভাবনাতেই নাভিশ্বাস উঠছে বাবা কানাই ও মা ববিতা কমর্কারের।

আরো পড়ুন- চাকরির বদলে তরুণীকে কুপ্রস্তাব! তৃণমূলি পুরপ্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন অভিষেক

গ্রামের পথে পথে ঘুরে যেটুকু আয় করেন, তাতে কোনওমতে সংসার চলে। সেই ফেরিওয়ালার ছেলে ছোটন জেইই মেইন এবং অ্যাডভান্স পরীক্ষার বেড়া টপকে ফেলেছেন। সুযোগ পেয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের মতো নামজাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেখানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি টেক নিয়ে পড়াশোনা করবেন তিনি। ৪ বছরের কোর্সের খরচ ১২ লক্ষ টাকা।

ছেলের পড়ার খরচ সামলাবেন কী ভাবে, তা ভেবেই ঘুম ছুটেছে কানাই এবং তাঁর স্ত্রী ববিতার। দু’জনের কেউই হাইস্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। সে-ও আর্থিক অনটনের জন্য। মা-বাবার মতো একই দশা হয়েছিল বড় ছেলের। টানাটানির সংসারে তাঁকেও মাঝপথে পড়া ছাড়তে হয়েছে। তবে ছোট ছেলের উপর আশায় বুক বেঁধেছে কর্মকার পরিবার।

ছোটবেলা থেকেই বেশ মেধাবী ছোটন। পড়াশোনায় তাঁর আগ্রহ দেখে শত কষ্টেও তাতে বাধা দেননি মা-বাবা। গ্রামের স্কুল থেকে মাধ্যমিকের পর বাঁকুড়া শহরের একটি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে ভর্তি হন ছোটন। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর শুরু হয় অন্য লড়াই! আইআইটি খড়্গপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ঢোকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন ছোটন। তাতে ফলও মেলে। একে একে জেইই মেইন এবং অ্যাডভান্স পরীক্ষার মেধাতালিকায় উপরের দিকে জায়গা করে নেন।

আইআইটি খড়্গপুরে ভর্তির জন্য ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা জোগাড় হবে কী ভাবে? কাউন্সেলিংয়ের ৩৫ হাজার টাকাই বা কী ভাবে হাতে আসবে? এ বার আরও কয়েকটি বাধার মুখোমুখি কর্মকার পরিবার। তবে ছোটনের স্বপ্নপূরণের পথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বন্ধুবান্ধব, শিক্ষকরা থেকে বহু পাড়াপ্রতিবেশী। তাঁদের আর্থিক সহায়তায় আইআইটিতে কাউন্সেলিংয়ের খরচ উঠে গিয়েছে।

খড়্গপুরের ক্যাম্পাসে পৌঁছলেও ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির লক্ষাধিক টাকা জমা দিতে হবে ছোটনকে। তবে কী ভাবেই সে খরচ জুটবে? উত্তর জানা নেই ছোটনের।

ছেলের মতো পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কানাইও। যদিও তিনি জানেনই না, ঠিক কত টাকা প্রয়োজন! কানাই বলেন, ‘‘আমরা তেমন লেখাপড়া জানি না। আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে ছেলে। কিন্তু সেখানে পড়ার খরচ কেমন, তা-ই জানি না। ছোটনের মা ববিতা জানান, ‘‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয় আমাদের।’’ তাঁর আর্জি, ‘‘সরকারি সাহায্য না পেলে ছেলের পড়ার খরচ চালাতে পারব না আমরা।’’

সারারাত মোবাইল চার্জ দিলে কিংবা টিভি শুধুমাত্র রিমোট থেকে বন্ধ করলে দিতে হবে অতিরিক্ত ১২ হাজার টাকার বিল!

বর্তমান প্রজন্মের কাছে টিভি (tv), মোবাইল (mobile) খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। একদিনও টিভি (tv) কিংবা মোবাইল ছাড়া তাঁদের চলে না। আর মোবাইলের (mobile) সঙ্গে যেমন চার্জার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঠিক তেমনই টিভির সঙ্গে রিমোটও একটি কার্যকরী বিষয়।

তবে আপনি কি জানেন, আপনি যদি সারারাত মোবাইল (mobile) চার্জে দিয়ে রাখেন, কিংবা টিভি (tv) শুধুমাত্র রিমোট থেকেই বন্ধ করে রেখে দেন, তাহলে প্রতি বছরে আপনি প্রায় ১২০০০ টাকা অতিরক্ত খরচ করছেন। শুনতে অবাক লাগলে, বাস্তবটা কিন্তু এমনই। আপনার থেকে বেরিয়ে যাওয়া এই অর্থ থেকেই অন্যদিকে লাভবান হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একটি প্রধান শক্তি সংস্থা ব্রিটিশ গ্যাসের সহযোগী সেন্ট্রিকা এই বিষয়ে একটি গবেষোণা করেছে। তাঁদের রিপোর্ট বলছে, স্ট্যান্ডবাই মোডে থাকলেও অনেক পণ্য অল্প অল্প করে শক্তি চুষে নেয়। আর তাঁর জন্য কোন ব্যক্তিকে একবছরে প্রায় ১১৯৭১ টাকা অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল দিতে হচ্ছে। এই কোম্পানি এই ধরনের ডিভাইসের নাম দিয়েছে ভ্যাম্পায়ার ডিভাইস।

এমন অনেকেই আছেন, যারা টিভি দেখার পর শুধুমাত্র রিমোট থেকেই টিভি বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু দেখবেন টিভি চালু হলে সবুজ আলো জ্বলে, আর শুধুমাত্র রিমোট দিয়ে বন্ধ করার পর লাল আলো জ্বলতে থাকে। এই বিষয়টাকেই স্ট্যান্ডবাই মোড বলা হচ্ছে। আর এই লাল বাতিটাই আপনার বিদ্যুতের বিল বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, এই ধরনের ১৩ টি ডিভাইস রয়েছে। যার মধ্যে পড়ছে ওয়াই-ফাই রাউটার, এলইডি টিভি, ডিশ টিভি সেট টপ বক্স, মাইক্রোওয়েভ এবং গেমিং কনসোল, মোবাইল, ল্যাপটপ, স্মার্ট স্পিকার থেকে শুরু করে অটোমেশন ডিভাইস প্রভৃতি।

তাই কাজ শেষে যদি ব্যবহৃত ডিভাইসটি সঠিক ভাবে বন্ধ রাখা যায়, তাহলে একদিকে যেমন বিদ্যুতের বিল কম আসবে, তেমনই আপনার সেই ডিভাইসটিও ভালো থাকবে। তাই টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ ইত্যাদি ডিভাইসগুলো কাজের পর সঠিক ভাবে বন্ধ রাখুন।

হাতে পুরনো ১ টাকার কয়েন থাকলে আপনিও হতে পারেন ৯ কোটি টাকার মালিক

এখনকার দিনে আত্মনিভর হতে কেই না চায়। নিজে ব্যাবসা করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে সকলেরই মন চায়। ছেলে হোক বা মেয়ে সকলেরই আত্মনিভর হতে চায়। কিন্তু সবসময় তো সাধ থাকলেই সাধ্য থাকে না।

আর তাই নিজের ইচ্ছে স্বপ্ন থাকা সত্ত্বেও কখনও পিছিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আজ আপনাকে এমন একটা কথা বলবো যার ফলে আপনি আপনার স্বপ্ন বলুন বা শখ সবই পূরণ করতে পারবেন এক নিমেষে। এমনকি কোটিপতি ও হতে পারবেন আপনি।

 আরো পড়ুন- বুদ্ধিমান সন্তান পেতে গর্ভবতি মায়ের যা করনীয়!

তবে, তার জন্য আপনার কাছে থাকতে হবে ১টাকার কয়েন। কিন্তু, এ কয়েন যে সে কয়েন নয়। ১৯৮৫ সালের আগের কয়েন যদি থাকে আপনার কাছে তবে সেটা বিক্রি করে হতে পারবেন কোটিপতি। OLX এ গিয়ে নিজের নাম রেজিস্টার করে কয়েনটিকে বিক্রি করতে পারবেন।

তাহলে, যাদের পুরোনো এন্টিক কয়েন জমানোর শখ রয়েছে তাঁরা আর দেরি না করে এক্ষুনি এই সুবর্ণ সুযোগ হাতে তুলে নিন। পেয়ে যান ৯.৯৯ কোটি টাকা। আর নিমেষেই হয়ে যান কোটিপতি। ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আপনি নিলামে তুলতে পারবেন পুরোনো নোট ও কয়েন।

হোলিতে রং মাখুন আনন্দে, রং খেলার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

রাত পোহালেই হোলি। রঙে রঙে মেতে ওঠার দিন। যেদিকেই, তাকান এখন চারিদিকে হরেক রকম রং। লাল-গোলাপি-হলুদের মতো কমন রং তো আছেই, নানারকম অফবিট রঙেও ভরে উঠেছে চারিদিক। আর সকলেই তৈরি ক্যানভাস হয়ে উঠতে। তবে মাথায় রাখতে হবে, রং খেলার জন্য যেমন ঘর-দোর সাজাচ্ছেন, বসন্তোৎসবের উপযোগী পোশাক বেছে রাখছেন, তেমনই মনে রাখতে হবে ত্বক ও চুলের যত্নের বিষয়টি। আর সেটা শুরু করতে হবে আগের দিন থেকেই।

আরো পড়ুন- রং খেলে ত্বক আর চুলের একেবারে দফারফা? জেনে নিন টিপস

রং খেলার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন –

হোলি মানেই কিন্তু বেশ গরম আবহাওয়া। তাই দোল খেলার আগে থেকে শরীর হাইড্রেট রাখতে হবে ।

হোলি খেলার পর ত্বকের সমস্যা নিয়ে অনেকেই ডাক্তারের কাছে যান। তাই ত্বকের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আগে থেকেই অ্যান্টি অক্সিডেন্টের জোগান দেয়, এমন ফল খান। জুস খেতে পারেন।

হোলি খেলার আগে কী কী করবেন :

চুল বাঁচাতে খেলতে নামার আগে সম্পূর্ণ চুলে লাগাতে হবে তেল।

হোলির রং নখ বাঁচাতে গেলে লাগিয়ে নিন নেল পলিশ ।

হোলি খেলতে শুরু করার ১ ঘণ্টা আগে সারা মুখে ও হাতে লাগিয়ে নিন ময়শ্চরাইজার।

যদি খোলা জায়গায় রোদের মধ্যে হোলি খেলার ব্যাপার থাকে, তাহলে সানব্লক লাগাতে পারেন।

ত্বকের চরিত্র অনুসারে, সানস্ক্রিন বেছে নিন।

একবার সানস্ক্রিন লাগালেই হবে না, ঘণ্টাখানেক অন্তর রি অ্যাপ্লাই করতে হবে সানস্ক্রিন।

জল রং খেললে তো সানস্ক্রিনের লেয়ার উঠে যাবে। তাই একাধিকবার লাগাতে হবে সানস্ক্রিন।

খেয়াল রাখুন কাদের সঙ্গে খেলছেন রং। তারাও যেন ভাল মানের রং ব্যবহার করেন, সেটা খেয়াল রাখতে ভাল।

হার্বাল আবির ও রং ব্যবহার করুন।

চোখে রং ঢুকলে ঘষবেন না। জলের ঝাপটা দিন। কিছুক্ষণ বিরতি নিন।

প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন স্কিন অ্যালার্জি হলে।

রং খেলে ত্বক আর চুলের একেবারে দফারফা? জেনে নিন টিপস

আজ দোল উৎসব। এই দোল উৎসব উপলক্ষে সকাল থেকে জমিয়ে রং খেলেছেন? আর রং খেলে ত্বক আর চুলের একেবারে দফারফা? ত্বক ও চুল ভালো থাকবে কয়েকটা সহজ নিয়মে বাড়িতে থাকা কয়েকটা উপাদান দিয়েই আপনি কিন্তু এই ধরনের কেমিক্যালযুক্ত রংকে ত্বক এবং চুল থেকে একেবারে তুলে ফেলতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে জেনে নিন রং খেলার পরে কিভাবে ত্বক আর চুলের যত্ন নেবেন।

আরো পড়ুন- কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ফিরতে চাইলে বাড়ি ফাঁকা করে দেওয়া হবে! ঘোষণা সিআরপিএফের

চুলের যত্ন- রঙ মাখা চুল থেকে রং তোলার জন্য প্রথমেই শ্যাম্পু করতে যাবেন না প্রথমে ভাল করে জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে তার আগে কোনো শুকনো জায়গায় দাঁড়িয়ে রং যতটা পারবেন ঝরিয়ে নেবেন। তারপর জল দিয়ে পরিষ্কার করার পরে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে অন্তত দু-তিনবার ধুয়ে নেবেন।

ত্বকের যত্ন – রং মাখার সময় আমাদের খেয়াল থাকে না। যে এই রং তুলতে বা এই রং আমাদের ত্বকের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর সে যাই হোক উৎসবের দিনে রং মাখবে না। তাও হয় না, কিন্তু এই রংকে যদি একেবারে তুলে ফেলতে চান, তাহলে রান্না ঘরে থাকা কয়েকটা উপাদানের উপরে আপনাকে নির্ভর করতে হবে। কেমিক্যালযুক্ত ক্লিনজার নয়, কাঁচা দুধ দিয়ে প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর বেসন, আটা, ময়দা হাতের সামনে যা পাবেন তা দিয়ে সামান্য জলে গুলে নিয়ে মুখের উপরে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। যদি খুব শুকনো লাগে অবশ্যই এর সঙ্গে একটু নারকেল তেল মিশিয়ে নিতে পারেন। তবে খুব তাড়াতাড়ি রং তোলার জন্য কখনোই বেশি ঘষাঘষি করতে যাবেন না, তাহলে কিন্তু ত্বকের উপরের র‍্যাশ বের হতে পারে।

BanglaHunt (banglahunt.in) is a Populer Bengali News Portal from Kolkata

BanglaHunt (banglahunt.in) is a Populer Bengali News Portal. BanglaHunt is an independent media organisations dedicated to covaring Populer Bengla News / Reading Latest News / Latest News of Politics / Bengal News / বাংলা খবর / Braking News / National / International / Sports / Entertainment / and many more in Bengali and English From Kolkata, West Bengal, India”. BanglaHunt is founded on 5 Feb 2020 by Adrit Majumder.

আরো পড়ুন- শিশু অমনোযোগী? কীভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়বে জানুন

BanglaHunt Facebook Page link-

https://www.facebook.com/banglahuntonline/

BanglaHunt

বহরমপুরে “কৃপাময়ী কালী” মন্দিরে জড়িয়ে আছে স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ইতিহাস, যেখানে আসতেন নেতাজিও

বিজন ব্যানার্জিঃ বহরমপুরের কাশিমবাজার ভাটপাড়া কৃপাময়ী কালীবাড়ির এ বছর ১২৫তম বর্ষ। স্বাধীনতার আগে এই এলাকা জনমানবশূন্য ছিল। তখন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই মন্দিরে গোপন আস্তানা তৈরি করেছিলেন। শোনা যায় নেতাজিও এখানে আসতেন। তাই আজ অনেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই ইতিহাসকে ‘ছুঁয়ে দেখতে’ এই মন্দিরে আসেন।

মন্দিরের সেবাইত শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাশিমবাজারের রাজা মণিন্দ্র চন্দ্র নন্দীর রাজবাড়িতে পুরোহিত ছিলেন শুধাংশু শেখর চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠাতা করেন। মা কালী তখন মাটির বাড়িতে থাকতেন। রাজা মণিন্দ্র চন্দ্র উদ্যোগী হয়ে এই আজকের এই মন্দির তৈরি করেন।’’

ব্রিটিশ আমলে এই মন্দির এলাকায় কেউ থাকতেন না। তাই সহজেই এই মন্দির হয়ে ওঠে স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের গোপন ডেরা। আর মন্দিরে অন্য কেউ না এলেও পুরোহিতরা রোজ আসতেন। কিন্তু তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পূর্ণ সহযোগিতা করতেন এখানে লুকিয়ে থাকতে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও আসতেন বলে জানিয়েছেন শান্তনু চট্টোপাধ্যায়। এখানে থাকাকালীন ব্রিটিশরা তাঁর খোঁজ পাননি কখনও। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই মন্দির। শান্তনু চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের অন্যতম সদস্য শিপ্রা জানিয়েছেন, কথিত আছে বহরমপুর এলাকার জাগ্রত দেবী আনন্দময়ী, করুণাময়ী ও কৃপাময়ী ৩ বোন।

এলাকার বাসিন্দা কল্যাণী সরকার জানালেন, এক সময় এক দুপুরে ডাকাতরা মা-কে ভোগ দিয়ে মন্দিরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। ভোরে মন্দিরে ডাকাতি করে পালানোর সময় হঠাৎ কাঁসার বাসন পড়ে যায়। সেই সময় সেবাইত পরিবারের এক সদস্যও স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন মন্দিরে ডাকাতি হচ্ছে। তিনি গুলি করে এক ডাকাতকে মেরে ফেলেন। ডাকাতরা নাকি মূর্তির গা থেকে গয়না খোলার সময় মায়ের একটি পা ভেঙে ফেলে। পরে বারাণসী থেকে আবার কষ্ঠিপাথর নতুন মুর্তি নিয়ে আসা হয়। কৃপাময়ী কালী মাকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর পুরাতন মূর্তিটি আনন্দময়ী কালী মন্দিরে রাখা হয়।

রিক্সাচালক থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রের উদ্ভাবক, এক দরিদ্র কৃষকের রূপকথার জার্নি

ধরমবীর কম্বোজ পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
পুরস্কারও। আজ তাঁর আবিস্কৃত যন্ত্র
আমেরিকা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া সহ
পৃথিবীর নানা দেশে পাড়ি দেয়। তিনি
রিক্সাচালকের জীবিকা থেকে সস্তার
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ. যন্ত্রের উদ্ভাবক।

রোজগারের আশায় একদিন গ্রাম ছেড়ে দিল্লি শহরে পাড়ি দিয়েছিলেন ধরমবীর কম্বোজ। সেখানে রোদে ঘেমে সাইকেল-রিক্সা টেনেছেন। আবার সব ছেড়ে গ্রামে ফিরে এসেছেন কৃষিকাজের টানে। আর সেইসঙ্গে চলেছে কৃষিকাজ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা। আবিষ্কার করেছেন এক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র। আর আজ দিল্লির সেই রিক্সাচালক একজন লাখপতি। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র বিক্রি করে এবং কৃষিকাজ করেই বছরে অন্তত ২০-২৫ লক্ষ টাকা আয় করেন তিনি। ২০১৩ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও। ধরমবীর কম্বোজ (Dharambir Kamboj), ওরফে কিষান ধরমবীরের হাত ধরে আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন হরিয়ানা (Haryana) এবং অন্যান্য রাজ্যের বহু কৃষক।

১৯৬৩ সালে হরিয়ানার দামাল গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম ধরমবীরের। কিছু জমিজমা আর একটি গম পেষাইয়ের কল, এই ছিল পারিবারিক সম্পত্তি। বেশ অল্প বয়সেই গম ভানার যন্ত্র চালাতে শিখে গিয়েছিলেন তিনি। প্রযুক্তির দিকে আগ্রহ জন্মায় সেই সময়েই। স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষকের উৎসাহে সেই আগ্রহ আরও বাড়তে থাকে। ঘরের নানা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরি করেছেন নিজেই। তবে প্রথাগত পড়াশোনা বেশিদিন চালাতে পারেননি। দশম শ্রেণিতেই শেষ হয় পড়াশোনা। তখন বাড়িতে মা এবং বোন একসঙ্গে অসুস্থ। মা মারা গেলেন ১৯৮৪ সালে। অবশ্য বোন বেঁচে গেলেন। এই সময়েই রোজগারের আশায় দিল্লি চলে যান ধরমবীর। সেখানে রিক্সা চালিয়ে কিছু রোজগার হত। তবে পড়াশোনার নেশা পুরোপুরি ছাড়তে পারলেন না। প্রায়ই চলে যেতেন পাবলিক লাইব্রেরিতে। সেখানে কৃষিকাজ সংক্রান্ত বইয়ের প্রতিই তাঁর আগ্রহ ছিল বেশি।

লাইব্রেরিতে বসেই তিনি জানতে পারলেন, ব্রকোলি, অ্যাস্পারগাস, লেটুসের মতো শাকসবজি, বাজারে যা চড়া মূল্যে বিক্রি হয়, তাও চাষ করা যায় অতি সহজেই। তাই ১৯৯০ সাল নাগাদ ঠিক করলেন, আবার গ্রামে ফিরে যাবেন। ফিরেও গেলেন। চাষ-আবাদ শুরু করলেন। প্রথমে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলেও ১৯৯৪ সালের মধ্যেই তিনি অর্গ্যানিক ফার্মিং শুরু করলেন। পাশাপাশি নানা সেমিনারেও যেতেন নতুন নতুন পদ্ধতি শিখতে। ২০০২ সালে এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছ থেকে জানতে পারলেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রের বিষয়ে। নানারকম ফলমূল, শাকসবজি বা ঔষধি গাছ থেকে বাণিজ্যিক পণ্য তৈরি করা যায় অতি সহজে। কিন্তু তার দাম ৫ লক্ষ টাকা। ধরমবীরের মতো দরিদ্র কৃষকরা সেই যন্ত্র কিনবেন কীকরে?

শেষ পর্যন্ত নিজেই বানিয়ে ফেললেন একটি অপেক্ষাকৃত ছোটো আয়তনের যন্ত্র। নিজে তো প্রক্রিয়াকরণ শুরু করলেনই, সেইসঙ্গে যন্ত্র তৈরির কারখানাও বানিয়ে ফেললেন একটা। আজ তাঁর এই যন্ত্র আমেরিকা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর নানা দেশে পাড়ি দেয়। পাশাপাশি ভারতের কৃষকদের বিনামূল্যে এই যন্ত্র চালনার প্রশিক্ষণও দেন ধরমবীর। সবচেয়ে বেশি জোর দেন মহিলা কৃষকদের প্রশিক্ষণে। এখনও অবধি অন্তত ৭ হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। ধরমবীরের মতো যাঁরা কেবল পুঁজির অভাবে ব্যবসার ঝুঁকি নিতে ভয় পান, তাঁদেরও উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি। তিনি যেমন পেরেছেন, তেমনই আরও অনেকেই সফল হতে পারবেন। প্রয়োজন শুধু সাহস নিয়ে কাজটা শুরু করা।