বৃদ্ধকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে

মালদা- মদ্যপ অবস্থায় বাড়ির পাশে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার প্রতিবাদ করাই বৃদ্ধকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুইজন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার কালিয়াচক থানার মধু ঘাট এলাকায়। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় মৃত বৃদ্ধের নাম উদয় মন্ডল বয়স(৬০) বছর। আহত হয়েছেন স্ত্রী তরুলতা মন্ডল বয়স(৫৫) বছর ও তার ছেলে উৎপল মন্ডল বয়স(৩২)বছর। তরুলতা মন্ডল বর্তমানে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং উৎপল মন্ডল মালদার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্তরা হল প্রতাপ চৌধুরী অলোকা চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায় হোলির রাতে মদ্যপ অবস্থায় প্রতাপ চৌধুরী গালিগালাজ করছিল। সেই সময় প্রতিবাদ করে উদয় মন্ডল। এরপর তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। বৃদ্ধকে বাঁচাতে যায় তার ছেলে ও স্ত্রী। তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। রাতেই তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আনা হয় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসা চলাকালীন আজ সকালে মৃত্যু হয় উদয় মন্ডলের। মৃতদেহ টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এই ঘটনার পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কালিয়াচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।

আমি তো লিখতে পারিনা স্যার! ED কে জানালো কেষ্ট

কৃষক পরিবারে জন্ম। অল্প বয়সেই খেটে খাওয়ার ভাবনা বপন করে নিয়েছিলেন রন্ধ্রে রন্ধ্রে। পড়াশোনা নামক ‘বিলাসিতা’ তাঁর ক্লাস এইট পর্যন্তই। তারপরই ‘অফ টু’ রোজগারের ধান্দায় খোলা বাজারে। কখনও মুদি দোকানে কাজ করেছেন, কখনও গ্রিলের দোকানে, কখনও মাছের ব্যবসা। লেখালেখির জন্য তাঁকে এই পেশায় খুব একটা বেশি পেন ধরতে হয়নি। যাও বা ধরেছেন তা কেবল বেতাজ বাদশা হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেকে সইসাবুত করতেই! অন্তত তাঁর ‘পাস্ট রেকর্ড’ তাই বলে। পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন সেই কস্মিনকালে। কিন্তু ইডি-র খপ্পরে পড়ে আবারও পেন ধরতে হয়েছে তাঁকে। শুধু তাই নয়, লিখতে হবে নিজের বয়ানও! বিশাল ফ্যাসাদে কেষ্ট! অনুব্রতকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে ফ্যাসাদে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও। লিখতে পারেন না কেষ্ট! বয়ানের শেষে শুধু সইটুকু করেছেন বলে খবর ইডি সূত্রে খবর।

আরো পড়ুন- মহিলারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয় তালিবান শাসিত আফগানিস্তানে! বলল রাষ্ট্রপুঞ্জ

নিয়ম অনুযায়ী ইডি-র বয়ান রেকর্ড করে ৫০ পিএমএলএ অ্যাক্ট অনুযায়ী। এই আইনে বলা আছে, অভিযুক্তকে কিংবা সাক্ষীকে নিজেকেই নিজের বয়ান লিখে দিতে হয় অফিসারের সামনে। প্রশ্ন তদন্তকারীরা অফিসার করেন। উত্তর অভিযুক্তকে লিখতে হয়। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ড হয়। গতকাল ইডি হেফাজতের প্রথম দিনে অনুব্রতকে বলা হয় নিজে হাতেই নিজের বয়ান লিখতে। কিন্তু ফ্যাসাদে পড়ে যান তিনি। সূত্রের খবর, এদিক-ওদিক পানে চান। শেষমেশ তাঁর নিষ্পাপ স্বীকারোক্তি, “আমি লিখতে পারি না স্যর। শুধু নাম সই করতে পারি।” এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েন অফিসাররাও। ‘স্যর’রাও মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। জটিল পরিস্থিতিতে আবারও জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা।

কীভাবে জেরা হবে তা নিয়েই একটা ছোট্ট গোল টেবিল হয়ে যায় ইডি আধিকারিকদের মধ্যে। তারপর এক সিনিয়র অফিসারের নির্দেশে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (sop) মেনে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীকে নিয়ে আসা হয়। যিনি জেরা পর্বে অনুব্রতর দেওয়া উত্তর লিখেছেন। জেরা প্রক্রিয়ার শেষে অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর দেওয়া উত্তর পড়ে শোনানো হয়েছে। সব ঠিক আছে বলে জানালে সেই কাগজের নীচে সই করেন কেষ্ট।

পিএমএলএ আইন অনুযায়ী, ইডির কাছে দেওয়া বয়ান আদালতে গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ আদালতে বিচারকের সামনে যে জবানবন্দির সমান। আইনি ভাষায় জুডিসিয়াল স্টেটমেন্ট। ইডি অফিসারের সামনে দেওয়া সেই বয়ানকেও জবানবন্দি হিসেবেই দেখা হয়।

কোন অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষী যাতে নিজের দেওয়া বয়ান তাঁকে দিয়ে জোর করে লেখানো বা ভয় দেখিয়ে লেখানো বলে পরবর্তীতে আদালতে দাবি করতে না পারে সেজন্যই ইডিকে এই বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া আছে আইনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে অনুব্রত মণ্ডল যেহেতু একজন রাজনৈতিক দলের নেতা, রাজনৈতিক কারণেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণে, তিনি পরবর্তীতে যাতে নিজের বয়ান থেকে সরে যেতে পারেন। কিংবা তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে জোর করে বয়ান লেখানোর অভিযোগ আনতে পারেন, তাই অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে তাঁকে দিয়েই নিজের বয়ান লেখানোর দিকে জোর দিয়েছিল ইডি। কিন্তু তাদের জানা ছিল না, যে তিনি লিখতে পারেন না। ফলে জেরা পর্বের শুরুতেই বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয় এই কারণে। পরবর্তীতে নিরপেক্ষ সাক্ষী এনে তাঁকে দিয়ে কেষ্টর বয়ান লেখানো হয়।

কংগ্রেসে ছেড়ে সিপিএমের সদস্য পদ নিন, কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার

আগরতলাঃ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা করে জোট বেঁধে লড়াই করবে কংগ্রেস এবং সিপিএম। এটা একেবারে নিশ্চিত করে দিয়েছেন CPIM এবং Congress নেতারা। আর এই নিয়েই এবার কংগ্রেসকে বিঁধলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা (Manik Saha)। কংগ্রেসের নেতাদের CPIM-র সদস্যপদ নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। এক সময়ে Manik Saha ছিলেন কংগ্রেসে। পরে তিনি যোগ দেন BJP-তে। BJP-র রাজ্য সভাপতিও হন তিনি। গত বছর তাঁকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী করা হয়।

আরো পড়ুন- পাকিস্তানে চরম খাদ্য সংকট, মোদিকে পাশে চান পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ

এদিকে সেই রাজ্য থেকে শাসক BJP-কে সরাতে সবাইকে জোট বাঁধার ডাক দেয় কংগ্রেস এবং CPIM। তাঁদের দাবি, এই নির্বাচনেই ত্রিপুরা BJP-র অপশাসন থেকে মুক্ত হবে। অন্যদিকে, বাম এবং কংগ্রেসকে বিঁধেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। মানিক সাহা বলেন, “আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে এই রকম অদ্ভূত জিনিস ত্রিপুরায় দেখিনি। আগে, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছিল CPIM এবং বামেরা। এটা সেখানের অনেক কংগ্রেস নেতাই মেনে নিতে পারেননি। বাংলায় তাঁদের অনেকেই চলে গিয়েছিলেন তৃণমূলে। কারণ তারা CPIM-এর সঙ্গে কোন সমঝোতা করতে চাননি। বাংলার নির্বাচনে একেবারে শূন্য পেয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট। আর এখানে তারা একই জিনিস করতে চাইছেন। এখানে কংগ্রেস তো CPIM-র সঙ্গে ঘর করতে শুরু করে দিয়েছে।”

সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “কংগ্রেস আগেও একাধিকবার তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় বদলেছে। এখানে তারা CPIM-র সঙ্গে জোট গড়ে মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে। তারা এক কাজ করুন, একটা অশুভ আঁতাত বা জোট করার পরিবর্তে পুরোপুরি মিশে যান CPIM-র সঙ্গে। কংগ্রেসের নেতাদের উচিত CPIM-র সদস্যপদ গ্রহণ করে নেওয়া।” তিনি বলেন, সেই জোটে TIPRA যাবে কী না তা নিয়ে আমার কোন ধারনা নেই। তবে তারা যাই করুন না কেন, এতে BJP-র ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

মানিক সাহার দাবি, এবারের নির্বাচনে CPIM এবং Congress দুই দলই হারবে। কারণ, তাঁদের এই অশুভ আঁতাত সেই রাজ্যের মানুষ মেনে নেবেন না। তাঁর দাবি, “কংগ্রেসের অনেক কর্মীই এই জোটে হতাশ। নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা CPIM ক্যাডারদের হাতে অত্যচারিত হয়েছিলেন। এখন সেই বামেদের হাত ধরেই হাঁটতে চাইছে কংগ্রেস। সেটা মেনে নিতে পারছেন ওই কর্মীরা। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব দেবের মতে, এটাই CPIM-র শেষ যাত্রা। কংগ্রেস ত্রিপুরার একেবারে ‘পোস্টার’ হয়ে যাবে বলেও দাবি তাঁর।

সেখানের শাসকদলের নেতাদের দাবি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের -র এই জোট প্রমাণ করেছে যে তারা BJP-কে ভয় পাচ্ছে। সেখানের কংগ্রেস এবং CPIM-র কোন আদর্শ নেই বলেও দাবি করেছেন তারা। অন্যদিকে ত্রিপুরার তৃণমূলের দাবি, কংগ্রেস এবং বামেদের এই জোটকে ভালোভাবে নেবেন না সেখানের সাধারণ বাসিন্দারা। এর সুফল পাবে তৃণমূল কংগ্রেস।

লক্ষাধিক টাকার মাদক সহ গ্রেফতার ১, বড় সাফল্য মালদহের ইংরেজবাজার থানার

মালদাঃ মাদক উদ্ধারে বড় সাফল্য ইমেজ বাজার থানার পুলিশের। গোপন সূত্রে অভিযান চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার ব্রাউন সুগার সহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে কালিয়াচক থানার সীমান্ত সংলগ্ন  ইমামজাগির এলাকা থেকে ওই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০২ গ্রাম ব্রাউন সুগার । যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালদা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।

আরো পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড় ধাক্কা! বিজেপি কংগ্রেস ছেড়ে ১০০০ কর্মী যোগ দিলেন ঘাসফুলে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম শাহাদাদ শেখ। তার বাড়ি কালিয়াচকে। ধৃতের কাছ থেকে ব্রাউন সুগার ছাড়া উদ্ধার হয়েছে একটি মোটর বাইক। এদিন রাতে প্লাস্টিকের প্যাকেট বন্দি ওই ব্রাউন সুগার গুলি বাইরে কোথাও পাচার করার পরিকল্পনা নিয়েছিল ওই মাদক কারবারি। কিন্তু তার আগেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ অফিসার আনসারুল হকের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালায়। এবং ইমামজাগির এলাকা থেকেই বেআইনি ব্রাউন সুগার সহ ধৃতকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে বেজায় ধাক্কা তৃণমূলের, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদৌ প্রভাব পড়বে?

গ্রাম বাংলায় দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচি বেজায় ধাক্কা খাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে সাংসদ থেকে বিধায়ক, দলীয় নেতৃত্ব থেকে মন্ত্রীর সামনেই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূতদের। সম্প্রতি একাধিক কর্মসূচি দেখলে মনে হতে পারে সুরক্ষাকবচ ঢিলে পড়েছে। ক্ষোভ-বিক্ষোভ, গ্রামে ঢুকতে বাধা, মন্ত্রীর সামনেই মমতার দূতের গ্রামবাসীকে সপাটে চড় দেখতে পাচ্ছে আমবাঙালি। তবে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদৌ এর কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে? তা কিন্তু লক্ষ টাকার প্রশ্ন।

পূর্ব মেদিনীপুরে দলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে বাধা, বীরভূম জেলার দুই তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ও অসিত মালকে ঘিরে বিক্ষোভ। এই জেলাতেই দলের তরুণতুর্কী নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যকে গ্রামে ঢুকতে বাধা, উত্তর ২৪ পরগনায় খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের সামনেই রাস্তা সারানোর দাবি তোলায় গ্রামবাসীকে চড়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কর্মসূচি ঘিরে একাধিক অস্বস্তিকর ঘটনায় চরম বিভ্রান্তিতে ঘাসফুল শিবির। একদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে প্রাক্তনমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক ব্যক্তি জেলবন্দি, গরুপাচার কাণ্ডে প্রতাপশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল গ্রেফতার। কয়লাপাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে। আবাস যোজনায় ভুরি ভুরি তৃণমূল নেতা-নেত্রীর ধনসম্পদ থাকা সত্বেও তালিকায় নাম। নানা ইস্যুতে জেরবারের পর দিদির দূতরা গ্রামে যেতেই নয়া সমস্যা।

আরো পড়ুন- প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ফাঁসি দিল ইরান

লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের পর কাটমানি প্রসঙ্গে তুলেছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি থেকে পঞ্চায়েতের অনেক কর্তাই গ্রাম ছাড়া হয়েছিলেন। কিন্তু হাতে সময় থাকায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই ক্ষোভ সামলে নেয় তৃণমূল। এবারও রাজ্যের নানা জ্বলন্ত ইস্যুর সময় দিদির দূতরা জনসংযোগ করতে গ্রামে যাচ্ছেন। ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকা সত্বেও কর্মসূচি জারি রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামবাসীদের প্রতিক্রিয়া যাচাই করে নিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের সময় হলে সমস্যা বাড়ত। এই ক্ষোভ কতটা নির্বাচনে পড়বে সেটা সব থেকে বড় বিষয়। বিরোধীরা চিৎকার জুড়লেও ভোটবাক্সে কোনও প্রতিক্রিয়া না হলে লাভের লাভের তাদের কিছু হবে না বলেই পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে।

কাটমানির ইস্যুর ধাক্কা পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু সামলাননি, আগের দুবারের থেকে বেশি ভোটে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় বসেছেন। রাজনৈতিক মহল এবার দিদির দূতকে বিক্ষোভ ও কাটমানির সময়কালকে মিলিয়ে দেখছে। পঞ্চায়েত দখলে এই আগাম মানুষের মন বুঝে নেওয়াই তৃণমূল নেত্রীর বিশেষ রণকৌশল বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, ভোট ঘোষণার পর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সামলানো মুশকিল হত। পরিস্থিতি বুঝে নতুন ছক কষার সময় পেল ঘাসফুল শিবির। কাটমানির মতো এই ঝটকা সামলে নেওয়া সম্ভব কিনা সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। বিরোধীরা এই পরিস্থিতি কিভাবে কাজে লাগাবে সেটাও দেখার রয়েছে। তবে এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য-রাজনীতি পরিস্থিতি যথেষ্ট ঘোরালো হয়ে উঠেছে। শীঘ্রই ময়দানে নেমে হাল ধরতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নন্দীগ্রামের মাটিতে আর ওর ঠাঁই নেই, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে আক্রমণ জয়প্রকাশের

নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে জয়ের পর বিরোধী দলনেতার কেন্দ্রে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল। মঙ্গলবার নির্বাচনে জেতার ফলস্বরূপ ধন্যবাদ জ্ঞাপন সভার আয়োজন করে TMC। এর আগে গত বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনেই মুখ্যমন্ত্রীকে পরাস্ত করেছিলেন BJP বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আসলে সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে হাতিয়ার করেই BJP শক্তি বাড়িয়েছিল, এখন আর সেই পরিবেশ বা পরিস্থিতি নেই – ধন্যবাদ জ্ঞাপন সভার মঞ্চ থেকে এমনটাই বার্তা তৃণমূল রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের (Jaiprakash Majumder)।

সমবায় নির্বাচনের ফলকে সামনে রেখেই রাজ্যের অন্যতম হটস্পট কেন্দ্রে বিরোধী দলনেতাকে কোণঠাসা করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। এদিনের মঞ্চ থেকে সেই বার্তাই উঠে আসে। জয়প্রকাশ এদিন বলেন, “নন্দীগ্রামের (Nandigram) মাটিতে আর শুভেন্দু অধিকারীর ঠাঁই নেইনন্দীগ্রাম শুভেন্দু আক্রমণ ছায়া প্রকাশনী । ভেটুরিয়ায় সমবায়ের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের নিরঙ্কুশ জয়ের নিরিখে এবার নন্দীগ্রাম থেকেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে যোগ্য জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।”

আরো পড়ুন- অসুস্থ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা, ভর্তি করানো হল আমেদাবাদের হাসপাতালে

প্রসঙ্গত, ভেটুরিয়ায় সমবায় নির্বাচনের সকাল থেকেই দফায় দফায় অশান্তি লেগে ছিল এলাকায়। দুই দলই একে ওপরের বিরুদ্ধে বহিরাগত লোক ঢোকানোর অভিযোগ তোলে। সেই অশান্তির প্রসঙ্গ টেনেই এদিন জয়প্রকাশ বলেন, “সাম্প্রদায়িক বিভাজন এনে রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরির কৌশল নিয়েছেন শুভেন্দু। কথায় কথায় শাসানি, সন্ত্রাসের হুমকি দিয়ে চলেছেন। সাধারণ মানুষ আর ওকে ভয় পায় না। ভেটুরিয়া সমবায় ভোটে বহিরাগত দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে বোমাবাজি, গুলি চালাবার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বোমার রাজা, লোডশেডিংয়ের রাজা শুভেন্দু।”

এদিন সভায় দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পীযূষকান্তি ভূঁইয়া, সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি নন্দীগ্রামের (Nandigram) ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ১২ টি আসনের মধ্যে ১২ টিতেই জয়লাভ করে তৃণমূল। নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর বিধানসভা। সেই বিধানসভায় সমবায় নির্বাচনে খাতা খুলতে না পারায় কটাক্ষও শোনা যায় তৃণমূল নেতৃত্বদের মুখ থেকে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ক্ষমতা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা সমবায় নির্বাচনে জয় হোক অথবা BJP থেকে তৃণমূলে যোগদান হোক, তা প্রমাণিত বলেই দাবি তৃণমূল জেলা নেতৃত্বদের।

তবে স্থানীয় BJP নেতৃত্বের বক্তব্য, সমবায় নির্বাচনে তো সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে না। তাই সেটাকে নিয়েই তৃণমূলের এই উল্লাস স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেই দৃষ্টিকটু।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Elections) এই এলাকা থেকে জনসাধারণের সমর্থন বিজেপির সঙ্গে থাকবে বলে দাবি তাঁদের।

মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, একাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা

মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা ঘটল। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জন। তবে বাস দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে বাস চালকের। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুর জলঙ্গি রাজ্য সড়কে বাস এবং লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। তাতেই আঘাত লেগে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় বাস চালকের। আর আহতদের উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন- শরীরচর্চা বা ডায়েট ছাড়া ভুঁড়ি কমবে? কী ভাবে

স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে বহরমপুর জলঙ্গি রাজ্য সড়কের উপর দৈলতাবাদ থানার নমাইলে। বহরমপুর থেকে যাত্রী বোঝাই বাসটি জলঙ্গি যাচ্ছিল। তার সামনে আর একটি যাত্রীবাহী বাস ডোমকল যাচ্ছিল। দুটি বাসের রেষারেষি করতে গিয়েই বিপরীতমুখী লরির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সেখানেই বাস চালকের মৃত্যু হয়েছে। ঘন কুয়াশার মধ্যে অপরদিকে বাসটি ওভারটেক করার সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে দৌলতাবাদ থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বাসে প্রায় ৩০ জন যাত্রী ছিল। দুর্ঘটনায় ১৪ জনকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই বাসের চালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। তার মধ্যেও বাসের গতিবেগ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি ছিল। রেষারেষি করার সময় একটি গাড়ি পাশ কাটাতে গিয়েছিলেন বাস চালক। উল্টোদিক থেকে আসছিল একটি পণ্যবাহী লরি। বাসটি সজোরে গিয়ে লরিতে ধাক্কা মারে। দুমড়ে মুছড়ে যায় বাস ও লরি।

জানা গিয়েছে, বাসের সামনের অংশ কেটে বের করে আনা হয় চালককে। যাত্রীদের উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একাধিক মানুষের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাঁদেরকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি এক মহিলা–সহ পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ভয়ঙ্কর বাস দুর্ঘটনায় জলঙ্গি রাজ্য সড়কেও ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আইআইটি খড়গপুরে ফেরিওয়ালার ছেলে! পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার

বাঁকুড়াঃ বাবা চুড়ি-বালা-মালা-খেলনা গ্রামেগঞ্জে ফেরি করে বহু কষ্টে সংসার চালান। তারমধ্যে ছোট ছেলে এবার আইআইটি খড়্গপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এতদিন কষ্টেসৃষ্টে সংসার টানলেও ছোট ছেলের পড়ার খরচ চালাবেন কী ভাবে? ইদানীং সে ভাবনাতেই নাভিশ্বাস উঠছে বাবা কানাই ও মা ববিতা কমর্কারের।

আরো পড়ুন- চাকরির বদলে তরুণীকে কুপ্রস্তাব! তৃণমূলি পুরপ্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন অভিষেক

গ্রামের পথে পথে ঘুরে যেটুকু আয় করেন, তাতে কোনওমতে সংসার চলে। সেই ফেরিওয়ালার ছেলে ছোটন জেইই মেইন এবং অ্যাডভান্স পরীক্ষার বেড়া টপকে ফেলেছেন। সুযোগ পেয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের মতো নামজাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেখানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি টেক নিয়ে পড়াশোনা করবেন তিনি। ৪ বছরের কোর্সের খরচ ১২ লক্ষ টাকা।

ছেলের পড়ার খরচ সামলাবেন কী ভাবে, তা ভেবেই ঘুম ছুটেছে কানাই এবং তাঁর স্ত্রী ববিতার। দু’জনের কেউই হাইস্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। সে-ও আর্থিক অনটনের জন্য। মা-বাবার মতো একই দশা হয়েছিল বড় ছেলের। টানাটানির সংসারে তাঁকেও মাঝপথে পড়া ছাড়তে হয়েছে। তবে ছোট ছেলের উপর আশায় বুক বেঁধেছে কর্মকার পরিবার।

ছোটবেলা থেকেই বেশ মেধাবী ছোটন। পড়াশোনায় তাঁর আগ্রহ দেখে শত কষ্টেও তাতে বাধা দেননি মা-বাবা। গ্রামের স্কুল থেকে মাধ্যমিকের পর বাঁকুড়া শহরের একটি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে ভর্তি হন ছোটন। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর শুরু হয় অন্য লড়াই! আইআইটি খড়্গপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ঢোকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন ছোটন। তাতে ফলও মেলে। একে একে জেইই মেইন এবং অ্যাডভান্স পরীক্ষার মেধাতালিকায় উপরের দিকে জায়গা করে নেন।

আইআইটি খড়্গপুরে ভর্তির জন্য ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা জোগাড় হবে কী ভাবে? কাউন্সেলিংয়ের ৩৫ হাজার টাকাই বা কী ভাবে হাতে আসবে? এ বার আরও কয়েকটি বাধার মুখোমুখি কর্মকার পরিবার। তবে ছোটনের স্বপ্নপূরণের পথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বন্ধুবান্ধব, শিক্ষকরা থেকে বহু পাড়াপ্রতিবেশী। তাঁদের আর্থিক সহায়তায় আইআইটিতে কাউন্সেলিংয়ের খরচ উঠে গিয়েছে।

খড়্গপুরের ক্যাম্পাসে পৌঁছলেও ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির লক্ষাধিক টাকা জমা দিতে হবে ছোটনকে। তবে কী ভাবেই সে খরচ জুটবে? উত্তর জানা নেই ছোটনের।

ছেলের মতো পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কানাইও। যদিও তিনি জানেনই না, ঠিক কত টাকা প্রয়োজন! কানাই বলেন, ‘‘আমরা তেমন লেখাপড়া জানি না। আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে ছেলে। কিন্তু সেখানে পড়ার খরচ কেমন, তা-ই জানি না। ছোটনের মা ববিতা জানান, ‘‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয় আমাদের।’’ তাঁর আর্জি, ‘‘সরকারি সাহায্য না পেলে ছেলের পড়ার খরচ চালাতে পারব না আমরা।’’

বাঙালির বিরিয়ানিতে আলুর ঠাঁই হল কীভাবে?

বিরিয়ানি। নাম শুনলেই বাঙালির জিভে জল আসে। কলকাতার বিরিয়ানি নিয়ে দেমাকও কম নয় বাঙালির। নিজাম, আরসালান না রয়্যাল, আমিনিয়া না সিরাজ, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক না হলে কি আর বাঙালীর আড্ডা জমে? হালকা হলদেটে ঘিয়ে মাখানো লম্বা লম্বা সুগন্ধি চাল। তাতে একফালি নরম আলু, সঙ্গে মুক্তোর মত চেয়ে থাকা চকচকে সেদ্ধ ডিম, আর মোলায়েম কয়েক টুকরো মাংস। এ কম্বিনেশন কলকাতা বিরিয়ানি ছাড়া আর কোথাও নেই। সামনে গিয়ে হাঁড়ির ঢাকনা খুলতেই বিরিয়ানির সুবাসে ভরে ওঠে চারপাশ৷ যা কলকাতায় চলে আসছে দশকের পর দশক ধরে।

কিন্তু এই বিরিয়ানি এলো কোথা থেকে? এ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি মতবাদ প্রচলিত আছে। একটি হলো, তুর্কি মঙ্গল বিজয়ী তৈমুর বিন তারাগাই বারলাস ১৩৯৮ সালে বিরিয়ানিকে ভারতবর্ষের সীমানায় নিয়ে আসেন। সেসময়ে একটা বিশাল মাটির হাঁড়িতে চাল, মশলা মাখা মাংস ও ঘি একসঙ্গে দিয়ে হাঁড়ির মুখটি ভালোভাবে বন্ধ করে দেওয়া হতো। এবার গনগনে গরম গর্তে হাঁড়িটি মাটি চাপা দিয়ে রাখা হতো সবকিছু সেদ্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত। তারপরে হাঁড়িটি বের করে তৈমুরের সেনাবাহিনীকে খাওয়ানো হতো। সেই খাদ্যই এখন বিশ্বজুড়ে বিরিয়ানি নামে পরিচিত।

অন্য মত অনুযায়ী বিরিয়ানির প্রচলন আরব ব্যবসায়ীদের দ্বারাই শুরু হয়। ভারতবর্ষের কথা বলতে গেলে, বিশেষ করে মালাবারের দক্ষিণ উপকূলে তুরস্ক ও আরব ব্যবসায়ীদের বেশ আনাগোনা ছিল। তাঁদের কাছ থেকেই বিরিয়ানির উৎপত্তি হয়েছে।

সব চাইতে বেশি সমাদৃত মতটি হলো, মুঘল সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের কাহিনীটি। একবার মুমতাজ মহল মুঘল সৈন্যদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ব্যারাকে গেলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে তিনি দেখলেন সৈনিকদের স্বাস্থ্যের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। তাই মিলিটারি মেসের বাবুর্চিকে তিনি স্বয়ং নির্দেশ দিলেন চাল ও মাংস সমৃদ্ধ এমন একটা পুষ্টিকর খাবার তৈরি করতে যেটা সৈনিকদের ভগ্ন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করে দিতে পারবে। সম্রাজ্ঞী মুমতাজ মহলের আদেশে বাবুর্চি যে খাবারটি তৈরি করলেন সেটাই আজকের দিনের বিরিয়ানি নামে পরিচিত।

বিরিয়ানির প্লেটে আলু থাকবে না, তাও আবার হয় নাকি! বাংলার বাইরে গেলে অবশ্য এ বস্তুটির দেখা মেলে না। তাই বিরিয়ানি যত ভালোই হোক না কেন, আলু বিনে বাঙালির তৃপ্তিও হয় না। তা বাঙালির বিরিয়ানিতে আলু এল কোথা থেকে? জেনে নিই সেই গল্প।

ছুটির দিনের খানাপিনা হোক কিংবা গেট টুগেদার, এক প্লেট বিরিয়ানি হলে আর কোনও কথাই থাকে না। কেল্লা ফতে। ভুরভুরে গন্ধ, ঝরঝরে চাল, তুলুতুলে মাংসের এই নবাবি খানাটি, যাকে বলে বাঙালির আপনজন। আর, সেই বিরিয়ানির স্বাদ বাড়িয়ে দেয় আলু। এটি ছাড়া বাঙালির বিরিয়ানির যেন স্বাদ খোলে না। রসনাতৃপ্তি তো অনেক দূরের কথা।

সৌরভ গাঙ্গুলী অবশ্য বলেছিলেন “সারা পৃথিবীতে বিরিয়ানি খেয়েছি, তবে তাতে কলকাতাকে পাইনি।” পাবেই বা কী করে সেখানে যে আলু নেই, আর বিরিয়ানিতে কীভাবে এল আলু? সে প্রশ্ন এলে অবশ্যই মেটিয়াবুরুজের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ’র নাম আসবে।

কিন্তু মজার বিষয় হল, বাংলার বাইরে পা দিলেই দেখা যায়, বিরিয়ানির প্লেটে আলু ভ্যানিশ। এমন নয় যে, তাঁরা আলু দেন না। আসলে বিরিয়ানিতে আলু ছিলই না কোনোদিন। থাকার কথা মাংসের, সেটি থাকে বহাল তবিয়তে। বরং এই আলু যোগকে বলা যায় বিরিয়ানির বাঙালিকরণ। আর, সেই আলুর আমদানি হওয়ার পিছনেও আছে এক গল্প।

এমনিতে আজ বিরিয়ানি যতই অভিজাত খানা হোক না কেন, আসলে জিনিসটি তৈরি হয়েছিল গরিব শ্রমিকদের খাওয়ার জন্যই। কি, অবাক হচ্ছেন! আসলে অবাক করার মতোই কথা বটে। হ্যাঁ, আজকে আমরা যেরকম বিরিয়ানি খেতে অভ্যস্ত, গোড়াতে অবশ্য তেমনটি ছিল না। এটির হয়ে ওঠার কৃতিত্ব দিতেই হবে অওধের নবাব আসফ-উদ-দৌলাকে। তখন বড়া ইমামবড়া তৈরির কাজ চলছে। প্রায় হাজার কুড়ি নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছিলেন সেখানে। তাঁদের ভরপেট খাবার চাই তো! তাই এরকম একটি খাবারের পরিকল্পনা করা হল, যেখানে চাল মাংস সবজি ইত্যাদি সব একসঙ্গেই থাকবে। খাবারটি রাঁধা হবে দম-কুকিং স্টাইলে। ধীরে ধীরে যখন সেই রান্না হত, তখন খুশবুতে ভরে যেত চারিদিক। একদিন কাজ পরিদর্শনে নবাবও পেলেন সেই ঘ্রাণ। কৌতূহলী হয়ে তিনি এ ব্যাপারে তত্ত্বতালাশও করলেন। আর তারপরই বিরিয়ানির এন্ট্রি হল নবাবের বাবুর্চিখানায়।

‘কলকাতা বিরিয়ানি’র সঙ্গে ভিন রাজ্যের বিরিয়ানির ফারাক বিস্তর৷ উপরে ছড়ানো বেরেস্তা৷ লম্বা লম্বা সুগন্ধি চালের কোলে কাইয়ে মাখামাখি তুলতুলে খাসি৷ আর মোলায়েম আলুর আদর৷ সঙ্গে দেখা মেলে মুক্তোর মতো চকচকে সেদ্ধ ডিমের৷ এমনটা তো কলকাতা ছাড়া দেখা মেলা ভার! বিরিয়ানিতে হাল্কা গন্ধওয়ালা হলদেটে আলু আর ধবধবে সাদা ডিমের উপস্থিতি ছিল না প্রথম থেকে ৷ যেটা দেখা যায় ‘কলকাতার বিরিয়ানি’তে ৷ এর প্রচলনটাও কিন্তু ভারী অদ্ভুতভাবে শুরু করেছিলেন নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ৷

খাবারটি বাংলায় এল নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের হাত ধরে। ১৮৫৬ সাল। সিপাই বিদ্রোহ বা ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধের পরের ঘটনা। যুদ্ধে পরাজিত অওধের নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ তাঁর রাজত্ব হারিয়ে ঠাই নিলেন কলকাতা শহরে। লখনউ থেকে বিতাড়িত হয়ে। শুধু নগরী নয়। তাঁকে ছেড়ে কোলকাতায় চলে আসতে হয়েছিল প্রাণের চেয়ে প্রিয় অওধ। নবাবি চলে যাওয়ার মুহূর্তেও চোখে জল আসেনি। কারণ মনে করতেন, একমাত্র সঙ্গীত এবং কবিতাই প্রকৃত পুরুষের চোখে জল আনতে পারে। তিনি অওধের শেষ নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ।

আর তখন থেকেই বিরিয়ানিতে মাংসের সঙ্গে জুটল আলু। রন্ধন-সংস্কৃতি নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কেউ কেউ বলেন, নবাবি খরচে তখন কিঞ্চিৎ টান পড়েছিল। তাই শুধু মাংসের জায়গায়, অন্যান্য সবজি, মানে আলুও জায়গা করে নিয়েছিল। যদিও নবাবের বংশধররা মাসোহারার অঙ্ক উল্লেখ করে পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন, এ সিদ্ধান্ত ঠিক হতে পারে না। তাহলে, আলু ঢুকে পড়ল কীভাবে?

ইতিহাস বলছে, ১৮৫৬ সালের ৬ মে কলকাতায় পৌঁছান নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ। এর পর কলকাতাতেই জীবনের শেষ ৩০ বছর কাটিয়ে দেন তিনি। পুরনো জায়গায় ফিরে যাননি ঠিকই, তবে কলকাতার উপকন্ঠেই এক ‘মিনি লখনউ’ গড়ে তুলেছিলেন ওয়াজিদ আলি শাহ। এখানে আঠারোটি প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন তিনি। একটি চিড়িয়াখানাও তাঁর কীর্তি। ব্রিটিশ সরকার তাঁর জন্য বছর ১২ লক্ষ টাকার পেনশন বরাদ্দ করেছিল। ১৮৮৭ সালে ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যু হয় নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের। কলকাতাই তাঁর শেষ জীবনের সঙ্গী ছিল।

মেটিয়াবুরুজে রাতারাতি যে ছোট লখনউ গড়ে তুলেছিলেন ওয়াজেদ আলি, তাঁর মৃত্যুর পর ততটাই দ্রুততায় তাঁর সব স্মৃতি মুছে ফেলেছিল ব্রিটিশ সরকার। সে সময়কার নবাবি দফতরের কোনও নথিপত্র রক্ষা পায়নি বললেই চলে, নবাবের লেখা কিছু বই ছাড়া। নবাব তৈরি করেন প্রাসাদ, বাগবাগিচা, চিড়িয়াখানা। এরই সঙ্গে অওয়ধ থেকে তিনি কলকাতায় এনেছিলেন ঘুরি ওড়ানো, কবুতরবাজি৷ এখানেই শেষ নয় ৷ এই ওয়াজেদ আলির জন্যই কলকাতা বিরিয়ানির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। তাঁর রসনা তৃপ্তির জন্যই এ শহরে ‘দমপোখ্‌ত’ বা ঢিমে আঁচে রান্না শুরু হয়। অনেকে বলেন, বিরিয়ানিতে আলুর প্রচলন নাকি ওয়াজেদ আলি শাহই করেছিলেন। তবে এ বিষয়ে বিতর্কও রয়েছে। তবে বিতর্কের ধার ধারে না কলকাতার ভোজন রসিক মানুষজন। বিরিয়ানির স্বাদ-গন্ধকে অনেক আগেই এ শহরের মানুষ আপন করে নিয়েছেন। বিরিয়ানির ইতিহাস নিয়ে এখন আর তাঁরা মাথা ঘামাতে চান না।

অওয়াধি বিরিয়ানি আর কলকাতা বিরিয়ানি’র মধ্যে তফাৎ একটাই৷ আর তা হল আলু৷ ওয়াজেদ আলি শাহ যখন কলকাতায় আসেন, তখন তাঁর কাছে তেমন অর্থ ছিল না৷ তবে নবাবিয়ানাটা তো রক্তে ৷ তিনি ছিলেন, ‘খানে কা অউর খিলানে কা শওকিন’৷ খেতে এবং খাওয়াতে দারুণ পছন্দ করতেন তিনি৷ কলকাতায় আসার বেশ কিছু বছর পর বিরিয়ানিতে আলুর যোগ করেন নবাব ৷

তবে শোনা যায়, সে সময় আলুর দাম কিন্তু এত কম ছিল না! পর্তুগিজরা এ দেশে নিয়ে আসে আলু৷ এদিকে মাংসের দাম এত বেশি! বিপুল পরিমাণে মাংস কিনে বিরিয়ানি তৈরি করার ব্যয়ভারটা কিন্তু সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না কিছুতেই৷ সেই কারণে কিছুটা খরচ বাঁচাতে, এরই সঙ্গে বিরিয়ানির পরিমাণ বাড়াতে আলুর ব্যবহার শুরু হয়৷ সে সময় আলু আজকের মত এত সহজলভ্য ছিল না। সে যুগে আলু মানেই ছিল এলিট লেভেলের সবজি। কিন্তু মাংসের তুলনায় খরচ কম পড়ত। সে যাই হোক, কিছুটা খরচ বাঁচাতে এবং সেই সঙ্গে বিরিয়ানির পরিমাণ বাড়াতে আলুর ব্যবহার শুরু হয়। ওয়াজিদ আলি শাহের সেই বিরিয়ানির ধারা এখনও বয়ে নিয়ে চলছে শহর কলকাতা।

ইতিহাস বলছে, সম্রাট হুমায়ুন ছিলেন পারস্য সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। রাজপাঠ হারিয়ে সম্রাট হুমায়ুন ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তখন তাঁকে পারস্য সম্রাট লাল গালিচা বা রেড কার্পেটে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। এছাড়া ইরানের খাদ্য পরিবেশনার রীতি অনুযায়ী, রুপার পাত্রে খাবার আনা হয় লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে। যা পরে মোঘল আমলেও চালু হয়েছিল। খাদ্য পরিবেশনে রঙের এ প্রথা লখনৌয়ের নবাবরাও অনুসরণ করেছিলেন। ফলে অভিজাত্য, বনেদিয়ানা প্রকাশের অন্যতম ধারা হিসেবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে লাল কাপড়ে মোড়া খাবার। আজ বিরিয়ানি সহজলভ্য হলেও, এক সময় কিন্তু ছিল আভিজাত্যেরই প্রতীক। তাই ব্যবহৃত হয় লাল কাপড়।

ওয়াজেদ আলি শাহ’র সেই বিরিয়ানির ধারা এখনও বয়ে নিয়ে চলছেন ওয়াজেদ আলি শাহ’র প্রপৌত্রী মনজিলাত ফতিমা৷ এখনও সযত্নে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ নবাবি রেস্তোরাঁর সেই ধারা আর রান্নার প্রতি অমোঘ ভালোবাসা প্রতিটি বিরিয়ানির হাঁড়িতে ঢেলে দেন ওয়াজিদ আলি শাহ’র প্রপৌত্রী৷ প্রতিবার বিরিয়ানির হাঁড়ি চাপানোর আগে উচ্চারিত হয় – ‘বিশমিল্লাহ’৷ আল্লাহ’র নাম নিয়ে শুরু হয় রান্না৷ হাতের জাদুতে শুরু হয় বিরিয়ানি তৈরি৷ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দম-এ বিরিয়ানি তৈরি৷ দম-এ বিরিয়ানি তৈরি হওয়ার সময় নিজে তো কোনও কথা বলেনই না ৷ কাউকে কথা বলতেও দেন না মনজিলাত৷ এক্কেবারে বংশের সেই রীতি মেনে, হেঁসেলে চলে রান্না৷ ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতায় লাজবাব রূপ নেয় ‘কলকাতা বিরিয়ানি’৷ হাঁড়ির ঢাকনা খুলতেই বিরিয়ানির সুবাসে ম’ ম’ করে ওঠে চারপাশ৷

ইদানীং, বিরিয়ানির প্রতি বাঙালিদের টান যেন দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। শহরের রাস্তাঘাটের আনাচে কানাচে, অলিতে গলিতে এখন বিরিয়ানির রমরমা। দোকানের একশো মিটারের মধ্যে এসে পড়লেই নাকে বিরিয়ানির গন্ধ আর লাল কাপড়ে মোড়া বিরিয়ানির বিশাল হাঁড়ি চোখে পড়তে বাধ্য। পেটে সামান্য জায়গা খালি রয়েছে, অথচ অবলীলায় বিরিয়ানির দোকান পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন… এমন সাধ্য কার আছে!

হাতে পুরনো ১ টাকার কয়েন থাকলে আপনিও হতে পারেন ৯ কোটি টাকার মালিক

এখনকার দিনে আত্মনিভর হতে কেই না চায়। নিজে ব্যাবসা করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে সকলেরই মন চায়। ছেলে হোক বা মেয়ে সকলেরই আত্মনিভর হতে চায়। কিন্তু সবসময় তো সাধ থাকলেই সাধ্য থাকে না।

আর তাই নিজের ইচ্ছে স্বপ্ন থাকা সত্ত্বেও কখনও পিছিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আজ আপনাকে এমন একটা কথা বলবো যার ফলে আপনি আপনার স্বপ্ন বলুন বা শখ সবই পূরণ করতে পারবেন এক নিমেষে। এমনকি কোটিপতি ও হতে পারবেন আপনি।

 আরো পড়ুন- বুদ্ধিমান সন্তান পেতে গর্ভবতি মায়ের যা করনীয়!

তবে, তার জন্য আপনার কাছে থাকতে হবে ১টাকার কয়েন। কিন্তু, এ কয়েন যে সে কয়েন নয়। ১৯৮৫ সালের আগের কয়েন যদি থাকে আপনার কাছে তবে সেটা বিক্রি করে হতে পারবেন কোটিপতি। OLX এ গিয়ে নিজের নাম রেজিস্টার করে কয়েনটিকে বিক্রি করতে পারবেন।

তাহলে, যাদের পুরোনো এন্টিক কয়েন জমানোর শখ রয়েছে তাঁরা আর দেরি না করে এক্ষুনি এই সুবর্ণ সুযোগ হাতে তুলে নিন। পেয়ে যান ৯.৯৯ কোটি টাকা। আর নিমেষেই হয়ে যান কোটিপতি। ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আপনি নিলামে তুলতে পারবেন পুরোনো নোট ও কয়েন।

Rampurhat Case: রামপুরহাট-কাণ্ডে মুম্বাই থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ রমপুরহাট-কাণ্ডে (Rampurhat Case) গ্রেফতার চার। বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে চার জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। প্রত্যক্ষদর্শীদের জেরা করে এই চারজনের নাম পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাদের নাম এফএইআরেও রাখা হয়েছিল।

আরো পড়ুন- Solar Eclipse 2022: ৩০ এপ্রিল বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ, কোন রাশির উপর কেমন প্রভাব ফেলবে? দেখে নিন

সুত্রের খবর এই চার অভিযুক্তের মধ্যে দুই জন হলেন বাপ্পা শেখ, ও সাবু শেখ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁদের বাংলায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় CBI -এর ছ’ জনের বিশেষ টিম। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের।

গত ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটে। সিবিআই সূত্রের খবর, সে দিন মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সঙ্গেই গ্রামে ঘুরে ঘুরে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন ধৃত বাপ্পা, সাবুরা। ঘটনার পরই অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে চম্পট দেন। সিবিআই গোপন সূত্রে খবর পায়, অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন পালিয়ে মুম্বই পৌঁছেছেন এবং সেখানেই গা ঢাকা দিয়ে আছেন। সেই খবর মতোই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সিবিআই। পাশাপাশি চলতে থাকে মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাকও। দুপুর নাগাদ চার জনকেই গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। 

বগটুই কাণ্ডে দায়ের হওয়ার এফআইআরে ১৩ নম্বরে রয়েছে বাপ্পা শেখের নাম, ১৫ নম্বরে রয়েছে সাবু শেখের নাম। তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন আরও দুই গ্রামবাসী, যাঁরা ওই দিন তাণ্ডবের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন বলে মনে করছে সিবিআই। তবে তাঁদের নাম এখনই জানাতে চাননি তদন্তকারীরা। 

ফের বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম, বাড়ল রান্নার গ্যাসের দামও! মধ্যরাত থেকে কার্যকর নতুন দাম

প্রায় তিন মাস পর ফের বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম। বাড়ল রান্নার গ্যাসের দামও। সোমবার মধ্যরাত থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে , জানাল পেট্রল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। পেট্রলের দাম ৮৪ পয়সা বেড়ে দাঁড়াল লিটার প্রতি ১০৫.৫১ টাকা। অন্য দিকে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৮৩ পয়সা বেড়ে হচ্ছে ৯০.৬২ টাকা। সিলিন্ডার প্রতি রান্নার গ্যাসের দাম ৫০টাকা বেড়ে দাঁড়াল ৯৭৬ টাকা।

আরো পড়ুন- কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে

২৬ দিনে পড়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য রাশিয়ার উপরে পশ্চিমি দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব বাজারে তেলের দামকে ১৩৯ ডলারে ঠেলে তুলেছিল। আকাশছোঁয়া অশোধিত তেল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে ভারতকে উদ্বেগে রেখেছিল। বিশেষেজ্ঞরা ধরে নিয়েছিলেন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পরই জ্বালানির দাম বাড়ানোর পথে হাঁটবে কেন্দ্র। গত ১০ মার্চ নির্বাচনের ফল বেরনোর পর ভারতের বাজারেও পেট্রল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। অবশেষে সেই পথেই হাঁটল কেন্দ্র।

রবিবার ২০ মার্চ, শিল্পক্ষেত্রে ডিজেলের দাম এক ধাক্কায় লিটারে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পেট্রল পাম্পে ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত ছিল। রবিবার রাজধানী দিল্লিতে পেট্রল পাম্পে এক লিটার ডিজেলের দাম ৮৬ টাকা ৬৭ পয়সা। তবে শিল্পক্ষেত্রে এক লিটার ডিজেলের দাম ১১৫ টাকা। মুম্বইয়ে এই দাম হয়েছে ১২২ টাকা ৫ পয়সা।

বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়ার পরও ২০২১ সালের নভেম্বরের পর সরকার পরিচালিত সংস্থাগুলি পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়ায়নি।