করোনায় মৃত যুবক ডোমের ডাকে সাড়া দিয়ে বলল 'এই তো আমি'! - Bangla Hunt

করোনায় মৃত যুবক ডোমের ডাকে সাড়া দিয়ে বলল ‘এই তো আমি’!

By Bangla Hunt Desk - May 16, 2021

বাংলা হান্ট ডেক্সঃ সকালেই ডেথ সার্টিফিকেট লেখা হয়ে গিয়েছে। ‌ ছেলের মৃতদেহ নিতে হাসপাতালে মর্গের সামনে বসে রয়েছেন সদ্য সন্তানহারা বাবা। ‌হাসপাতালের ডোম মৃতের নাম ধরে ডাকতেই উত্তর এলো, ‘এই তো আমি।’ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কল্যাণী কোভিড হাসপাতালে।

আরো পড়ুন- জল্পনা তুঙ্গে! তৃণমূলে যোগ দিতে কলকাতায় হাজির উত্তরবঙ্গ এবং নদীয়ার ৬ BJP বিধায়ক

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগীর নাম সুব্রত কর্মকার। বয়স ২৬ বছর। বাড়ি ধানতলা থানার হিজুলির ঘোষের মোড় এলাকায়। জ্বর ও বুকে ব্যথা নিয়ে সুব্রতকে ১০ মে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১২ মে রাতে তাঁকে কল্যাণীর (Kalyani) হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন বাড়ির লোকেরা। সুব্রতর ভাই সঞ্জীব কর্মকার জানিয়েছেন, ১৪ মে সকালে ওই হাসপাতাল থেকে এক নার্স তাঁদের ফোন করে জানান, দাদা মারা গিয়েছে। শুনেই তড়িঘড়ি তখন গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু গিয়েই দাদার দেখা মেলেনি। সন্ধে নাগাদ সুব্রতর ডেথ সার্টিফিকেট বাবা সত্যরঞ্জনের হাতে তুলে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুব্রতর যে ডেথ সার্টিফিকেট দেয় তাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, সুব্রতর মৃত্যু হয়েছে। ছেলেকে শেষবারের মতো দেখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন সত্যরঞ্জনবাবু। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন ডোম নেই। সন্ধ্যেবেলায় তিনি আসবেন। তখন ছেলের মৃতদেহ দেখা যাবে। তারপর দেহের সৎকার করা হবে।

ছেলের মরা মুখটা শেষবার দেখার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে বসেছিলেন সত্যরঞ্জনবাবু। ওই দিন হাসপাতলে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। সন্ধ্যেবেলা ডোম আসেন। তিনি দুটো মৃতদেহ খুলে দেখান। তাতে সুব্রতর দেহ ছিল না। ডোম তখন ডেথ সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে যান। তিনি মৃত সুব্রত নাম ধরে ডাকতেই ওয়ার্ড থেকে উত্তর এলো, ‘এই তো আমি’।

মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল জুড়ে। শুধু জীবিত যুবকের ডেথ সার্টিফিকেট লিখেই ক্ষান্ত হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুব্রতর বাবা সত্যরঞ্জন বাবু নিজে ছেলের মৃতদেহ আনতে গিয়েছিলেন। অথচ ডেথ সার্টিফিকেটে তাঁর নামের পাশে লেখা রয়েছে Late। অর্থাৎ সত্যরঞ্জন বাবুকেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

হাসপাতালে এই চরম গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসন। রানাঘাটের মহকুমা শাসক ইতিমধ্যে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর