Sarada Scam: গায়েব কাঁথির সারদা ফাইল! সুদীপ্ত সেনকে জেরা পুলিশের, নজরে শুভেন্দু-সৌমেন্দু - Bangla Hunt

Sarada Scam: গায়েব কাঁথির সারদা ফাইল! সুদীপ্ত সেনকে জেরা পুলিশের, নজরে শুভেন্দু-সৌমেন্দু

By Bangla Hunt Desk - July 31, 2022

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। ইতিমধ্যেই কলকাতার নানা প্রান্ত থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ইডি(ED) হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee), অর্পিতা মুখোপাধ্যায়(Arpita Mukherjee)। অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্য সরকারের। এদিকে এরইমধ্যে খানিক যেন অন্তরালে চলে গিয়েছে সারাদা কাণ্ড(Sarada Scam)। কিন্তু এবার সেই সারদা কেসেই নড়েচড়ে বসল রাজ্য পুলিশ। সারদার ফাইল উধাও নিয়ে জোরদার তদন্ত শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। সারদা-কাণ্ডে সুদীপ্ত সেনকে প্রেসিডেন্সি জেলে জেরা করল কাঁথি থানার পুলিশ। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলে আসে কাঁথি থানার পুলিশের একটি দল। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁরা জেরা করেন সারদা কর্তাকে। সূত্রের খবর, সারদা কর্তার সম্প্রতি করা কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তাঁরা প্রেসিডেন্সি জেলে আসেন। কাঁথি থানার আইসি-সহ পাঁচ সদস্যের একটি পুলিশের দল সারদা কর্তাকে জেরা করে কাঁথি পুরসভায় তাঁর বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক বিষয়ে জানতে চান।

আরো পড়ুন- Murder: ‘বউকে খুন করে এসেছি, দেহ এখনও ঘরে পড়ে’, স্ত্রীকে শাবল দিয়ে খুন করে আত্মসমর্পণ যুবকের

জিজ্ঞাসাবাদের পর কাঁথি থানার আইসি বলেন, ‘‘সুদীপ্ত সেন আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। আমরা ওঁর থেকে অনেক কিছু জানতেও পেরেছি। যে সময়ের ফাইল লোপাটের কথা বলা হয়েছে, সে সময় বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত যে রকম এগোবে, আপনাদের জানাতে থাকব।’’

সম্প্রতি কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান অভিযোগ তোলেন, সারদা সংক্রান্ত ফাইল কাঁথি পুরসভা থেকে ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, সারদা কর্তা যে অভিযোগ করেছেন, সেই ঘটনার সূত্র পেতেই রবিবারের জেরা বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে সারদা কর্তাকে জেরা করে কাঁথি থানার পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন সুদীপ্ত সেনের একটি ভিডিও প্রকাশ করে তৃণমূল। এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য বাংলাহান্ট ডিজিটাল যাচাই করেনি। সেখানে সুদীপ্তকে বলতে শোনা যায়, শুভেন্দু তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতেন এবং শুভেন্দুকে তিনি টাকা দিয়েছিলেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক জন সুদীপ্তকে জিজ্ঞাসা করছেন, কাঁথিতে কার কথায় গিয়েছিলেন? তখন সুদীপ্ত শুভেন্দুর নাম করেন। প্রশ্ন করা হয়, দ্বিতীয় চিঠির বয়ানে কার নাম ছিল? ফের শুভেন্দুর নাম করেন সুদীপ্ত। তারপরে প্রশ্ন করা হয়, কত টাকা নিয়েছিল, কী বলে টাকা নিত? তখন সুদীপ্ত বলেন, ‘‘একটা জমির ব্যাপার ছিল। আরেকটা স্যাংশনড প্ল্যানের ব্যাপার ছিল। সেই প্ল্যান চাইতে গেলে ব্ল্যাকমেল করা হত।’’

ওই ঘটনায় পর থেকেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সিবিআই পদক্ষেপ চেয়ে পথে নেমেছিল তৃণমূল। এর পর ৩০ শে জুন সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের একটি মামলার শুনানির জন্য সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে নিয়ে আসা হয়। আদালতে ঢোকার সময় ফের বিস্ফোরক দাবি করেন সুদীপ্ত। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে কাঁথিতে। কাঁথিতে একটা হাইরাইজ বিল্ডিং করার জন্য উনি ৫০ লক্ষ টাকা কাঁথি পুরসভাতে জমা দিতে বলেন। এর পর আমরা ওই বিল্ডিংয়ের কাজকর্ম করি। আমরা ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে লেবার হাট কমপ্লিট করেছিলাম। এর পরও উনি আমাদের প্ল্যান দেননি।’’ সেই সংক্রান্ত ফাইল লোপাট হয়ে গিয়েছে বলেই অভিযোগ করা হয়েছে কাঁথি পুরসভার তরফে।

যে সময়ে ফাইল লোপাট করার কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। বর্তমান পুরবোর্ড তৃণমূল পরিচালিত। শুভেন্দু ও সৌমেন্দু বিরুদ্ধেই মূলত অভিযোগ করেছে তৃণমূল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সুদীপ্তকে জেরা করা হয়েছে।

কাঁথি পুরসভা থেকে ফাইল লোপাটের ঘটনায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আগেই অভিযুক্ত করেছেন অধিকারী পরিবারকে। জবাবে বিজেপির তরফে দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক তথা  ১০ কাউন্সিলর অরূপ কুমার দাস বলেন, ‘‘ফাইলগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রাখা হয়। সৌমেন্দুবাবু যখন পুরসভা ছেড়ে এসেছিলেন, তখন কোনও অভিযোগ ওঠেনি। আর এতদিন পর কেন ফাইল লোপাটের গল্প সাজানো হচ্ছে কেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন শুভেন্দুবাবু আর তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা সাজাতে হবে। হঠাৎ করে সুদীপ্ত সেন জেগে উঠলেন কেন? দেড় বছরের বেশি সময় হল সৌমেন্দুবাবু পুরসভা ছেড়ে এসেছেন। এখন পুলিশি তৎপরতা দেখে সত্যিই সন্দেহ জাগছে।’’

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর