ড্রাগন ফল চাষে লাভের মুখ দেখছেন বালুরঘাটের চাষীরা - Bangla Hunt

ড্রাগন ফল চাষে লাভের মুখ দেখছেন বালুরঘাটের চাষীরা

By Bangla Hunt Desk - June 08, 2021

বালুরঘাটঃ ড্রাগন ফলের চাষে লাভের মুখ দেখছেন বালুরঘাট এলাকার কৃষক পরিবারের সন্তান মিঠু বর্মন। সাধারন চাষবাসের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে ড্রাগন ফল চাষের উৎসাহ বাড়ছে দিন দিন, লাভের মুখ ও দেখছেন চাষীরা। পাশাপাশি ড্রাগন ফ্রুট দিশা দেখাচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের ও।

আরো পড়ুন- রাজ্য সরকারের নতুন কর্মসূচির নাম ‘খেলা হবে’, জানুন বিস্তারিত

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এখন করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। তবে এবার মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে ড্রাগন ফল।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ড্রাগন ফলে অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন সি, জিঙ্ক,ম্যাগনেসিয়াম ,অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ভাইরাল প্রপার্টি, অ্যান্টি ডায়াবেটিক প্রপার্টিস ইত্যাদি রয়েছে। তাই এই ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়।ড্রাগন চাষের নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে, পুষ্টি ও ঔষুধী গুন সমৃদ্ধ ড্রাগণ ফল, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত এ ফল দেখতে যেমন লোভনীয় খেতেও তেমন সুস্বাদু।বাজারে চাহিদাও থাকলেও যোগান কম থাকায় ফল বিক্রি করে দ্রুত লাভের মুখ দেখা।

সেদিকে লক্ষ রেখেই ঔষধি গুণে গুণান্বিত, রসালো এবং মুখরোচক এই ড্রাগন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে লাভবান হয়েছেন বালুরঘাট এলাকার জলঘর অঞ্চলের কৃষক মিঠু বর্মন।

খবর পেয়ে রবিবার দুপুরে মিঠুর ড্রাগন ফলের বাগান ঘুরে দেখা গেল পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে ঝুলছে তিন থেকে চারটি কাঁচা-আধা পাকা ড্রাগন ফল।এছাড়াও বেশ কিছু গাছে ফুল এসেছে শুধু ফল ধরার অপেক্ষা।চাষের জমিতে দাঁড়িয়ে ড্রাগন ফলের গাছের পরিচর্যা করছিলেন মিঠুন।

বাগানে দাড়িয়েই ড্রাগন ফলের গাছ ও ফল দেখতে দেখতেই কথা হয় মিঠু বর্মনের সংগে। তিনি জানান ইউ টিউব থেকে ড্রাগন চাষ লাভজনক চাষ দেখে উৎসাহিত মিঠুন গত ২০১৯ সালে বাড়ির সংলগ্ন ছোটমাপের এক বিঘা জমিতে এই ড্রাগন ফল চাষ করতে শুরু করেন তিনি।

মিঠু জানান যদিও তাদের জিবিকা কৃষিকাজ কিন্তু এর আগে তিনি অনেক কাজ করেছেন কিন্তু সেসব কাজ নিয়ে তিনি তেমন সফলতার মুখ দেখতে না পেয়ে তখন ইউ টিউবে এই চাষ লাভজনক দেখে ফের কৃষি কাজেই নিজেকে যুক্ত করেন। খোজখবর করে জেলার বুনিয়াদপুরের এক এই ড্রাগন ফল চাষের ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করি। তিনি তাকে এই চাষে উৎসাহ প্রদান করেন। তার কাছ থেকেই ড্রাগন ফলের চারা নিয়ে এসে চারা রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মাথায় তার জমির গাছে ফল আসে বলে তিনি জানান। গত ডিসেম্বর মাসেও সব কটি গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। গতবছর তিনি এই ড্রাগন গাছ গুলি থেকে প্রায় সাড়ে পাচ কুইন্টাল ফল বিক্রি করে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন। যা তার এই চাষে নামার সময়ের খরচের টাকা উঠে গিয়ে ভাল লাভের মুখ দেখেছেন। আর এবার থেকে প্রায় বিশ পচিশ বছর ধরে এই গাছের ফল বিক্রি করে প্রচুর অর্থ রোজগার করতে সক্ষম হবেন। যা ধান পাট বা সবজি চাষ থেকে সামান্য রক্ষনাবেক্ষনের খরচের বিনিময়ে কখনই পাওয়া সম্ভব হবে না। বর্তমানে ফলের বাজারে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়।তিনি বলেন, ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি দেখে অনেক কৃষক এই চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি এই ফল গাছের চারা অনান্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকা বাড়তি আর করে ফেলেছেন।

দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেওয়া ড্রাগন ফল লতানো ক্যাকটাসগাছের ফল। বর্তমানে থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। উত্তরবংগের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী।

মিঠু বর্মনের ছোটমাপের একবিঘা জমির উপর সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা ৪০০ সিমেন্টের খুটি জড়িয়ে বেয়ে উঠেছে এক হাজার ৬০০ ড্রাগন গাছ। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিদেশী এই ফল।পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি ড্রাগন ফলের চাষ আরও বাড়াচ্ছেন। বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদাও অনেক।

ড্রাগন বাগানের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে দর্শনার্থীরা। অপর দিকে, দামী ও লাভজনক এই ফলের জন্য দুর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ব্যবসায়ীরাও। জমি থেকেই ৩০০ টাকা প্রতি কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তারা

দেখুন ভিডিও-

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর