শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দল ছাড়ছেন ধরে নিয়েই ভবিষ্যৎ রণকৌশল সাজাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব - Bangla Hunt

শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দল ছাড়ছেন ধরে নিয়েই ভবিষ্যৎ রণকৌশল সাজাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব

By Bangla Hunt Desk - November 28, 2020

বাংলা হান্ট ডেস্ক ; মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দল ছাড়বেন শুভেন্দু অধিকারী,এই কথা ধরে নিয়েই বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের ভবিষ্যত রণকৌশল সাজাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করে শুভেন্দু দল ছাড়লেও তাতে ‘দলের তেমন কিছু ক্ষতি’ হবে না। তাঁদের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁদের “আসল মুখ”। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনো বিকল্প নেই। আর এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই তারা আগামী বিধানসভা ভোটের লড়াই করবে।

বস্তুত, তাদের অভিমত পূর্ব মেদিনীপুরেও তেমন দাগ কাটতে পারবে না শুভেন্দু। রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায় “শুভেন্দু অভিষেক-পিকে জুজুতে ভুগছে। ও দল ছাড়লেও কারা যাবে ওর সঙ্গে? পূর্ব মেদিনীপুরের কোন বিধায়ক যাবে? কেউই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ছেড়ে যাবেন না। ফলে শুভেন্দু দল ছেড়ে গেলেও দলের তেমন কোন ক্ষতি হবে না।”

শনিবার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল খোলাখুলি বলেন ” শুভেন্দু তৃণমূলে মমতার পরবর্তী প্রজন্মের সবচেয়ে বড় নেতা। শুভেন্দু যদি শেষ পর্যন্ত দল ছাড়েন তবে সেটা দলের পক্ষে ক্ষতি। আমি চাইবো শুভেন্দু অবশ্যই দলে থাকুক।”

শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন “শুভেন্দুকে বিজেপিতে স্বাগত। তৃণমূলের আরো অনেক নেতা আমাদের দলে আসবেন। আমরা তো এখন যোগদান মেলা শুরু করেছি।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর রাতেই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সূত্রের খবর সেই বৈঠকে শুভেন্দু প্রসঙ্গে তিনি বলেন “কেউ যদি চলে যেতে চায়, তাহলে তার কি করার আছে!” তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে চেয়েছিলেন’ বারবার বোঝাতে চেয়েছিলেন। দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়কে আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু শুভেন্দু আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন। শুধু প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ই নয়, সুব্রত বক্সি – পার্থ চট্টোপাধ্যায়রাও শুভেন্দু কে বোঝানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবে তৃণমূলের একাংশ এখনো শুভেন্দু সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রাখতে আগ্রহী। তার একটা বড় কারণ হল শুভেন্দুর ছেড়ে দেওয়া তিন দপ্তরই মুখ্যমন্ত্রী আপাতত নিজের হাতে রেখেছেন। দলের এক নেতার কথায় “আলোচনার দরজা বন্ধ হলে মুখ্যমন্ত্রী ওই দপ্তর গুলি অন্য কাউকে দিয়ে দিতে পারতেন। তাতে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী দপ্তর গুলি নিজের হাতে রেখে তিনি শুভেন্দুকে বার্তা দিতে চেয়েছেন।”

তবে দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় জানান আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে। তবে সেই আলোচনা আগামী দু-একদিনের মধ্যে হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানান তৃণমূলের এই প্রবীণ সাংসদ। শনিবার সৌগত জানান, শুভেন্দুর মা অসুস্থ। তাই তিনি শনি ও রবিবার কলকাতায় আসতে পারবেন না। ফলে আলোচনা হলেও তা হবে আগামী সপ্তাহে। তিনি মনে করছেন শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও এখনো দল ছাড়তে চান না।

তবে শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরো বেশি ‘স্পিরিটেড’ বলেই মনে করছেন দলের নেতারা। তাদের কথায় নেত্রী এবার সংগঠনে কাজে আরো বেশি সময় দেবেন বলে নিজেই ঘোষণা করেছেন। ভোটের আগে চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি তৈরি। সূত্রের খবর, শুক্রবার দলের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন দলে আরো বেশি সময় দিতে হবে। ঠিক হয়েছে আগামী ৭ই ডিসেম্বর থেকে জেলা সফর শুরু করবেন মমতা। বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠকের পর জনসভা থেকেই আগামী বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এরপরে ডিসেম্বর মাস থেকে তা ধাপে ধাপে আরও বাড়ানো হবে। রাজ্যের এক প্রবীণ মন্ত্রীর বক্তব্য, আমাদের শক্তি হল মমতার মুখ। আর সেই মুখকে সামনে রেখেই আমরা আগামী বিধানসভা ভোটের লড়াই করবো। আপাতত ঠিক হয়েছে জোর দেওয়া হবে ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচির উপর। যে কর্মসূচিতে তৃণমূল কর্মীরা প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান সংবলিত লিফলেট সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেবে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর