শিল্পে অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক পিছিয়ে বাংলা! চাঞ্চল্যকর দাবি কেন্দ্রের শিল্প সমীক্ষায় - Bangla Hunt

শিল্পে অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক পিছিয়ে বাংলা! চাঞ্চল্যকর দাবি কেন্দ্রের শিল্প সমীক্ষায়

By Bangla Hunt Desk - May 25, 2022

দেশে শিল্প গড়ার নিরিখে অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক পিছিয়ে বাংলা। এমনটাই দাবি করেছে, কেন্দ্রীয় শিল্প সমীক্ষা। ২০১৯-২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় শিল্পের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ বেশ অনেকটা পিছিয়ে। এই বার্ষিক শিল্প সমীক্ষাটি করা হয় , কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান এবং প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের তরফ থেকে।

আরো পড়ুন- আমেরিকার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় নিহত ১৮ পড়ুয়া-সহ ২১ জন

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের ‘বার্ষিক শিল্প সমীক্ষা’-র প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মোট কারখানার সংখ্যা মাত্র ৯,৬৫০টি। এই সব কারখানায় ৫ লক্ষ ৮০ হাজারের মতো কর্মী কাজ করেন।

অথচ সেখানে কারখানার সংখ্যার নিরিখে প্রথম সারিতে থাকা তামিলনাড়ুতে কারখানা ৩৮ হাজারের বেশি। ২২ লক্ষের বেশি মানুষ ওই সব কারখানায় কাজ করেন। গুজরাত, মহারাষ্ট্রেও কারখানার সংখ্যা যথাক্রমে ২৮ হাজার, ২৫ হাজারের বেশি। ১৪ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষের বেশি জন ওই রাজ্যগুলির কারখানায় কাজ করেন।

শিল্পায়নের গতিতেও যে পশ্চিমবঙ্গ চোখধাঁধানো ফল করেছে, এমন নয়। ২০১৮-১৯ সালের সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে কারখানার সংখ্যা ছিল ৯,৪২০টি। অর্থাৎ, এক বছরে রাজ্যে মোটে ২৩০টি কারখানা বেড়েছে। কর্মী সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ২৮ হাজার। নতুন লগ্নির পরিমাণও খুব বেশি বাড়েনি। মাত্র ১৮ হাজার কোটি টাকা। সেই তুলনায় তামিলনাড়ু, গুজরাত, কর্নাটকের মতো রাজ্যে কোথাও সাতশোর বেশি, কোথাও প্রায় হাজার দেড়েক কারখানা যোগ হয়েছে। তা-ও এমন সময়ে, যখন সারা দেশে অর্থনীতিতে বৃদ্ধির গতি তেমন জোরালো ছিল না।

রাজ্য সরকারের শিল্প দফতরের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, তৃতীয় বার সরকার গড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপসহীন ভাবে শিল্পায়নের পথে ঝাঁপানোর বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও লগ্নির গন্তব্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি বড় বাধা। নতুন যে সব কারখানা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পপতিরাই তার সিংহভাগ ক্ষেত্রে লগ্নি করছেন। অন্য রাজ্য থেকে এসে পশ্চিমবঙ্গে কারখানা তৈরির হার এখনও কম। গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্নাটকের ক্ষেত্রে সেই রাজ্যের পাশাপাশি অন্য রাজ্যের শিল্পপতিরাও সেখানে বিনিয়োগ করছেন।

এক বছরে মাত্র ২৩০টি কারখানা বৃদ্ধির পিছনে ওই কর্তার ব্যাখ্যা, কোভিডের আগের বছর ২০১৯-২০-তে এমনিতেই অর্থনীতির শ্লথ গতি চলছিল। ফলে সেই বছর নতুন কারখানা কম হওয়াই স্বাভাবিক।

আরো পড়ুন- ঠিকানা বদল মহারাজের! ৪০ কোটি টাকা দিয়ে বিলাসবহুল বাড়ি বানালেন সৌরভ

বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণ ও আইন-শৃঙ্খলার সমস্যার কথা ভেবে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে ভিন্‌ রাজ্যের শিল্পপতিদের একাংশ এখনও এ রাজ্যে লগ্নির বিষয়ে সংশয়ী। বণিকসভা ভারত চেম্বারের সভাপতি নন্দগোপাল খেতানের বক্তব্য, ১৯৬৯ সালে দেশে সব থেকে বেশি নথিবদ্ধ শিল্প সংস্থা ছিল পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু তার পরে বাম জমানার সাড়ে তিন দশকে শিল্পের নিরিখে রাজ্য অনেক পিছিয়ে গিয়েছে। বর্তমান সরকার আবার চেষ্টা শুরু করেছে। ভাবমূর্তি ফেরানোটাই আসল চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘‘গত দশ বছরে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে কাজ হয়েছে, তার সুফল মিলছে। করোনার সময়েও পশ্চিমবঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধি হয়েছে। যে ছ’টি রাজ্যের জিডিপি ১০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি, তার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। শুধু কারখানার সংখ্যা দিয়ে মাপলে চলবে না। সরকারি সমীক্ষা অনুযায়ীই গুজরাত ও পশ্চিমবঙ্গে কর্মহীন মানুষের হার সব থেকে কম। সেটাও দেখতে হবে।’’

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর