ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে আত্মঘাতী স্ত্রী, বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু স্বামীরও - Bangla Hunt

ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে আত্মঘাতী স্ত্রী, বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু স্বামীরও

By Bangla Hunt Desk - October 16, 2020

বালুরঘাট, ১৫ অক্টোবর— চরম আর্থিক অনটনে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদের জেরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হলো স্ত্রী। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামীরও। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের ২/১ বেলবাড়ি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম গৌরী রাজবংশী এবং নৃত্য রাজবংশী। ঘটনায় আহত হয়েছে তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান কৃষ্ণ রাজবংশী। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। পুলিশ মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত নেমেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘ কয়েক মাসের টানা লকডাউনে কাজ হারিয়ে চরম আর্থিক অনটনে পড়েন পেশার রিকশাচালক নিত্য রাজবংশী। রেশনের চাল আটা পেলেও তিন জনের পরিবারের অন্যান্য খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো তাকে। রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো তাদের। যার কারণে নৃত্যকে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তার স্ত্রী গৌরী রাজবংশী। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছুদিন পর কাজে যেতে চেয়েছিলেন নৃত্য রাজবংশী। যা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল।

বৃহস্পতিবার রাতেও ওই ঘটনায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। সকলে শুয়ে পড়লে ঘরের মধ্যে নিজের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন গৌরী রাজবংশী। ঘুমের ঘোরে বিষয়টি টের পেয়ে স্ত্রীকে বাঁচাতে যান নৃত্য। যদিও ঘটনাস্থলেই তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হয়ে পড়েন নিত্য রাজবংশী। আহত হয় তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান কৃষ্ণ রাজবংশীও। ওই পরিবারের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা তৈরি করে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে গঙ্গারামপুর হাসপাতাল এবং পরে বালু,রঘাট হাসপাতাল ভর্তি করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় নৃত্য রাজবংশীও। হাসপাতালে চিকিৎসারপর তাদের কন্যা সন্তানকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

নৃত্য রাজবংশীর বৃদ্ধা মা দিপালী রাজবংশী জানিয়েছেন, অর্থ রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারে অশান্তি চলছিল। যার কারণে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হয় তাদের বৌমা। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে তার নাতনি।

প্রতিবেশী সাধনা সরকার, আনন্দ রাজবংশীরা জানিয়েছেন, জেলাজুড়ে এমন হাজারো পরিবার রয়েছে যাদের কাজ হারিয়ে যাওয়ায় চরম অসহায় তার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে। জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের উচিত আর্থিক সাহায্য নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাছাড়া এমন ঘটনা আমাদের পিছু ছাড়বেনা।

গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, দুঃখজনক একটি ঘটনা সামনে এসেছে। পুলিশ মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। তাদের তরফে ওই পরিবারকে যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর