সাধারণত কোন মানুষের জীবনের প্রতি অনিহা সৃষ্টি হলে বা দীর্ঘদিন ধরে কোন সমস্যায় জড় জড়িত থাকলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। জীবনের সমস্ত মোহ মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যা করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে এটা বলা ভুল হবে যে জীবজন্তুদের মধ্যে আত্মহত্যার কোন চিহ্ন নেই। ডিপ্রেশন যেমন মানুষের হয় সেরকম জীবজন্তুদের ক্ষেত্রেও হয়। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করা ঠিক প্রমাণ করেছেন তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হল সাধারণ মানুষ এই তথ্যটিকে খুব একটা মানতে চান না। যারা মনে করেন পশু এবং পাখিদের আবার কিসের ডিপ্রেশন ও মন খারাপ তাদের জন্য জলজ্যান্ত উদাহরণ হল ডগস সুইসাইড ব্রিজ।
এই ব্রিজটি হলো এমন একটা ব্রিজ যেখান দিয়ে গত ৭০ বছর ধরে আত্মহত্যা করেছে শত শত কুকুর।
এই ব্রিজটির আসল নাম ছিল ওভারটাউন। স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটনের মিল্টন নামের গ্রামে অবস্থিত আছে ব্রিজটি। উনিশ শতকে এই ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে গত ৭০ বছর ধরে এত কুকুর এখান দিয়ে আত্মহত্যা করেছে যে ব্রিজটি তার আসল নাম হারিয়েছে। বর্তমানে লোকোমুখি এই ব্রিজটি এখন ডগস সুইসাইড ব্রিজ নামেই পরিচিত।
এই ব্রিজটির পরিকাঠামো অনেক বছরের পুরনো। গথিত শৈল দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল এটিকে। ৫০ ফিট উঁচু এই ব্রিজের নিচে রয়েছে পাথুরে গিরিখাত। অর্থাৎ আজকের দিনে দেখতে গেলে একটা রহস্যময়ী স্থাপত্য হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ব্রিজ।
যেহেতু শত শত কুকুর এই ব্রিজ থেকে আত্মহত্যা করেছে তাই এই ব্রিজের বিষয়ে জেমস ম্যাকমোহন নামের লেখক উল্লেখ করেছেন যে,’ ১৯৫০ দশক থেকে শুরু হয়েছিল ব্রিজ থেকে কুকুরের আত্মহত্যার প্রবণতা। এই ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০ টি কুকুরের এবং আহত হয়েছে ৬০০টি কুকুর।
পরবর্তীতে এই ব্রিজটির ঘটনা গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরেছিল। কৌতুহল তৈরি হয়েছিল বহু মানুষের মধ্যে। অনেক সাংবাদিক এবং লেখক লেখিকারা ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন ব্রিজটিতে। শুরু হয়েছিল নানান লেখালেখি। তবে ২০১০ সালে একজন প্রাণী আচরণবিদ ডেভিড স্যান্ডস ব্রিজটিকে কেন্দ্র করে নানান পর্যবেক্ষণ শুরু করেছিলেন। কারণ তিনি মনে করতেন এই ব্রিজের মধ্যে কোন রকম রহস্য নেই বরং কৌতুকের কারণেই কুকুর এরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি মনে করতেন যে ব্রিজের নিচে থাকা পাথরে গিরিখাতে অনেক ইঁদুর ও বিভিন্ন প্রাণী রয়েছে তাদের ঘ্রাণ আকৃষ্ট করতো কুকুরদের। যার কারণে ব্রিজ থেকে লাফ দিতে বাধ্য হত তারা।
পরবর্তীতে অবশ্য প্রাণী আচরণ যে গবেষণা শেষ করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমি মনে করি ওভার টাউন ব্রিজে কুকুরদের আত্মহত্যা করার বিষয়টা ছিল শুধুমাত্র এই কৌতুহল।”
তবে ১৯৯৪ সালে ঘটে যায় একটা বিস্ময়কর ঘটনা। ডগস সুইসাইড ব্রিজ থেকে নিজের সন্তানকে ফেলে দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন কেভিন ময় নামের একজন ব্যক্তি। যদিও ওই ব্যক্তি ছিলেন কিছুটা মানসিক দিক থেকে বিকারগ্রস্ত। সুইসাইড করার সময় সে প্রথমে তার শিশুকে ব্রিজ থেকে নিচে ফেলে দেয় এবং পরে নিজে ঝাপ দেয়। যদিও তখন ওই ব্যক্তির স্ত্রী তাকে ধরে ফেলায় মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে গিয়েছিল কেভিন। তবে দুর্ভাগ্যবশত শিশুটি জখম হওয়ার কারণে চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে হাসপাতালেই প্রাণ হারিয়েছিল। এইভাবে একের পর এক মৃত্যু প্রথমে কুকুর এবং তারপরে এক মানুষের মৃত্যুর কারণে ব্রিজটি ডগস সুইসাইড ব্রিজ থেকে তার নাম পরিবর্তন হয়েছিল ব্রিজ অফ ডেথ অর্থাৎ মৃত্যুর সেতু। এই সকল ঘটনার পর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা ভয় পেতে শুরু করেছিলেন ব্রিজটিকে। সময় সাথে সাথে তারা ওই এলাকাতে থাকতেও ভয় পেতেন। পাশাপাশি ব্রিজকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানান গালগল্প। যদিও একাধিক গল্পের মধ্যে কয়েকটা গল্প বেশ খ্যাতিও অর্জন করেছিল।
তবে বিজ্ঞানীদের সব তথ্য অর্থাৎ কুকুরদের সুইসাইড শুধুমাত্র কৌতুহল এবং অন্যান্য পশুর দ্বারা আকৃষ্ট এইসব ব্যাখ্যা ছিল খুবই অর্থবহ। কিন্তু কোন তথ্যই পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি। তবে কেন কুকুরগুলো এই ব্রিজ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করত সেই রহস্য আজও রহস্য রয়ে গিয়েছে। সমাজ ও বিজ্ঞানের উন্নতি ঘটলেও এই রহস্যের উন্মোচন করা এখনো সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের কাছে।
ভাঙন পদ্ম শিবিরে, মালদায় তৃণমূলে যোগদান শতাধিক কর্মী সমর্থকের
গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক নাবালিকার
Dilip Ghosh: আজ বিয়ের পিড়িতে দিলীপ ঘোষ! কিভাবে ফুটল বিয়ের ফুল?
‘Bangladesh Should Be Broken Apart,’ Says Tripura’s ‘King’ in Response to Yunus’ Comments
পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খানের বলিউড প্রত্যাবর্তন ঘিরে উত্তাল মহারাষ্ট্র!
Taslima Nasrin: ‘Islam is not my religion…’—A Definitive Statement on Eid
Heatwave Alert: West Bengal, 16 Other States Brace for Extended Heatwave Days from April to June
Former Pakistani Prime Minister Imran Khan Nominated for the Nobel Peace Prize
কল্যাণীতে দুঃসাহসিক ছিনতাই! কাঁচরাপাড়ার ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা লুঠ
Durga Puja 2024: অভিনব উদ্যোগ! মহালয়ার দিন অঙ্কন প্রতিযোগিতা করল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাব