কখনো ঘুষ নেবেননা, শিখিয়ে ছিলেন মা-ই - Bangla Hunt

কখনো ঘুষ নেবেননা, শিখিয়ে ছিলেন মা-ই

By Bangla Hunt Desk - January 01, 2023

শততম জন্মদিনে যখন মায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলাম তখন উনি বলেছিলেন, ‘বুদ্ধি দিয়ে কাজ করো আর জীবনযাপন করো শুদ্ধভাবে।’ মা হীরাবেনের মৃত্যুর পর তাঁর এই মহান উপদেশই টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শুক্রবার শতায়ু মায়ের মৃত্যু-সংবাদ পাওয়া মাত্রই কাকভোরে আমেদাবাদ পৌঁছে যান মোদি। সেখান থেকে তিনি যান গান্ধীনগরের রায়সান গ্রামে ভাই পঙ্কজ মোদির বাড়িতে। ওখানেই রাখা ছিল মায়ের মরদেহ। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি হাঁটু মুড়ে প্রণাম করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্ত্যেষ্টির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় ভাইদের সঙ্গে মায়ের দেহ কাঁধে তুলে নেন তিনি। তাঁর পাশে ও পিছনে তখন আত্মীয়স্বজনদের ঢল। হীরাবেনের দেহ তোলা হয় শববাহী গাড়িতে। সেখানেও প্রধানমন্ত্রীকে উঠতে দেখা যায়। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ গান্ধীনগর শহরের ৩০ নম্বর সেক্টরের এক শ্মশানে হীরাবেনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। উপস্থিত ছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি, শঙ্করসিং বাঘেলা, বিধানসভার স্পিকার শঙ্কর চৌধুরী, ধনকুবের ব্যবসায়ী গৌতম আদানি, ধর্মগুরু স্বামী সচ্চিদানন্দ প্রমুখ।

মা যে তাঁর জীবনে কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা বোঝাতে এদিন মোদি একটি ব্লগ লেখেন। সেখানে মায়ের শিক্ষা, তাঁর ব্যক্তিত্ব ও আত্মবিশ্বাস গড়তে হীরাবেনের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। মোদির মতে, ‘গরিব কল্যাণে’র অনুপ্রেরণা তিনি মায়ের থেকেই পেয়েছেন। তাঁর প্রতি হীরাবেনের অগাধ আস্থা ছিল। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘স্প্যানিশ ফ্লু’র জেরে খুব ছোটবেলাতেই মাকে হারান হীরাবেন। ১৯২২ সালের ১৮ জুন গুজরাতের মেহেসানার ভিসনগরে হীরাবেনের জন্ম। বিয়ে হয় দামোদরদাস মুলচাঁদ মোদির সঙ্গে। দামোদরদাস ছিলেন একজন চা বিক্রেতা।

আরো পড়ুন- দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী চোরাস্রোত বইছে, রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হলে আপত্তি নেই! নীতীশ

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভাদনগরে যে বাড়িতে তাঁর পরিবার থাকত সেটি খুব ছোট ছিল। বাড়িতে ছিল না কোনও শৌচালয়। বৃষ্টির সময় ছাদ থেকে জল পড়ত। হীরাবেন গরিব ও দুঃস্থদের কষ্ট দেখতে পারতেন না। মোদি লিখেছেন, গরিব মানুষকে তিনি খাদ্য, বস্ত্র দান করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর মা ভাইবোনদের মানুষ করতে দিনমজুর ও গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। হীরাবেনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মোদি জানিয়েছেন, আমার মায়ের মাধ্যমে দেশের সমস্ত মায়ের তপস্যা, ত্যাগ ও অবদান দেখেছেন। তাঁর মতে, ‘আমার মা অত্যন্ত সহজ, সরল, আবার অনন্যও। আর পাঁচজন মায়ের মতোই। এই যে মায়ের সম্পর্কে লিখছি, আমি নিশ্চিত যে আপনারা অনেকেই আপনাদের মায়ের স্মৃতির সঙ্গে মিল পাবেন। পড়তে গিয়ে হয়তো নিজের মায়ের ছবিও মনে আসবে।’ প্রথমবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মায়ের আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলেন মোদি। স্মৃতির পাতা উল্টে তিনি বলেন, সেদিন মা বলেছিলেন, আমি জানি না কেন তুমি সরকারে। কিন্তু, কখনওই ঘুষ নেবে না।
প্রধানমন্ত্রীর মায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রনেতারা। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মা হীরাবেনের ১০০ বছরের সংগ্রামের জীবন ভারতীয় আদর্শের প্রতীক…। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লিখেছেন, ‘মা-ই হলেন প্রথম বন্ধু ও শিক্ষক। তাঁকে হারানো সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা।’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের টুইট, ‘মায়ের শূন্যতা পূরণ অসম্ভব।’ শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের খবর।’ শোক জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর