'অগ্নিবীর' নিয়ে বিতর্ক, জেনে নিন আমেরিকা, ইজরায়েল ও চিনে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কি নিয়ম রয়েছে? - Bangla Hunt

‘অগ্নিবীর’ নিয়ে বিতর্ক, জেনে নিন আমেরিকা, ইজরায়েল ও চিনে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কি নিয়ম রয়েছে?

By Bangla Hunt Desk - June 17, 2022

দেশের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীতে সৈন্য নিয়োগের কথা বলেছে কেন্দ্র। মূলত চার বছরের স্বল্পমেয়াদী চুক্তির ভিত্তিতে হবে এই নিয়োগ৷ একটি বড় পরিবর্তনের মাধ্যমে জাতির ভবিষ্যত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য তরুণ সৈন্যদের তৈরির প্রচেষ্টার জন্যই এই প্রকল্পের কথা বলেছে কেন্দ্র৷

আরো পড়ুন- দেশে শুরু হল প্রথম বেসরকারি ট্রেন পরিষেবা, প্রথম যাত্রায় ১১০০ যাত্রী

কী এই অগ্নিপথ প্রকল্প?

এই প্রকল্পের আওতায় চার বছরের জন্য ‘অগ্নিবীর’-দের নিয়োগ করা হবে। তাঁদের বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২১ বছর। এই প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক বছর ৪০ থেকে ৪৫ হাজার যুবককে স্বল্প সময়ের জন্য নিয়োগ করা হবে। তাঁদের ছয় মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মহিলারাও প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন৷ অগ্নিবীরদের অবশ্যই সশস্ত্র বাহিনীতে তালিকাভুক্তির জন্য নির্ধারিত মেডিকেল যোগ্যতা শর্তগুলি পূরণ করতে হবে যা সংশ্লিষ্ট বিভাগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অগ্নিপথের অধীনে নিয়োগ করা সৈন্যদের চার বছর পরে চাকরি থেকে মুক্তি দেওয়া হবে, যদিও নতুন সিস্টেমে তাদের প্রায় ২৫ শতাংশকে স্ক্রীনিংয়ের মাধ্যমে আবার চাকরিতে পুনর্বহাল করার বিধান থাকছে৷

সেনবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আমেরিকা, ইসরায়েলের ও চিনের মতো দেশে কী বিধান রয়েছে?

চিনে, ২ বছর সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক। সেনবাহিনীতে প্রতিবছর ৪.৫ লাখ নিয়োগ করে বেজিং। আমেরিকা ৪ বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করে। তবে চারবছর পরেও যে কোনও সময় ডাকা হতে পারে এই সৈনিকদের৷ আমেরিকায় ১৪ লক্ষ সৈনিক রয়েছে। আবার, ফ্রান্স ১ থেকে ১.৫ বছরের কনট্রাক্ট পুননবীকরনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করে। যেখানে একটানা ১৯ বছর চাকরি করলে পেনশানের সুবিধা পাওয়া যায়৷ ইজরায়েলেও চিনের মতোই সাধার নাগরিকদের কিছু সময়ের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক৷ সাধারণত ছেলেদের ৩২ মাস। মেয়েদের ২৪ মাস সেনাবাহিনীতে থাকতে হয় ইসরায়েলের নাগরিকদের।

অগ্নিপথ নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ! একাধিক ট্রেনে আগুন

‘অগ্নিপথ’ বাতিলের দাবিতে দেশের একাধিক এলাকা তুমুল বিক্ষোভ। যুব সম্প্রদায়ের ক্ষোভ, এভাবে তাঁদের সুযোগ নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদে বিহারের জায়গায় জায়গায় রেল, ট্রেন অবরোধ করে তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। রেল, বাস, জাতীয় সড়ক অবরোধের জন্য বিপর্যস্ত জনজীবন।

অবিলম্বে এক প্রকল্প বাতিলের দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। অগ্নিপথের বাতিলের দাবিতে জয়পুরেও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ হয়। এছাড়াও হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশেও পড়েছে বিক্ষোভের আঁচ। হরিয়ানায় পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। উত্তরপ্রদেশের মীরাটেও বিক্ষোভের জেরে তুলকালাম হয়েছে। একাধিক জায়গায় রেল অবরোধ হয়েছে। বিহারে আরা, কইমুর, গোপালগঞ্জ, বক্সারের বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করা হয়। অধিকাংশ জায়গায় ক্ষোভে আঁচ মূলত এসে পড়েছে রেলের উপরেই। বিহারের ভাবুয়াতে কইমুরের ভবুয়া রোড স্টেশনে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভকারীদের কথায়, এক্ষেত্রে পেনশন দেওয়ার বিষয় থাকবে না। চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যত অসুরক্ষিত। অবিলম্বে ‘অগ্নিপথ’ প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীতে স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে। না হলে এই বিক্ষোভ জারি রাখবে তারা।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর