৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম শক্তিপীঠ নলাটেশ্বরী, আজও এখানে কালি রুপে পুজিত হন দেবী - Bangla Hunt

৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম শক্তিপীঠ নলাটেশ্বরী, আজও এখানে কালি রুপে পুজিত হন দেবী

By Bangla Hunt Desk - November 03, 2021

৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম শক্তিপীঠ নলাটেশ্বরী। কথিত আছে এখানে সতীর গলার নলি পড়েছিল। নলাটেশ্বরী থেকেই শহরের নাম নলহাটি।

শোনা যায়, ব্রাহ্মণী নদী তীরে ললাট পাহাড়ের নিচে সতীর কন্ঠনালী পড়েছিল। সেই কণ্ঠনালীর ওপর বেদি তৈরি করে প্রতিষ্ঠিত হন দেবী নলাটেশ্বরী।

রামায়নের সঙ্গেও যোগ রয়েছে এই স্থানের। কথিত আছে, এই টিলাতে সীতার চুল আঁচড়ানোর দাগও রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে কড়ি খেলার গর্তও।

ঝাড়খণ্ড সীমান্তের শহর নলহাটি। একটা সময়ে ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল এই এলাকা, চারিদিক ছিল পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। একসময়ে এটি নলাটেশ্বরী পাহাড় নামেও প্রচলিত ছিল। রাজমহল পর্বতের পশ্চিমদিকে দেবীর মন্দিরটি অবস্থিত। পরে ধীরে ধীরে জনবসতি বাড়ার ফলে এই মন্দির এবং দেবীর মাহাত্ম্য সকলই সাধারণ মানুষের কানে পৌঁছেছে। এখন বীরভূমে এসে ভারতের সাধারণ মানুষ তারা মা দর্শণের পাশাপাশি দেবী নলাটেশ্বরী মন্দিরও দর্শন করেন।

তবে এই নলাটেশ্বরী মন্দিরের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে কিন্তু নানারকম মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। বলা হয় ৯০০ সনের আষাঢ় মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে পাইকপাড়া গ্রামের রামশরন শর্মা নামে জৈনিক ব্যবসায়ীকে মা কালী স্বপ্ন দিয়ে বলেছিলেন যে ওই স্থানে দেবীর নলি পড়েছে, সেখানে তিনি নলাটেশ্বরী দেবী রূপে অবস্থান করছেন। সাধক যেন সতীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন। সাধকও সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাই করেছিলেন। বলা হয় এই সাধকের বংশধররাই নাকি বংশ পরম্পরায় এই দেবীর পুজো করে আসছেন।

নলাটেশ্বরী মন্দিরে বছরে দু’ বার বিশেষ পুজো হয়। দুর্গাপুজোর চারদিন মাকে দুর্গা রপে পুজো করা হয়। আর কালীপুজোর দিন মা নলাটেশ্বরীকে কালী রূপে পুজো করা হয়। মন্দিরের পুরোহিত নন্দলাল বন্দ্যোপাধায় বলেন, ‘দুর্গা পুজোর সময় শুধুমাত্র মায়ের নবপত্রিকা আনা হয় না। তাছাড়া পুজোর চারদিন মায়ের সমস্ত আচার মেনে পুজো করা হয়। কালী পুজোয় সকালে মঙ্গল আরতি করা হয়। তারপর শুরু হয় নিত্যপুজো। রাতে ১০৮ প্রদীপ জ্বালিয়ে মায়ের বিশেষ আরতি করা হয়। নিশি অমাবস্যায় মায়ের মন্দিরে হোম যজ্ঞ করা হয়। মাটির প্রদীপ, মোমবাতি আর এলইডি লাইটে ঝলমল করে মন্দির চত্বর। বহু মানুষ মনস্কামনা পুরণ করতে মায়ের সামনে পাঁঠা বলি দেন।’

তবে কালীপুজোর দিন স্থানীয় মানুষের সমাগম হয় বেশি। বাইরে থেকে বহু মানুষ আসেন। কিন্তু সংখ্যায় কম। শুধুমাত্র যাঁরা মানসিক রাখেন, তাঁরাই কালীপুজোর রাতে আসেন নলহাটিতে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর