ভারতীয় পরম্পরায় ‘চানক্য নীতি’ আসলে একটি অতি প্রাচীন নৈতিক বিধান। ‘চাণক্য নীতি’ হিসেবে পরিচিত নীতিমালায় যা রয়েছে তার বেশিরভাগটাই দেশকাল নিরপেক্ষ বলে মনে করা হয়। ইতিহাসে যে ক’জন প্রাচীন পণ্ডিত অমর হয়ে আছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘চাণক্য’। মৌর্য যুগের মৌর্য সাম্রাজ্যের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ছিলেন চাণক্য। এই উপমহাদেশ তো বটেই সারা বিশ্ব তাকে চেনে অন্যতম প্রাচীন এবং বাস্তববাদী পন্ডিত বলে। মহাকবি কালিদাসের যুগেরও অনেক আগে আবির্ভূত হয় এই পন্ডিত। তিনি তার সময় থেকেই ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন। লিখে গেছেন অমর সব তত্ত্বগাঁথা।
‘চাণক্য নীতি’ অনেক সময়েই মিত্র নির্বাচন নিয়ে উপদেশ রেখেছে। সেই সঙ্গে সাবধানও করেছে শত্রু সম্পর্কে। আবার কিছু সম্পর্কের ক্ষেত্রে আগাম চেতাবনি জানায় এই নৈতিক বিধি। এই সূত্র ধরেই তিন প্রকারের মানুষের উপকার করা থেকে বিরত থাকতে বলে ‘চাণক্য নীতি’। আসুন দেখেনি তারা কারা।
১. অসংবৃত চরিত্রের নারীদের থেকে শত হস্ত দূরে থাকতে বলে চাণক্য নীতি। এদের উপকার করলে সর্বনাশ আসন্ন। কেউ যদি দয়াপরবশ হয়ে এদের সাহায্য করেন, তা হলে এরা প্রতিদানে এমন কিছু করে বসতে পারে যাতে উপকারী মানুষটিরই সম্মান বিপন্ন হতে পারে। এই ধরনের নারীর বিপদের অন্ত তাকে না। একবার তার উপকার করলে সে আরো বিপদকে এনে হাজির করতে পারে। সর্বোপরি, এরা কারোর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে না। উপকারীর প্রতিও যে এরা বিশ্বস্ত থাকবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ‘চাণক্য নীতি’।
২. সর্বদা বিমর্ষ থাকে, এমন ব্যক্তির দুঃখ দূর করার চেষ্টা করা কখনই উচিত নয়। ‘চাণক্য নীতি’-র মতে তাদের বিষণ্নতা কোনওদিনই দূর হবে না। বরং উপকারী ব্যক্তির সময়-মানসিকতা-শ্রম বিনষ্ট হবে। এমন লোকের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করলে এদের বিষাদ অন্যের মধ্যে প্রবেশ করবে। এদেরকেও বাদ রাখতে হবে উপকারের তালিকা থেকে।
৩. কোনও নির্বোধকে জ্ঞানদানের মতো বৃথাকর্ম আর নেই, একথা স্পষ্ট জানায় ‘চাণক্য নীতি’। কারণ, নির্বোধের পক্ষে জ্ঞানের উপলব্ধি কোনও দিনই সম্ভব নয়। বরং তারা তর্ক করে উপকারীর সময়ে ও মানসিকতা নষ্ট করবে। এদের থেকেও দূরে থাকার কথা বলে ‘চাণক্য নীতি’।