নিয়োগ মামলার তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও জমি বাজেয়াপ্ত করল ইডি

নিয়োগ মামলার তদন্তে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও জমি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, কলকাতার পাটুলি, দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিষ্ণুপুর, বীরভূমের বোলপুর সহ বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে তাঁর জমি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সম্পত্তি তারা বাজেয়াপ্ত করেছে, তা সরাসরি পার্থের নামে নয়। তবে এগুলি পার্থের বলেই তদন্তে জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। এর মধ্যে শুধুমাত্র বোলপুরেই অন্তত পাঁচটি সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। জমি ছাড়াও একাধিক সংস্থার কাছ থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। যা পার্থের বলে মনে করা হচ্ছে। নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে এই জমি, সম্পত্তি এবং টাকার যোগ আছে বলেই ধারণা ইডির।

নিয়োগ মামলার তদন্তের শুরুর দিকেই পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে বীরভূমের বোলপুরে একটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছিল ইডি। সেই বাড়ির নাম ‘অপা’। সূত্রের খবর, কোনও সম্পত্তিই সরাসরি নিজের নামে রাখেননি পার্থ। সব নথিতেই তাঁর কোনও না কোনও ঘনিষ্ঠের নাম রয়েছে।

নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে ২০২২ সালে পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সেই থেকে তিনি বন্দি। সে সময়ে পার্থের ‘বান্ধবী’ হিসাবে পরিচিত অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে ২২ কোটির বেশি এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২৭ কোটির বেশি টাকা উদ্ধার হয়। দুই ফ্ল্যাট থেকে বিদেশি মুদ্রা এবং সোনাও উদ্ধার করে ইডি। এই সমস্ত সম্পত্তি এবং সোনাদানা, ফ্ল্যাট-বাড়ি মিলিয়ে কম করে ৬০ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। যা আদতে অর্পিতার নামে থাকা পার্থের সম্পত্তি বলেই দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার।

সম্প্রতি পাটুলি, বোলপুর এবং বিষ্ণুপুর থেকে যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল, তাতে ৬০ কোটির অঙ্ক আরও বেড়ে গেল। এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় মোট ১৩৫ কোটি টাকার নগদ এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। রাজ্যে প্রাথমিক এবং নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র মামলায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে মোট ৩৬৫.৬০ কোটির সম্পত্তি।

রাজ্যের ৪ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষনা তৃণমূলের

আগামী ১০ জুলাই রাজ্যের ৪ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন।তার আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল। শুক্রবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X হ্যান্ডলে প্রার্থীর নাম জানানো হয়েছে। মানিকতলায় টিকিট পেলেন সুপ্তি পাণ্ডে। রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী, রানাঘাট দক্ষিণে মুকুটমণি অধিকারী।বাগদা কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর।

আরো পড়ুন- চন্দবাবুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কেনো এলেন না নীতিশ? খোঁচা বিরোধীদের, নীতিশকে ঘিরে জল্পনা

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে রায়গঞ্জ এবং রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন কৃষ্ণ এবং মুকুটমণি। পরে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণকে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে এবং মুকুটমণিকে রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী করে রাজ্যের শাসকদল। দু’জনেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন। ফলে এই দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। যদিও লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারেননি দু’জনেই। তবে লোকসভা ভোটে জিততে না পারলেও দেখা যাচ্ছে দলবদলু দুই নেতার উপরেই বিধানসভা উপনির্বাচনে ভরসা রাখছে তৃণমূল। তাই ছেড়ে দেওয়া আসনে ফের প্রার্থী হচ্ছেন কৃষ্ণ এবং মুকুটমণি।

গত বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। পরে তিনিও দল বদল করে তৃণমূলে আসেন। লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে বনগাঁ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু বিজেপির শান্তনু ঠাকুরের কাছে হেরে যান তিনি। বিশ্বজিৎ বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ায় বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। মতুয়া অধ্যুষিত এই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে ঠাকুরবাড়ির কন্যা তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনুর জ্যেঠতুতো বোন মধুপর্ণাকেই বেছে নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলে গুঞ্জন ছিল যে, বাগদা কেন্দ্রে ফের বিশ্বজিৎকেই প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল। প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর বিশ্বজিৎ এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমিই দিদিকে বলেছিলাম আমায় প্রার্থী না করতে। কারণ, আমি জেলা সভাপতি। আমার দায়িত্ব অনেক বড়। আমায় সিটটা জেতাতে হবে।” কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনুর বিরুদ্ধে তাঁকে এবং তাঁর মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে অনশনে বসে সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে আসেন মধুপর্ণা।

গত বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতার মানিকতলা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা, অধুনা প্রয়াত সাধন পাণ্ডে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাধন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যান। কিন্তু তার পর দীর্ঘ দিন মানিকতলা বিধায়কহীন থাকলেও সেখানে উপনির্বাচন হয়নি। কারণ, গত বিধানসভায় এই কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে কলকাতা হাই কোর্টে ‘ইলেকশন পিটিশন’ দাখিল করেছিলেন। সম্প্রতি সেই আইনি জটিলতা কেটে যায়। গত মঙ্গলবার নবান্নে মানিকতলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রার্থী হিসাবে প্রয়াত মন্ত্রী সাধনের স্ত্রী সুপ্তির নামেই যে সিলমোহর পড়তে চলেছে, তা বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত ১০ জুন নির্বাচন কমিশন এই চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছে। চার কেন্দ্রেই নির্বাচন হবে আগামী ১০ জুলাই। ভোটগণনা ১৩ জুলাই। কমিশন জানিয়েছে, উপনির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ জুন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ জুন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দেশের আরও ছ’টি রাজ্যের ন’টি কেন্দ্রে আগামী ১০ জুলাই উপনির্বাচন হবে। ভোট হবে বিহার, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাবের একটি করে কেন্দ্রে। হিমাচল প্রদেশের তিনটি এবং উত্তরাখণ্ডের দু’টি কেন্দ্রেই এই দিনক্ষণ অনুযায়ী উপনির্বাচন হবে।

রেশন দুর্নীতি: ঋতুপর্ণা ছাড়াও আতশ কাঁচের তলায় আরও ৫০ জন, খবর ইডি সূত্রে

রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় আগামী ১৯ জুন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে তলব করেছেন তদন্তকারী। কিন্তু ঋতুপর্ণা ছাড়াও দুর্নীতির টাকা গিয়েছে আরও প্রায় ৫০ জনের কাছে, এমনই অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটর। তাঁদের কাছে ঘুরপথে রেশন ‘দুর্নীতি’র টাকা যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে ওই সন্দেহভাজনদের ব্যাঙ্কের কাগজপত্র-সহ অন্যান্য নথি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মিললে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে খবর।

আরো পড়ুন- চন্দবাবুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কেনো এলেন না নীতিশ? খোঁচা বিরোধীদের, নীতিশকে ঘিরে জল্পনা

এর আগে গত ৫ জুন রেশন দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছিল ঋতুপর্ণাকে। কিন্তু ওই দিন তিনি হাজিরা দেননি। সূত্র মারফত জানা যায়, বিদেশে থাকার কারণে ইডি দফতরে যেতে পারেননি ঋতুপর্ণা। এ কথা তিনি ইডি আধিকারিকদের ইমেল করে জানিয়ে দেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা যায়, তাঁকে পরে আবার ইডি দফতরে যেতে বলা হয়েছে। রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্তের সঙ্গে ঋতুপর্ণার আর্থিক লেনদেনের তথ্য তদন্তকারীরা হাতে পেয়েছেন বলে দাবি করেন এক ইডি আধিকারিক। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিষয়ে সবিস্তারে কিছু জানায়নি ইডি। ওই সূত্র মারফত আরও জানা যায়, প্রায় কোটির অঙ্কে আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে জানতেই ঋতুপর্ণাকে তলব করা হয়েছে।

ঋতুপর্ণা দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, রেশন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান-সহ শাসকদলের কয়েক জন নেতা ও তাঁদের ঘনিষ্ঠকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে ইডি। রেশন দুর্নীতির তদন্তেই সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে গিয়ে গত ৫ জানুয়ারি আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডির আধিকারিকেরা।

উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস! রাশ ধরুক আরএসএস, জোর চর্চা দলের অন্দরে

উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস, দলীয় সংগঠনের উপর আর ভরসা নেই । বরং, বাগান শ্রমিকদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে চা বলয়ের রাশ এখন থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) হাতে থাকুক— এমনই চাইছেন খোদ বিজেপি নেতাদের একাংশও। কিন্তু চাইলেও সেই কাজ তত সহজ নয় বলেও মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের ওই নেতাদের অনেকেই।

এবার লোকসভা ভোটে চা শ্রমিকদের মন জয়ে বিজেপিও চেষ্টার কোনও কসুর করেনি। এদিকে চা বলয়ের অন্যতম আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে এবারও জিতেছে বিজেপি। তবে দুটি কেন্দ্রেই জয়ের ব্যবধান কমেছে। আর সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের মালবাজার আর আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের নাগরাকাটা এই দুটি জায়গায় রয়েছে একাধিক চা বাগান। আর এখানকার ভোট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেন চা শ্রমিকরা। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে বিজেপির থেকে। আর আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের অপর চা বাগান অধ্য়ুষিত এলাকা মাদারিহাট ও কালচিনিতে তৃণমূলের থেকে বিজেপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে যতটা ব্যবধান তৈরি করতে পেরেছিল ততটা নয়। এটাই বিজেপির কাছে চিন্তার বড় কারণ।

কারণ চা বলয়ে সংগঠন যদি ধস নামে তাহলে বিরাট সমস্যায় পড়তে পারে বিজেপি। আর ইতিহাস বলছে চা শ্রমিকরা একবার পাশ থেকে সরে গেলে তাদের ফের সেই পতাকার নীচে ফেরানো বেশ কষ্টকর। সেক্ষেত্রে বিজেপি শেষ পর্যন্ত এই কাজ কতটা করতে পারবে সেটাই দেখার।

আরো পড়ুন- একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!

চা সুন্দরী প্রকল্প, চা শ্রমিকদের রেশন, চা সুন্দরী এক্সটেনশন সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের জেরে চা বলয়ে খুব দ্রুত সংগঠন করতে পেরেছে তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপিও ধাপে ধাপে নানা বঞ্চনাকে সামনে রেখে সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এবারের ফল দেখে বোঝা যাচ্ছে ধস নামছে বিজেপির ভোটে। সেক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে এখন ভরসা বলতে আরএসএস। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। কিন্তু প্রকাশ্যে এনিয়ে বিজেপি নেতারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

যদিও সেই বিজেপি নেতাদের একাংশই জানাচ্ছেন, বিষয়টি তত সহজ নয়। কারণ, চা বলয়ের রাজনীতির ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলীয় পতাকাও বড় ‘ফ্যাক্টর’। যে পতাকাকে সামনে রেখে নির্বাচনে কোনও দল লড়াই করে। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “চা বলয়ের দলের ভোট কেন কমল, সে বিষয়ে দলে অবশ্যই পর্যালোচনা করা হবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের মাথায় রয়েছেন জন বার্লা। তিনি এবার ভোটে কিছুটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সেক্ষেত্রে তাঁর সংগঠন এবার কতটা মাঠে নেমেছিল সেটাও দেখার।

একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!

ভোটের রেজাল্ট বেরিয়েছে, কিন্তু প্রত্যাশার ধারে কাছে পৌঁছাতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। পরিস্থিতিতে যে এতটা খারাপ হবে তাও বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। তার মধ্যেই এবার বিজেপির রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, এখন বিজেপির সাংসদ ২৪০। ইন্ডিয়ার সাংসদ সংখ্য়া ২৩৭। তিনজন এলে বিজেপি হয়ে যাবে….। আর ইন্ডিয়া হয়ে যাবে ২৪০।

সাকেত লিখেছেন, তিনজন বিজেপি সাংসদ বাংলার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এবার একটা শীঘ্রই ভালো চমক আসছে। মোদীর অস্থায়ী কাঠাবো বেশি দিন টিকবে না।

তবে কোন তিনজন বিজেপি এমপি যোগাযোগ রাখছেন তা তিনি লেখেননি। তবে এসবের মধ্য়েই বিজেপির অন্দরে টেনশন ক্রমশ বাড়ছে। কারণ ভোটে জিতে যাওয়ার পরে বিজেপির বিধায়কদের মধ্য়ে কয়েকজন অতীতে তৃণমূলে গিয়েছে এমন অনেক নজির রয়েছে। এবার যদি এমপিও চলে যায় তাহলে তো আরও ফাঁকা হয়ে যাবে বিজেপি।

আরো পড়ুন- জামাইষষ্ঠীতে জামাই আসতে পারছেনা, ফোনেই পাঠান শুভেচ্ছাবার্তা

এদিকে ভোটে পরাজিত হওয়ার পরে খোদ দিলীপ ঘোষই মুখ খুলেছিলেন। দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘বর্ষীয়ান এবং প্রতিষ্ঠিত নেতাদের কি পরাজিত করার জন্যই পাঠানো হয়েছিল? রাজনৈতিক দলগুলি সাধারণত যে আসনগুলি আগে হেরেছিল সেগুলি জিততে পরিকল্পনা করে। কিন্তু এখানে মনে হচ্ছে আমরা যে আসনগুলি আগে জিতেছিলাম সেগুলি হারানোর একটি ইচ্ছাকৃত পরিকল্পনা ছিল।’ ক্ষুব্ধ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেছিলেন, ২৫ জন নেতার মূল কমিটিতে তাঁর মতো ‘যোদ্ধাদের’ জন্য কোনও স্থান নেই। তাঁর মতে ‘কমিটি অযোগ্য লোকদের দিয়ে ভরা ছিল। আমাদের এমন নেতাদের প্রয়োজন যারা লড়াই করতে পারে এবং যারা কৌশল নির্ধারণ করতে পারে।’

আবার বিজেপির কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃতা রায় বলেছেন, দলের পশ্চিমবঙ্গ ইউনিটে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি দলের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্ব দেখেছি। যদি এটি চলতে থাকে, তা আমাদের ভবিষ্যতে ক্ষতি করবে। আমি শুনেছি যে প্রচারের জন্য অনেক টাকা এসেছে, কিন্তু আমি সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলাম। আমি অপমানিত বোধ করেছি।’

‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন’, তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের বার্তা অভিষেকের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ২৪ ঘণ্টা আগে শেষ হয়ে গিয়েছে শেষ দফার ভোট। ৪ তারিখ ভোটগননা। ভোটটগণনার আগে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে বিশেষ নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে দলের জেলা সভাপতি ও প্রার্থী সঙ্গে বৈঠকে অভিষেকের পরামর্শ, বিজেপি নানাভাবে প্রভাবিত করবে, হইহল্লা করে তৃণমূলের (TMC)কাউন্টিং এজেন্টদের মনোবল ভেঙে আগে থেকেই জয়ের ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু সেসবে কান দিলে চলবে না। ‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন।’ পাশাপাশি তিনি দলের নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করে এও বলেন, ষষ্ঠ দফার ভোটেই ২৩ আসন পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। কাজেই আসন সংখ্যা নিয়ে ভাবার দরকার নেই।

১ জুন লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabbha Election 2024) ভোটগ্রহণ পর্ব শেষের পরই বেরিয়েছে এক্সিট পোল। তাতে ইঙ্গিত, বাংলায় বিজেপির (BJP) আসনবৃদ্ধি হবে। তৃণমূলের শক্তিক্ষয় হবে। আর তার পরই দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে রবিবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকবেন’। ছেড়ে আসবেন না। বিজেপি এজেন্টদের প্রভাবিত করতে পারে, ভয় দেখাতে পারে, হুমকি দিতে পারে। বাইরে এসে ‘জয়ী হয়ে গিয়েছি’ বলে চিৎকারও করতে পারে। নন্দীগ্রামের মতো আপনারা গণনা শেষ না করে বেরিয়ে আসবেন না। শেষ পর্যন্ত থাকবেন।”

তৃণমূল সূত্রে খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক কেউই বুথফেরত সমীক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনুযায়ী বেশির ভাগ লোকসভা আসনে জোড়া ফুল ফুটবে বলে মনে করছেন তাঁরা। কিন্তু যে কোনও ভোটের গণনা পর্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সাংগঠনিক ভাবে দল কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে, সেই বিষয়ে জানতেই বৈঠকে বসছেন ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ। ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে ডায়মন্ড হারবারে একঝাঁক বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছে বিজেপি। পদ্মশিবিরের এমন দাবি নিয়ে বৈঠকে অভিষেক কোনও মন্তব্য করেন কি না, সে দিকেই তাকিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, বুথফেরত সমীক্ষাকে ‘ফেক’ বা ভুয়ো বলে অভিহিত করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তৃণমূল কর্মীদের শক্ত থাকার বার্তা দিয়ে ‘টিভি নাইন’ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূলনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের রাজ্য নিয়ে যেটা দেখাচ্ছে, তাকে আমি বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না। এটা একেবারে ভেগ, একেবারে ফেক।’’ তিনি আরও বলেন ‘‘সংবাদমাধ্যম কী করে বলে দিচ্ছে, ওই আসনে ও জিতবে, অমুক আসনে কে জিতবে… কত টাকার বিনিময়ে? আমি এই সংবাদমাধ্যমের হিসাব মানি না। কর্মীদের বলব শক্ত থাকতে। গণনা ভাল করে করতে। যা দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম, তার দ্বিগুণ পাব। প্রত্যেকটা আসন আমরা জিতব।’’ তবে রাজ্যে তৃণমূল ঠিক কতগুলি আসন পাবে, সেই সংখ্যা সংক্রান্ত বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাননি মমতা। সেই প্রশ্নে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘আমি কোনও নম্বরে যাব না। কিন্তু একটা কথা আপনাদের বলতে পারি, আমরা যে ভাবে মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করেছি, লোকের চোখ দেখেছি, তাতে আমার কখনও মনে হয়নি যে, মানুষ আমাদের ভোট দেবেন না।’’

ভোট দিতে বাধা, পুকুরে ইভিএম ফেললেন গ্রামবাসীরা! উত্তপ্ত কুলতলি

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, রেগে গিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে ইভিএম নিয়ে পুকুরেই ফেলে দিলেন গ্রামবাসীরা। উত্তপ্ত কুলতলি । এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তবে মাঝপথেই পুলিশকে আটকানো হয়। রাস্তার মাঝে গাছের গুঁড়ি ফেলে দিয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

লোকসভা ভোটগ্রহণের শেষপর্বে ফিরল অশান্তির ‘চেনা’ ছবি। ভোট শুরুর আগে থেকেই দফায়-দফায় উত্তেজনার ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। এর মধ্য়ে অন্যতম জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুলতলির মেরিগঞ্জ ২ নম্বর অঞ্চলের ৪০ ও ৪১ নম্বর বুথের ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদেই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পুকুরে ফেলে দেয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশ এলে তাদের গাড়ির সামনে গাছের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ চলতে থাকে।

বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারীর অভিযোগ, বিরোধী এজেন্টদের বসতে দিচ্ছিল না তৃণমূল। এদিকে নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি।

বিজেপির দাবি, সকাল থেকেই বিজেপি কর্মীদের একাংশের দাবি তাদের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। এমন মারধর করা হয়েছে তিনি আর উঠতে পারছেন না। পুলিশ এসে কিছুই করতে পারছে না। এদিকে গ্রামবাসীদেরও অভিযোগ, তাদের ভোট দিতে বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এদিকে এই সব উত্তেজনার মাঝে আহত হন এক বিজেপি কর্মী। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর মা জানান, তাঁর ছেলে এবারে বিজেপির বুথ এজেন্ট হয়েছেন। তবে ছেলে বুথে বসতে গেলে তাঁকে ধরে মারধর করা হয়।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান কমিশনের আধিকারিকরা। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে কমিশন। এদিকে সকাল ৭টা থেকে ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মেরিগঞ্জ ২ নম্বর অঞ্চলের ৪০ ও ৪১ নম্বর বুথে ভোটগ্রহণ ব্যাহত হয়। পরে বিকল্প ইভিএম এনে সেখানে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। উল্লেখ্য, এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে রাজ্যের বহু জায়গায়। সেখানে ব্যালট বাক্স জলে ফেলা হয়েছিল। এই নিয়ে বিজেপি প্রার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘৪১ ও ৪১ নম্বর বুথে এজেন্টদের বসতে না দেওয়ার গ্রামের মহিলারা জমায়েত করেন। তাঁদের দাবি এজেন্টদের বসতে দিতে হবে। কিন্তু শাসকদল বাধা দেয়। এজেন্টদের বসতে দিতে চাইছে না। সেই জন্য সমস্ত মহিলারা একজোট হয়ে ইভিএম জলে ফেলে দেন।’

সারা বছর আমের ফলন! দিশা দেখাচ্ছেন মালদার রাজীব রাজবংশী

মালদা- এবার মালদায় মিলবে সারা বছর আম,নতুন প্রজাতির আমের চাষ করে নজর কারছে মালদার যুবক।বারোমাসি নতুন প্রজাতির কাটিমন আম চাষ করে মালদায় দিশা দেখাচ্ছেন মালদার রাজীব রাজবংশী। বারোমাসি আম বলতে যা বোঝাই, কাটিমন তার আলাদা। বারোমাসি আমে দেখা গেছে বছরে দু’‌বার আম পাওয়া যায়। কিন্তু কাটিমনের ক্ষেত্রে বছরের প্রায় সবদিনই গাছে আম পাওয়া যায়। একদিনও গাছ ফাঁকা থাকার ব্যাপার নেই। অর্থাৎ আম বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছের বাকি জায়গায় মুকুল আসতে শুরু করে। এই মকুল থেকে দানা হয়ে আম বড় হতে শুরু করলে আবার মুকুল। বছরের সবসময় এভাবেই চলতে থাকে। আবার স্বাদে যেমন মিষ্টি তেমনই সুগন্ধিযুক্ত। অসময়ের এমন প্রজাতির আম চাষ করে নজির তৈরি করেছেন রাজীব রাজবংশী। নিজের ১ বিঘা জমিতে ১০০-‌র ওপর গাছ রোপন করেছেন। এখন ফল পেতে শুরু করেছেন তিনি। রাজীবের বাড়ি গাজোল ব্লকের পান্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলবাড়ি গ্রামে। ২০২০ সাল নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের এক চ্যানেলে তিনি কাটিমন আমের চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হন। তখন মালদায় সেই অর্থে চাষাবাদ শুরুই হয় নি। অবশেষে তিনি নদীয়ার ট্র‌্যাডিশনাল নার্সারি থেকে ১০৫টি চারা কিনে নিয়ে আসেন। দু’‌বছরের মাথায় যদিও মুকুল আসতে শুরু করে। মুকুল ধরার পর প্রায় সাড়ে ৩ মাস সময় লাগে আম পরিণত হতে। আমের আকারও বেশ। খানিকটা বড় আকৃতির ৩টি আমেই ১ কেজির মতো। আবার ছোট আকার হলে ৪-‌৫টিতে প্রায় ১ কেজি। গাছের পরিচর্যা বলতে বছরে দু’‌বার গোবর সার ও পান্না পরিমাণ মতো দিতে হয়। বৃষ্টির সময় ছত্রাকনাশক এবং রোগ অনুযায়ী কীটনাশক স্প্রে করলেই চলে। নতুন পাতা আসার সময় কীটনাশক বেশি দরকার হয়।

Sandeshkhali Case: সন্দেশখালিতে বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাসকে থানায় তলব পুলিশের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালিতে ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই এবার থানায় তলব করা হল সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পিকে। তাঁর বিরুদ্ধে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন সন্দেখালির এক মহিলা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এবার পিয়ালিকে থানায় তলব করেছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। (Sandeshkhali Case)

সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় মহিলাদের একাংশ এই বিষয়ে আঙুল তুলেছিলেন শাহজাহান শেখ এবং তাঁর সঙ্গীদের দিকে। সম্প্রতি দাবি উঠেছে, সন্দেশখালিতে ধর্ষণের ‘মিথ্যে’ অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই বিষয়ে এক মহিলার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। বাংলাহান্ট ডিজিটাল সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। সেই ভিডিয়োয় মহিলার দাবি, তাঁকেও ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল থানায়। না জানিয়ে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল। এক সপ্তাহ পর তিনি সবটা জানতে পারেন। মহিলার আরও দাবি, পরে যখন তিনি মামলা তুলতে চান, ‘হুমকি’ দেওয়া হয়। ভিডিয়োয় অভিযোগকারিণীর দাবি, এ সবের নেপথ্যে ছিলেন পিয়ালি। সেই পিয়ালিকে এবার থানা তলব করল পুলিশ।

সন্দেশখালি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ৩২ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়োর সত্যতা বাংলাহান্ট ডিজিটাল যাচাই করেনি। সেই ভিডিয়োয় স্থানীয় বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, সন্দেশখালিতে টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ‘মিথ্যে’ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। বসিরহাট আসনে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রও দু’হাজার টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ‘মিথ্যে’ অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন ওই পদ্মনেতা। বিজেপি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ভিডিয়োকে ‘সাজানো ও বিকৃত’ বলেছে। গঙ্গাধরও কণ্ঠস্বর বিকৃতির অভিযোগ তুলেছেন। এই আবহে আরও এক মহিলা দাবি করেছেন, তিনিও ‘ধর্ষণের শিকার’ বলে থানায় ‘মিথ্যে’ অভিযোগ জানানো হয়েছিল। মহিলার বক্তব্য, তাঁর অভিযোগ ছিল, তাঁকে রান্নার কাজের টাকা দেওয়া হয়নি। সেই অভিযোগকেই ধর্ষণের অভিযোগের রূপ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে না জানিয়ে।

মহিলার দাবি, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার শাশুড়িকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল পিয়ালি দাস। দিল্লি থেকে মহিলা কমিশন এসেছে বলে থানায় নিয়ে গিয়েছিল। থানায় ঢুকিয়ে দিয়ে গেট ফেলে দিয়েছিল। উনি আর বেরোতে পারেননি। অভিযোগ কী জানতে চেয়েছিল। উনি জানিয়েছিলেন যে, রান্নার কাজের টাকা পাইনি। এর পর সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিল। এর পর ওখান থেকে চলে যেতে বলেছিল। আমি বাড়ি ফিরে পিয়ালিকে ফোন করে জানতে চেয়েছি। পিয়ালি আমায় বলেছে, ‘ও কোনও ব্যাপার নয়। অভিযোগ ছিল, তাই সই করিয়েছি। তোমরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।’ এক সপ্তাহ পরে জানতে পারলাম, তিন-চার জনকে দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করানো হয়েছে। অভিযোগ ছিল, রাতে আমাদের তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।

ওই ভিডিয়োয় যে বিজেপি নেতার বয়ান ঘিরে এত শোরগোল, সেই গঙ্গাধর দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে টাকা নিয়ে ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ পুলিশে দায়ের করানোর বিষয়টি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘মস্তিষ্কপ্রসূত’! শুভেন্দু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দাবি করেছেন, ভিডিয়োটি সম্পূর্ণ ‘ভুয়ো’ এবং ‘সাজানো’। এর নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। এই পরিস্থিতিতে আরও এক ‘নির্যাতিতা’ ‘ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যে’ ছিল দাবি করেছেন। যাঁর বিরুদ্ধে তাঁর আঙুল, সেই পিয়ালিকে থানায় তলব করল পুলিশ।

সন্দেশখালিতে টাকার বিনিময়ে নারী নির্যাতনের ভুঁয়ো অভিযোগ, মামলায় ফাঁসলেন শুভেন্দু-রেখা

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালিতে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সাজানো! টাকার বিনবময়ে নারী নির্যাতনের ভুয়ো অভিযোগ সাজানো হয়েছে। এবার এই মর্মে পুলিশের কাছে মামলার রুজু করলেন বেরমজুরের বাসিন্দা এক তৃণমূল কর্মী। গঙ্গাধর কয়াল, বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র, ব্লক ১ সভাপতি শান্তি দলুই, পীযুষ, শুভঙ্কর গিরি, বীণা মাইতিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীরও।এফআইআর-এ শুভেন্দু অধিকারীর নাম যুক্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে পুলিস।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালদের স্বীকার করতে দেখা গিয়েছে যে কীভাবে টাকার বিনিময়ে নারী নির্যাতনের ভুয়ো অভিযোগ করানো হয়েছে। ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা পেতেই তা করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ও ১৭১ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। ইতিমধ্যেই গঙ্গাধর কয়ালকে তলব করে নোটিসও পাঠানো হয়েছে বলে খবর পুলিস সূত্রে। ওদিকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, গঙ্গাধর কয়াল এবং শান্তি দলুইয়ের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানালেন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ।

ভাইরাল ভিডিয়ো ফুটেজ সহ একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। যার মূল দাবি, শুভেন্দু অধিকারী সহ ৩ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করুক নির্বাচন কমিশন। এপ্রসঙ্গে সাগরিকা ঘোষ বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে ‘রেপ কেস’ করা হয়েছে, সেই ‘রেপ কেসগুলো’ একদম মিথ্যে। বিজেপির সন্দেশখালির ব্লক-২ এর মণ্ডল সভাপতি স্পষ্ট করে বলছেন যে, মহিলাদের টাকা দিয়ে, ট্রেনিং দিয়ে মহিলাদের দিয়ে মিথ্যে কথা বলানো হয়েছে। এক মহিলা নিজেই আজকে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, উনি ভুল বিবৃতিতে সই করেছেন। ওনার যে অভিযোগটা ছিল সেটা ভুল। সেটা মিথ্যে। গঙ্গাধর কয়াল ভিডিয়োতে বলছেন যে, মহিলাদের ৩০০০ টাকা দিয়ে মিথ্যে করে ‘রেপ কেস’ দাখিল করানো হয়েছে।”

সাগরিকা ঘোষ দাবি করেন, “শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা হোক আর যাদের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।” তোপ দাগেন, “ভারতীয় জনতা পার্টি সন্দেশখালির মহিলাদের অসম্মানিত করেছেন। ওনাদের সাথে অন্যায় করেছেন।” একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন পশ্চিমবঙ্গে আসবেন, তখন ওনারা যেন ক্ষমা চান। ওনাদের ক্ষমা চাইতে হবে। যেভাবে ওনারা মিথ্যে প্রচার করেছেন আর যেভাবে মহিলাদের অসম্মানিত করেছেন তার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।”

বাবা CPM-এর হোলটাইমার! ভাতায় চলে সংসার, মাধ্যমিকে তৃতীয় উদয়ন হতে চায় ডাক্তার

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বাবা সিপিআইএমের হোলটাইমার। ভাতায় চলে সংসার, সেই উদয়ন প্রসাদ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছে। ৭০০-র মধ্যে পেয়েছে ৬৯১ নম্বর। আর তারপর বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্রকে সিপিআইএমের তরফে অভিনন্দন জানানো হল। সিপিআইএমের তরফে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় তৃতীয় হয়েছে উদয়ন প্রসাদ। উদয়নের ডাক নাম লেনিন। বালুরঘাটে বাড়ি। অভিনন্দন উদয়নকে।

উদয়নের বাবা, উমেশ প্রসাদ বালুরঘাট পার্টি অফিসের সিপিআই (এম)-র সর্বক্ষণের কর্মী। মা বিন্দু বারুই প্রসাদ গৃহবধু। জানা যায়, ডাক্তার হতে চান উদয়ন। উদয়ন বলেন ‘এতটা সাফল্য পাবো আশা করিনি। তবে এই ফলাফল ভালো লাগছে। দিনে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা পড়তাম আমি। আর টেস্ট পরীক্ষার পরে পড়াশোনাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলাম’।

উদয়ন জানান, অনেক কষ্টে সংসার চলে আমাদের। বাবা পার্টির হোলটাইমার। পার্টি যা ভাতা দেয় তাতেই চলে সংসার।

আর ছেলে যে সেই কষ্টের দাম দিয়েছে, তাতে গর্বে বুকে ফুলে যাচ্ছে বাবা উমেশ। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম যে ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে। ছোট থেকেই ও ভালো রেজাল্ট করে আসে। (মাধ্যমিকের তৃতীয় হয়েছে) জানার পরে খুবই ভালো লাগছে।’

দেশে ১৫টি আসনও পাবেনা তৃণমূল! কংগ্রেস কত পাবে? তেহট্টের সভা থেকে বললেন মোদী

বাংলাহান্ট ডেক্সঃ লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক দিনে তিনটি সভা রয়েছে তাঁর। বর্ধমানে জনসভা শেষ করে কৃষ্ণনগরে পৌঁছন মোদী। তেহট্টের শ্যামনগর ফুটবল মাঠে তাঁর সভা হয়। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী তথা রাজ পরিবারের সদস্য অমৃতা রায়, রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার এবং বহরমপুরের বিজেপি প্রার্থী নির্মাল সাহার সমর্থনে সভা করেছেন তিনি।

তেহট্টের সভা থেকে মোদী বললেন, সারা দেশে ১৫টা আসনও পাবে না তৃণমূল। সরকার গড়বে কী ভাবে? কংগ্রেস তো এ বার ‘হাফসেঞ্চুরি’ও করতে পারবে না। ৫০-এরও কম আসন পাবে। এরা সরকার কী ভাবে গড়বে? সরকার একমাত্র গড়তে পারে বিজেপি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘গরিবের রেশনকেও ছাড়েনি তৃণমূল। সর্বত্র দুর্নীতি। তৃণমূল এবং ‘ইন্ডি’ জোটের উপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার তেহট্টেই সভা করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ছিলেন বিদায়ী সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তেহট্টের সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে মমতা আক্রমণ করেছেন মোদীকে।