মাত্র চোদ্দ দিন, আর তারমধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ! নেপথ্যে জেনারেল মানেকশা’র রাফায়েল। অবাক হচ্ছেন? একাত্তরে ভারতের কাছে আবার ঐ বিমান কোথায়! একটু ভুল হলো, ইনি স্থলবাহিনীর রাফায়েল….. ইস্টার্ন কমান্ডের চীফ অফ স্টাফ(অপারেশন)।
পূর্ব রণাঙ্গনে যুদ্ধ শুরু হতেই এই সেনাধ্যক্ষ সেখানে
‘কনটেন অ্যান্ড বাইপাস’ পদ্ধতিতে আক্রমণ শানালেন। অন্যদিকে পাকিস্তানিদের যুদ্ধ পরিকল্পনা ছিল সীমান্তের অ্যাপ্রোচগুলোতে শক্তিশালী ‘ফোর্টস’ বা ‘স্ট্রং পয়েন্ট’ পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আর ঢাকা শহরকে ঘিরে ছিল পাঁচ স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই পদ্ধতিতে সীমান্তের শক্তিশালী সেক্টর গুলোর পতন হলে সৈন্যেরা ঢাকার উদ্দেশে পশ্চাদপসরণ করে নির্দিষ্ট অবস্থানে এসে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। ঢাকাকে কেন্দ্রে রেখে দীর্ঘ দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
আর ভারতীয় সেনা কর্তা রাফায়েল কি করলেন ?
পাকবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের ঢাকায় আসার সব রাস্তা বন্ধ করে দিলেন। তার ওপরে সীমান্তের পাকিস্তানি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অবস্থানগুলোকে অবরুদ্ধ রেখে মূল বাহিনীকে ক্ষিপ্র গতিতে ঢাকা যেতে আদেশ দিলেন। মুক্তিবাহিনীর সাহায্য নিয়ে দুটো কাজই সফল ভাবে করতে পেরেছিল ভারতীয় সেনা। একমাসের লড়াই শেষ হয়ে যায় মাত্র তেরো দিনে!
১৫ই ডিসেম্বর সকাল থেকেই ভারতীয় বাহিনীর মাউন্টেন ব্রিগেড দুভাগে ভাগ হয়ে ব্রিগেডিয়ার ক্লেয়ার ও ব্রিগেডিয়ার সান্টা সিংহের নেতৃত্বে দ্রুত এগিয়ে আসছিল জামালপুর ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ধরে উত্তর দিক থেকে ঢাকার দিকে। সাভার এলাকার কাছাকাছি এদের সাথে যোগ দিলেন ১০১ কমিউনিকেশন কোরের জিওসি মেজর জেনারেল নাগরা। মুক্তিবাহিনী ততক্ষণে ঘিরে ফেলেছে রাজধানী ঢাকার চার পাশ। এই পরিস্থিতিতে যৌথবাহিনীর কমান্ডার স্যাম মানেকশ তার রাফায়েল কে বললেন, “যাও ওদের
আত্মসমর্পণে বাধ্য করো।’’ বাস্তবে সেটা ছিল এক দুঃসাহসী অভিযান। ঢাকা গ্যারিসনে তখন পাক সেনার সংখ্যা প্রায় ছাব্বিশ হাজার, অন্যদিকে ভারতীয় সেনা মাত্র তিন হাজার! যদিও পাক সামরিক গোয়েন্দারা এই সংখ্যাটা একদমই আন্দাজ করতে পারেনি। নিয়াজীর কাছে পাঠানো হলো আত্মসমর্পণের প্রস্তাব।
১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১, সকাল দশটায় হেলিকপ্টারে ঢাকা পৌঁছালেন রাফায়েল। আত্মসমর্পণের দলিল নিয়ে সোজা হাজির হলেন ক্যান্টনমেন্টে পাক আর্মির সদর দফতরে। অনুগামী হয়েছিলেন বিবিসি’র কয়েকজন সাংবাদিক সহ মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বাঘা সিদ্দিকী। সেখানে তাদের স্বাগত জানান স্বয়ং আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি।
আত্মসমর্পণের দলিলের খসড়া যখন তিনি পড়ে শোনান তখন সেখানে পিনপতনের নিঃস্তব্ধতা। নিয়াজি কাঁদছিলেন। রাও ফরমান আলি ‘ভারত ও বাংলাদেশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ’ কথাটিতে আপত্তি জানান। পাকিস্তানের আরও কয়েক জন অফিসার কিছু বিষয়ে আপত্তি জানান। ভারতীয় সেই সেনাধ্যক্ষ তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া হবে, তবে এই আত্মসমর্পণ হবে সেদিনই এবং প্রকাশ্য স্থানে।
পরের ইতিহাস তো সবায়ের জানা, কিন্তু রাফায়েল গেলেন কোথায় ? যেহেতু নিয়াজী ছিলেন পদ মর্যাদায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল, তাই প্রটোকল অনুযায়ী সমমর্যাদার কোন অফিসারের কাছেই তার আত্মসমর্পণ করার কথা। তড়িঘড়ি উড়িয়ে আনা হলো ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি লে.জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা কে, আর তিনিই হয়ে গেলেন বিজয় দিবসের নায়ক। পাদপ্রদীপের পেছনে চলে গেলেন রাফায়েল!
১৯২৩ সালে কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম রাফায়েলের। বাবা ইলিয়াস ইমানুয়েল বাগদাদ থেকে এসেছিলেন এখানে। কার্শিয়াঙ মিশনারী স্কুল থেকে বেরিয়ে ১৯৪২ সালে তিনি যোগ দেন বৃটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। কমিশনড্ পান ইনফ্যানট্রি ডিভিশনে। ছত্রিশ বছর বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭৮ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বাহিনীতে অবদান রাখার জন্য পেয়েছেন PVSM ও COM পুরস্কার। বাংলাদেশ সরকার দিয়েছেন ‘মুক্তিযুদ্ধ’ সম্মাননা।
সামলেছেন গোয়া এবং পাঞ্জাবের রাজ্যপালের দায়িত্ব। একাত্তরের ঘটনাবলী নিয়ে বই লিখেছেন ..
সারেন্ডার ইন ঢাকা, বার্থ অব এ নেশন ।
চিনতে পারলেন এই সেনাকর্তাকে ?
জে. এফ. আর.জ্যাকব ওরফে জ্যাকব ফারজ রাফায়েল জ্যাকব, ভারতীয় সেনাবাহিনীর একমাত্র ইহুদী সেনানায়ক! ২০১৬ সালে নয়াদিল্লির সেনা হাসপাতালে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন একাত্তরের যুদ্ধের এই উপেক্ষিত নায়ক!
কল্যাণীতে দুঃসাহসিক ছিনতাই! কাঁচরাপাড়ার ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা লুঠ
Durga Puja 2024: অভিনব উদ্যোগ! মহালয়ার দিন অঙ্কন প্রতিযোগিতা করল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাব
কাঁচরাপাড়ায় ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ২৫ লক্ষ টাকার মাল চুরি, মুল পান্ডা সুমন রায় গ্রেফতার
Durga Puja 2024: খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু হল কাঁচরাপাড়া আমরা সবাই ক্লাবের এ বছরের পুজো
ইটালিতে জি৭ বৈঠকে জেলেনস্কি-মোদী বৈঠক, যুদ্ধ বন্ধের জন্য কী বললেন?
নিয়োগ মামলার তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও জমি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
রাজ্যের ৪ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষনা তৃণমূলের
চন্দবাবুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কেনো এলেন না নীতিশ? খোঁচা বিরোধীদের, নীতিশকে ঘিরে জল্পনা
উত্তরের চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস! রাশ ধরুক আরএসএস, জোর চর্চা দলের অন্দরে
একী কাণ্ড? বাংলায় ৩ বিজেপি সাংসদ যোগাযোগ করছেন তৃণমূলের সঙ্গে!