পাখির চোখ ২০২৪: অতীতের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে জাতীয়স্তরে গুরুত্ব বাড়াতে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল - Bangla Hunt

পাখির চোখ ২০২৪: অতীতের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে জাতীয়স্তরে গুরুত্ব বাড়াতে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল

By Bangla Hunt Desk - June 05, 2021

বাংলা হান্ট ডেক্সঃ ২১শে বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের জন্য বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল (TMC)। প্রতিপক্ষ বিজেপির ঔদ্ধত্য ও অহংকারকে কার্যত মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তৃণমূলের লক্ষ্য জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে গুরুত্ব বৃদ্ধি। ২০২৪ সালের কথা মাথায় রেখে দিল্লির পথে হাঁটছে ঘাসফুল শিবির। শনিবার দলের সাংগাঠনিক রদবদল থেকে অন্য রাজ্যে সংগঠন তৈরির রূপরেখা দেখে এমনটাই দাবি করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে ছাপ ফেলার গুরুদায়িত্ব সামলাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য সাংসদরা।

আরো পড়ুন- তৃণমূলে বড় দায়িত্ব পেলেন রাজ, সায়ন্তিকা! কে কোন দায়িত্ব পেলেন দেখে নিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ঝড় উঠেছে, ‘‌বাঙালি প্রধানমন্ত্রী চাই’‌ দাবিতে। একইভাবে কিছুদিন আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ চেয়ে হ্যাশট্যাগ পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছিল। সামনে উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তবে বিজেপির সঙ্গে সঙ্গে মমতা ব্যানার্জিরও আপাতত পাখির চোখ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। বস্তুত রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই প্রথমে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এবং তারপরে করোনা প্রশ্নে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সলতে পাকানোর কাজ শুরু করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। রাজনীতির কারবারিরা আরও বলছেন, করোনা আবহে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী ফলাফল গোটা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জিকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবতে পছন্দ করছে।

ভোট–পরবর্তী দলের প্রথম কোর কমিটির বৈঠক এদিন তৃণমূল নেত্রী ডেকেছিলেন তৃণমূল ভবনে। নিঃসন্দেহে সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে দলকে নিয়ে চিন্তা করছেন মমতা। তাই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, একদিকে যেমন টার্গেট দিল্লি, অন্যদিকে উত্তর–পূর্বের রাজ্যগুলো সহ গোটা দেশজুড়ে সংগঠনকে ছড়িয়ে দেবার কথা ভাবছেন তিনি। যা এই বৈঠকের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার।
অভিষেক ব্যানার্জিকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হল। তাঁর জায়গায় সায়নী ঘোষ হলেন রাজ্য যুব সভাপতি।

কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় চেয়ারপার্সন করা হল। দলের সাংস্কৃতিক সেলের দায়িত্ব পেলেন রাজ চক্রবর্তী। রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হল সায়ন্তিকা ব্যানার্জিকে। শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি–রাজ্য সভাপতি পদ পেলেন ঋতব্রত ব্যানার্জি। সর্বভারতীয় সভানেত্রী হিসেবে থাকবেন দোলা সেন। কুণাল ঘোষকে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক পদে আনা হল। পূর্ণেন্দু বসুকে দলের কিষান সেলের সভাপতি করা হল।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চ্যাটার্জি জানালেন, ‘‌ভোটের আগে দল ছেড়ে যারা বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাদের অনেকেই আবার দলে ফিরতে চেয়েছেন। এদিনের বৈঠকে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি । এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা ব্যানার্জি।’‌ জানা যাচ্ছে, নির্বাচনী ফলাফল এবং সাংগঠনিক কাজের বিচার করে মোট নয়টি জেলায় জেলা সভাপতি পদে বদল আনতে চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। আগামী এক মাসের মধ্যে এই রদবদল হবে।

সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে দলীয় নেতাদের সতর্ক করেন মমতা।

• মন্ত্রীসভার কোনও সদস্য লাল বা নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।

• কয়লা, বালি দুর্নীতি বিষয়ক ইস্যুতে যেন দলীয় কোনও নেতার নাম না জড়ায়।

• সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করার ব্যাপারে দলীয় নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। যা খুশি বলা যাবে না।

• বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প যেমন ‘‌দুয়ারে ত্রাণ’‌ বন্টনের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই নেতার বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর