কলকাতায় মিড ডে মিলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, মুল অভিযুক্ত বেপাত্তা - Bangla Hunt

কলকাতায় মিড ডে মিলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, মুল অভিযুক্ত বেপাত্তা

By Bangla Hunt Desk - June 04, 2021

বাংলা হান্ট ডেক্সঃ মিড ডে মিলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। বাম জমানায় এই রকম অভিযোগ উঠতো প্রায়ই। কিন্তু এবার খাস কলকাতা শহরে এরকম অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় আন্দোলিত শিক্ষাদপ্তরও। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তারা। পুরো ব্যাপারটাই হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে অন্ধকারে রেখে। প্রাথমিক অভিযোগ এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে হলেও, এর সঙ্গে আরও অনেকে জড়িয়ে বলেই ইঙ্গিত।

আরো পড়ুন- কোভিড পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশে ৩ হাজার জুনিয়ার ডাক্তারের গনইস্তফা

এবিষয়ে স্কুল শিক্ষাদপ্তরের কাছে পাঠানো অভিযোগপত্র খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে কসবার শিক্ষাভবনের তিনটি অফিসকে। কারণ, এখান থেকেই পরিচালিত হয় মিড ডে মিল প্রকল্প। যদিও কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।

এই অভিযোগ করেছেন দেবাশিস দত্ত নামে ব্যাক্তি । তিনি নিজেকে বেহালা (পশ্চিম) বিধানসভা কেন্দ্রের অধিবাসী বলে পরিচয় দিয়েছেন। তবে মনে করা হচ্ছে, এই দেবাশিস দত্ত আসলে দপ্তরেরই অন্দরের কেউ। নিজেকে আড়ালে রাখতেই বেনামে এই অভিযোগ জানিয়েছেন। কারণ যে তথ্যাদি তিনি দিয়েছেন, তা ভিতরের কেউ না হলে জানা অসম্ভব। অভিযোগকারীর দাবি, ওই ডেটা এন্ট্রি অপারেটর অ্যাকাউন্টস বিভাগের আরও কিছু কর্মীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে প্রচুর অগ্রিম অর্থ দিয়েছেন। আর আগের অগ্রিমগুলিও অ্যাডজাস্ট করা হয়নি।

কলকাতার স্কুলগুলিতে স্থানাভাবের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে কমিউনিটি কিচেনে মিড-ডে-মিল রান্না হয়। এগুলির দায়িত্বে থাকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। সংগঠনগুলিকে মিলের ভিত্তিতে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। সেই টাকাই নয়ছয়ের অভিযোগ তোলা হয়েছে। শুধুমাত্র অগ্রিম অর্থে দুর্নীতির পরিমাণই প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বলে অভিযোগকারীর দাবি।

অগ্রিম ছাড়াও রয়েছে বাড়তি চাল কেনার হিসেব। ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে যে পরিমাণ চাল পাওয়ার কথা, তার তুলনায় অনেক বেশি চাল সংগঠনগুলি এফসিআইয়ের কাছ থেকে কিনেছে। সরকারি তহবিল থেকে সেই টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতসব অভিযোগের প্রমাণ কী? এ প্রশ্ন উঠতে পারে জেনে অভিযোগকারী নিজেই ই-মেলে লিখেছেন, ‘আমাকে বিশ্বাস করতে হবে না। কলকাতা জেলা মিড ডে মিল প্রকল্পের অফিসে ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষের বিশেষ অডিট করানো হোক। তাহলেই ব্যাপারটা সামনে আসবে।’ তৃতীয় কোনও পক্ষকে দিয়ে এই সময়ের বার্ষিক হিসেব খাতে লেনদেনের খতিয়ান, ক্যাশ বুক, ব্যাঙ্ক রিকনসিলিয়েশন স্টেটমেন্ট (বিআরএস), আপডেটেড অ্যাডভান্স রেজিস্টার মিলিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে চাল কেনার পরিমাণও রাইস পারচেজ স্টেটমেন্ট দেখলে বোঝা যাবে বলে তাঁর দাবি। সূত্রের খবর, সরকারিভাবে লিখিত অভিযোগ আসার আগেই এ নিয়ে মিড ডে মিল দপ্তরে জল্পনা ছিল। অভিযুক্ত কর্মীকে বিগত এক মাসেরও বেশি সময় কাজকর্ম থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে।

কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তথা সর্বশিক্ষা মিশনের চেয়ারম্যান এবং মিড ডে মিল প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কার্তিক মান্না বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তবে সেগুলি ভিত্তিহীন। অগ্রিমের টাকা গত মাসেই অ্যাডজাস্ট করা হয়েছে। আমরা এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

অনেকের মতে, একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পক্ষে গোটাটা করা সম্ভব নয়। দপ্তরের একটা বড় অংশের যোগনা থাকলে এই জিনিস হয়না। গোটাটাই সংগঠিত ভাবে হয়েছে। তবে মূল যে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এখনও বেপাত্তা রয়েছেন।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর