জগদ্দল নোয়াপাড়ায় ATM থেকে উধাও লক্ষ লক্ষ টাকা, ধন্দে গোয়েন্দারা - Bangla Hunt

জগদ্দল নোয়াপাড়ায় ATM থেকে উধাও লক্ষ লক্ষ টাকা, ধন্দে গোয়েন্দারা

By Bangla Hunt Desk - May 31, 2021

কলকাতাঃ অক্ষত এটিএম (ATM)। কোনও ভাঙচুর নেই। কোনও কার্ড সোয়াইপ করা নেই। কিন্তু উধাও হয়ে যাচ্ছে টাকা। গত পনেরোদিনে শহরের তিনটি এটিএম থেকে উধাও হল ৩৯ লক্ষ টাকা! কীভাবে হল এই চুরি তা নিয়ে রীতিমতো ধন্দে লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দারা। রীতিমতো পাকা মাথায় জালিয়াতি। শুধু কলকাতা নয়, বিধাননগর, উত্তর ২৪ পরগনার অন্যান্য প্রান্তেও একইভাবে এটিএম থেকে টাকা লোপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি জায়গাতেই এক কায়দায় টাকা তুলে নিয়েছে জালিয়াতরা। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে কলকাতা ও অন্য জেলা মিলিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা সামনে এসেছে। এবং সর্বত্র টার্গেট করা হয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এটিএমকে। এর মধ্যে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় ওই ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সল্টলেক, জগদ্দল, নোয়াপাড়াতেও এক ঘটনা। আর সবকটিই ঘটেছে মে মাসের ১৪ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে। তদন্তকারীরা সব জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। এমনকী এটিএমের সামনের রাস্তার ফুটেজও জোগাড় করা হয়েছে। সেগুলি বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে এই ‘মোডাস অপারেন্ডি’ ব্যবহার করে জালিয়াতরা টাকা তুলে নিয়েছে। সেখানেও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এটিএমই নিশানায় ছিল।

আরো পড়ুন- BigBreaking: অবসর নিলেন আলাপন বন্দোপাধ্যায়, মুখ্য উপদেষ্টা পদে নিয়োগ মমতার

কীভাবে অপারেশন চালাচ্ছে জালিয়াতরা? পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই গ্যাং মাঝরাতে হানা দিচ্ছে এটিএমে। যে সব এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী নেই, সেসব মেশিনকেই টার্গেট করছে তারা। প্রথমে মেশিনের সামনের অংশের খাঁচা খুলে ফেলা হচ্ছে। এরপর ব্যাঙ্কের সার্ভারের সঙ্গে এটিএমের টার্মিনালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে জালিয়াতরা। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর নির্দিষ্ট একটি কেবলকে নষ্ট করে দিচ্ছে তারা। এরপরই গোটা মেশিন চলে যাচ্ছে অফলাইন মোডে। ফলে সার্ভার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় কত টাকা তোলা হচ্ছে, তা নজরে আসছে না ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। এমনকী, এসএমএস পরিষেবাকেও ‘ব্লক’ করে দিচ্ছে তারা। এর জন্য একটি বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করছে জালিয়াতরা। গোটা বিষয়টিই করা হচ্ছে নিপুণ হাতে।

দুষ্কৃতীরা মেশিনের সফটওয়্যারের দখল নিয়ে গোটা সিস্টেমটাই বদলে দিচ্ছে। ফলে মেশিনের কমান্ড চলে যাচ্ছে তাদের হাতে। এরপর বাতিল এটিএম কার্ড ঢুকিয়ে ইচ্ছামতো টাকা তুলে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এক্ষেত্রে কত টাকা উঠল, তা ‘রিড’ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট মেশিন। তবে তদন্ত সূত্রে যেটুকু জানা গিয়েছে, তাতে এই জালিয়াতরা মূলত ২ হাজার এবং ৫০০ টাকার নোটকেই টার্গেট করছে। যাতে অল্প সময়ে বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়। সূত্রের খবর, অপরাধীরা গাড়িতে চড়েই এটিএমে আসছে। এই দলে কলকাতার পাশাপাশি ভিন রাজ্যের যুবকরাও জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন অফিসাররা। তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া চলছে। দিল্লিতে এই কৌশলে টাকা হাতিয়েছিল যারা, সেই জালিয়াতদের বিষয়েও তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। তাদেরই কেউ এ রাজ্যে এসে অপারেশন চালাচ্ছে কি না, সেই তথ্যও জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।

এটিএমে নগদ ভরার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার নজরে প্রথম আসে ঘটনাটি। তারা দেখে, নগদের হিসেব মিলছে না। মেশিন থেকে যত টাকা তোলা হয়েছে বলে সার্ভারে দেখা যাচ্ছে, আদতে তার থেকে তোলা হয়েছে বেশি। ফলে হেরফের হচ্ছে নোটের। তারাই বিষয়টি জানায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে। এই ঘটনায় এটিএম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর