ইয়াস-এ ১৩৪টি বাঁধ ভেঙেছে, ৩ লাখেরও বেশি ঘর ভেঙেছে , জানালেন মুখ্যমন্ত্রী - Bangla Hunt

ইয়াস-এ ১৩৪টি বাঁধ ভেঙেছে, ৩ লাখেরও বেশি ঘর ভেঙেছে , জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

By Bangla Hunt Desk - May 26, 2021

বাংলা হান্ট ডেক্সঃ এদিন বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রাশাসনিক আধিকারিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আজ রাত ৮টা ৪৫ পর্যন্ত জোয়ার হবে। যার ফলে জল আরও বাড়বে। গঙ্গা ও সমুদ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রচুর মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কালও জল বাড়বে। তাই বান আসতে পারে। ১৩৪টি বাঁধ ভেঙেছে, ৩ লাখেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আরো পড়ুন- কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের WhatsApp-এর! দাবি, নয়া নিয়ম গ্রাহকদের গোপনীয়তা ভাঙবে

মমতার কথায়, ‘ভরা কোটালে ঘূর্ণিঝড় বলেই এত ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর গ্রাম ভেসে গিয়েছে। কালও জল বাড়বে প্রায় ৫ ফিট পর্যন্ত। তাই কেউ ত্রাণ শিবির ছেড়ে বের হবেন না। কালকের দিনটা যাক। তারপর ফেরার কথা ভাববেন। জল নামা দরকার। সাইক্লোনের জল এত তাড়াতাড়ি নামা সম্ভব নয়। এছাড়াও গঙ্গা, সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকায় যারা থাকেন, তাঁরাও সতর্ক থাকুন। বাড়ি থেকে বের হবেন না। রাজ্য সরকার আপনাদের সঙ্গে আছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, নদীর কাছাকাছি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে। সাধারণ মানুষকেও বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। জলমগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ যেন বিপদের কারণ না হয়ে ওঠে সেই জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ ও সিইএসসিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেন।

ইয়াস ও প্রবল বৃষ্টির জেরে রাজ্যে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ১৫ লাখ মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১ কোটি মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়েছেন। ৩ লাখেরও বেশি বাড়ি ভেঙেছে। ১৩৪টা বাঁধ ভেঙেছে। ১ জন মারা গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এই ক্ষয়ক্ষতির কথা আমরা জানতে পেরেছি। তবে এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। জল না নামা পর্যন্ত এখনই সব তথ্য হাতে পাওয়া সম্ভব নয়।’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এছাড়াও কলকাতায় গঙ্গার পার্শ্ববর্তী এলাকায় জল ঢুকেছে। তিনি বলেন, ‘হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, কুলপি, বাসন্তী, গোসাবা, বজবজ, দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, রামনগর, কাঁথি , নন্দীগ্রাম, কোলাঘাট, উলুবেড়িয়া, সাঁকরাইল, চেতলা, রাসবিহারি, কালিঘাট ইত্যাদি জায়গা জলে প্লাবিত হয়েছে। কালকেও এই সব জায়গায় জল বাড়তে পারে। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নোনা জল ঢুকেছে জমিতে। ফলে ফসল নষ্ট হয়েছে।’

সেচ দফতরের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেচ দফতরের আধিকারিককে জানান, প্রতিবছর বন্যার ফলে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এতে রাজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। কেন্দ্র সরকার টাকা দেয় না। তাই বাঁধ নির্মাণের দিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। সেচ দফতরকে বাঁধ মেরামতির নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজ তদারকির জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গঠন করেন।

এদিন নবান্নে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকেও সজাগ নজর দিতে আধিকারিকদের নির্দেশ দেন তিনি। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ বজায় রাখার নির্দেশ দেন। মমতা বলেন, বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ বজায় রাখতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সাইক্লোনের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। রাজ্যের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। এছাড়াও সাইক্লোনের পরে জলবাহিত যে সব রোগ হয় সেগুলির মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর