তুলসী পাতা কমিয়ে দিতে পারে কঠিন রোগও! জেনে নিন তুলসী পাতার গুণাগুণ - Bangla Hunt

তুলসী পাতা কমিয়ে দিতে পারে কঠিন রোগও! জেনে নিন তুলসী পাতার গুণাগুণ

By Bangla Hunt Desk - September 01, 2020

বর্ষায় নানা সংক্রামক রোগের উপদ্রব বাড়ে। তার উপর আবার করোনাভাইরাস। সর্দি-হাঁচি-কাশি মানেই আতঙ্ক! কিন্তু জানেন কি? ঘরেই রয়েছে এমন অনেক কিছু, যা টুকটাক শরীর খারাপ শুধু নয়, কমিয়ে দিতে পারে কঠিন রোগও ৷

তুলসী পাতা এরকমই একটা গাছ, যার পাতায় রয়েছে প্রচুর ভেষজ গুণ! এতদিন শুধু জানতেন, কাশি, সর্দি লাগা এই সবের জন্যই ভালে তুলসী পাতা ৷ এমনকী, ক্ষতের জায়গাতেও তুলসী পাতার রস দিলে উপকার দেয় ৷ তবে তুলসীর যে এই উপকার গুলো রয়েছে, সেটা জানাই ছিল না৷ আসুন জেনে নিন তুলসী পাতার গুণাগুন।

১. ডায়াবেটিস দুরে থাকে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত তুলসি পাতা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। প্রসঙ্গত, মেটাবলিক ড্য়ামেজ-এর হাত থেকে লিভার এবং কিডনি-কে বাঁচাতেও তুলতি পাতা দারুণভাবে সাহায্য করে।

২. ক্যান্সার দূরে থাকে

তুলসি পাতায় উপস্থিত ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট শরীরের ভেতরকার ক্যান্সার সেল যাতে কোনওভাবেই জন্ম নিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে ক্যান্সার রোগ ধারের কাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না। প্রসঙ্গত, গবেষণায় দেখা গেছে তুলসি পাতা লার্ন্স, লিভার, ওরাল এবং স্কিন ক্যান্সার-এর প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে ফাইটোনিউট্রেয়েন্ট-এর পাশাপাশি তুলসি পাতায় থাকা একাধিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. স্ট্রেস কমায়

তুলসি পাতা খাওয়া মাত্র কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে শুরু করে। ফলে স্ট্রেস লেভেলও কমতে শুরু করে। কারণ কর্টিসল হরমোনের সঙ্গে স্ট্রেস-এর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। প্রসঙ্গত, ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমাতেও তুলসি পাতা দারুণভাবে সাহায্য করে। তাই তো এবার থেকে যখনই মনে হবে মানসিক চাপ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখনই তুলসি পাতা খাওয়া শুরু করবেন। দেখবেন উপকার মিলবে।

৪. মানসিক চাপ উদ্বেগ কমায়

সিডেটিভ এবং ডিসইনফেকটেন্ট প্রপাটিজ থাকার কারণে তুলসি পাতা যে কোনও ধরনের মাথা যন্ত্রণা কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। তুলসী পাতার রস মানসিক চাপ কমায়। তুলসী পাতার রস হজমশক্তি বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে। মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। এমনকি মাথাব্যাথারও ঝিমুনি ভাব কাটাতেও তুলসী পাতা বেশ উপকারী।

৫. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে

একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর তুলসি পাতা, দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি এবং গ্লুকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন আটকাতেও সাহায্য করে।

৬. সর্দি–জ্বরের প্রকোপ কমায়

তুলসি পাতা হল প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। তাই তো জ্বর এবং সর্দি-কাশি সারাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে তুলসি পাতা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র যে যে ভাইরাসের কারণে জ্বর হয়েছে, সেই জীবাণুগুলোকে মারতে শুরু করে। ফলে শরীর ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

৭. ব্রণের প্রকোপ কমায়

তুলসি পাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুদের সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলে। ফলে ব্রণের প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, ব্রণের চিকিৎসায় তুলসি পাতা খেতে পারেন অথবা সরাসরি মুখে পেস্ট বানিয়ে লাগাতেও পারেন। দুই ক্ষেত্রেই সমান উপকার পাওয়া যায়।

৮. ত্বকের সুরক্ষায়

তুলসীর মধ্যে আছে ফ্ল্যাভনয়েড জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।প্রতিদিন সকালে তুলসী চা খেলে ফুসফুস ভালো থাকে। এমনকি এটি ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী।

এখন আসি- কিভাবে তুলসি পাতা খাওয়া উচিত? চিবানো যখন যাবে না, তখন তো অন্য রাস্তা বের করতেই হবে। কি তাই তো? একেবারেই! কিন্তু অন্য কোনও রাস্তা আছে কি? আছে তো! বিশেষজ্ঞদের মতে সরাসরি চিবিয়ে না খেয়ে বরং তুলসি পাতা দিয়ে বানানো চা খাওয়া যেতে পারে। অথবা অল্প করে মধুর সঙ্গে মিশিয়েও তুলসি পাতা গ্রহণ করতে পারেন। এমন পদ্ধতিতে খেলে শরীরের কোনও ক্ষতিতো হবেই না বরং একাধিক উপকার হবে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর