সৌরকণা নিয়ে গবেষণায় মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের সৌভিক

By Bangla Hunt Desk - November 15, 2021

আলিপুরদুয়ার:সৌরকণা নিয়ে গবেষণায় মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের সৌভিক। আগামী মাসের প্রথমে নাসা ও লকহিড মার্টিনের যৌথ স্পেস রিসার্চ প্রকল্পে সৌরকণা নিয়ে গবেষণার কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন সৌভিক বোস।

আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিউটাউন দুর্গাবাড়ির যুবক ত্রিশ বছরের বয়ষ্ক সৌভিকের ডাক নাম আপ্পু। বাড়ি ও বন্ধু মহলে ওই নামেই পরিচিত। বাবা সৌমেন বোস কর্মসুত্রে গৌহাটিতে থাকাকালীন সৌভিক বোসের জন্ম সেখানে হলেও পরে তাদের পরিবার আলিপুরদুয়ারে ফিরে এলে সেখানেই স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়াশোনার পাঠ শেষ করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতার সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স, শেষে নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বছরই সূর্যকে নিয়ে গবেষণা সম্পূর্ণ করে পিএইচডি ডিগ্রি পান সৌভিক। পাশাপাশি সৌভিক। এবার সৌরকণা নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছরই নাসা ও লকহিড মার্টিনের যৌথ একটি গবেষণায় ডাক পেয়েছেন তিনি।

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ১০ বছরে ধাপে ধাপে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন এই গবেষক। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নতুন গবেষণাও পুরোপুরি সূর্যকেন্দ্রিক। সোমবার তার আলিপুরদুয়ারের বাড়িতে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে এবার একবারে নতুন গবেষণার সাথে যুক্ত হওয়ার বিষয় নিয়ে সৌভিক ওরফে আপ্পু জানিয়েছেন। সৌভিক বসু বলেন, মূলত সূর্য কণার থেকে আমাদের পৃথিবীর কী ক্ষতি হতে পারে, কখন কীভাবে কতটা পরিমান সূর্যকণা বেড়িয়ে আসতে পারে তা আগাম জানতে পারলে বিশ্বের সমস্ত দেশ অনেক ক্ষতি এড়াতে পারবে।সৌভিক বলেন, উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,পৃথিবীর চারদিকে মানুষের হাতে তৈরি প্রচুর স্যাটেলাইট ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরঝড়, সূর্যের মধ্যে বড়সড় বিস্ফোরণ হলে আচমকাই প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রন, প্রোটন কণা বেড়িয়ে আসে। এতে একসঙ্গে সব স্যাটেলাইট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মহাকাশ স্টেশন, সেখানে থাকা অ্যাস্ট্রোনটরা। পৃথিবীর একটি বড় অংশের পাওয়ার গ্রিড কাজ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এককথায় গোটা পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থাই নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এমনটা হলে গোটা পৃথিবীতে মাত্র ১ সেকেন্ডে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে।

সৌভিক জানান, আমরা এই গবেষণায় পুরোপুরি সফল হলে আগাম সোলার ফ্লেয়ার নিয়ে পূর্বাভাস দিতে পারব। যার দরুণ প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। জানা গিয়েছে, সোলার ফ্লেয়ার ও তার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা চলছে। তবে এখনও সাফল্য অধরা। আমেরিকার নাসা ও লকহিড মার্টিন দুটি সংস্থাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত। আলিপুরদুয়ারের কৃতি ছাত্র হিসেবে ইতিমধ্যেই লন্ডনের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ লন্ডনের তরফে ২০২০ সালের মে মাসে তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ফেলোশিপ প্রদান করা হয়েছে।কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন গবেষক তাঁর নাম প্রস্তাব করেন

এই ফেলোশিপের জন্য কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন গবেষক হেলেন মাসোন তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন।নাসার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার সাথে ইতিমধ্যেই যুক্ত রয়েছেন সৌভিক বসু।সাম্প্রতিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে নাসার গবেষকেরা টেলিস্কোপের কিভাবে উন্নতি করেছেন, তা নিয়ে বিখ্যাত এস্ট্রোনমি এন্ড এস্ট্রোফিজিক্স জার্নালে লেখা প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণার সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূর্যকণা নিয়ে গবেষণায় নাসা ও লকহিড মার্টিনের সাথে কাজ করার ডাক পাওয়া নিয়ে সৌভিকের এই কৃতিত্বে খুশির হাওয়া জেলা জুড়ে।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন