বাংলাহান্ট ডেক্সঃ রাজনীতির মঞ্চে দীর্ঘ পথচলা। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি, প্রাক্তন সাংসদ এবং প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রাজনৈতিক জীবনে তিনি যেমন দৃঢ় ও অনড়, ব্যক্তিগত জীবনেও এত দিন ছিলেন তেমনই একা। কিন্তু শুক্রবার সেই অধ্যায়ে আসছে এক নতুন মোড়। নিউ টাউনের নিজ বাসভবনে অত্যন্ত ঘরোয়া পরিসরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদার।
রাজনীতির সূত্রেই পরিচয়, জীবনের পথে একসাথে হাঁটার সিদ্ধান্ত
বিজেপি করার সূত্রেই আলাপ রিঙ্কুর সঙ্গে। রিঙ্কু মজুমদার একজন গৃহবধূ, বিবাহবিচ্ছিন্না ও এক পুত্র সন্তানের জননী। তাঁর ছেলে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে একাকীত্বে ডুবে থাকা দিলীপের জীবনে রিঙ্কুই আনেন নতুন আলোর রেখা। তাঁর কাছ থেকেই আসে সংসার বাঁধার প্রথম প্রস্তাব। যদিও শুরুতে রাজি হননি দিলীপ, শেষমেশ মায়ের ইচ্ছায় এবং নিজস্ব উপলব্ধিতে সম্মতি দেন।
ইডেনের ক্লাব হাউসে ‘পাকা কথা’
গত ৩ এপ্রিল ইডেন গার্ডেন্সে কেকেআর বনাম সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ চলাকালীন ক্লাব হাউসের ১১ নম্বর বক্সে বসেই হয়ে যায় ‘পাকা কথা’। সেদিন রিঙ্কু, তাঁর পরিবার এবং রিঙ্কুর পুত্রও উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাচক্রে, দিলীপের মায়েরও দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল পুত্রের বিবাহ হোক এবং একটি পরিপূর্ণ পরিবারে তিনি দিন কাটাতে পারেন।
ঘরোয়া আয়োজন, নির্বাচিত অতিথিমন্ডলী
শুক্রবারের বিবাহ অনুষ্ঠানটি হবে অত্যন্ত ব্যক্তিগত পরিসরে। দিলীপ বরাবরই আড়ম্বরে বিশ্বাসী নন। তাই আমন্ত্রিতদের তালিকাও ছোট। দিলীপ ও রিঙ্কুর নিকটাত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠরাই থাকবেন এই শুভক্ষণে। যদিও দলের একাংশ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে এবং দিল্লি থেকে সুনীল বনসল ও সতীশ ধন্দ তাঁর বাড়িতে গিয়ে আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শোনা যাচ্ছে, সঙ্ঘ পরিবারের একাংশ দিলীপের এই সিদ্ধান্তে খুশি নন। কেউ কেউ তাঁকে এই বিয়ে না করার পরামর্শও দেন। এমনকি বাড়িতেও গিয়ে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা হয়। তবে দিলীপ নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। বলেছেন, “এখন আর ফেরার পথ নেই।”
দিলীপ ঘোষ এখনও রাজনীতিতে সক্রিয়। আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে। বিজেপির তরফে তাঁকে আবার প্রার্থী করা হতে পারে। ফলে রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেই তাঁকে সামলাতে হবে সংসারের দায়িত্বও। বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গ, নিজের অনুপস্থিতিতে পরিবারের যত্ন, সব মিলিয়েই এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।