James Webb Space Telescope: হাব্‌লের চেয়েও অনেক শক্তিশালী, এ বার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাকাশে পাঠাচ্ছে নাসা - Bangla Hunt

James Webb Space Telescope: হাব্‌লের চেয়েও অনেক শক্তিশালী, এ বার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাকাশে পাঠাচ্ছে নাসা

By Bangla Hunt Desk - November 28, 2021

আরও গভীরে পৌঁছে ব্রহ্মাণ্ডকে জানার জন্য মহাকাশে এবার হাব্‌ল-এর চেয়েও অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী টেলিস্কোপ পাঠাচ্ছে নাসা। তার নাম— জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)।

নাসা জানিয়েছে, আগামী ২২ ডিসেম্বর নতুন শক্তিশালী টেলিস্কোপ মহাকাশে পাড়ি জমাবে ‘আরিয়েন ৫ ইসিএ’ রকেটে চেপে। অত্যন্ত শক্তিশালী সেই রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে দক্ষিণ আমেরিকার ফরাসি গায়ানা থেকে।

এর আগে আগামী ১৮ ডিসেম্বরে এই উৎক্ষেপণের কথা ছিল। কিন্তু প্রায় শেষ মুহূর্তে আরিয়েন ৫ ইসিএ রকেটের একেবারে উপরের স্তরে (‘আপার স্টেজ’) কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় নাসা গত ২২ নভেম্বর ঘোষণা করেছিল, পূর্বনির্ধারিত সূচিতে (১৮ ডিসেম্বর) মহাকাশে রওনা করানো যাবে না জেমস ওয়েব টেলিস্কোপকে। কবে সেই উৎক্ষেপণ হবে তা পরে জানানো হবে।

এর আগে ১৯৯০ সালের ২৪ এপ্রিল নাসা মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য হাব্‌ল স্পেস টেলিস্কোপ পাঠিয়েছিল। তার পর গত তিন দশকে মহাকাশবিজ্ঞান খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে গিয়েছে। তাই ব্রহ্মাণ্ডের আরও গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ জরুরি হয়ে উঠেছে। তারই জন্য বানানো হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। মহাকাশের এই খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপটি বানাতে নাসার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (সিএসএ)। টেলিস্কোপটিকে যে রকেটে চাপিয়ে পাঠানো হবে মহাকাশে, সেই আরিয়েন ৫ ইসিএ রকেটটি বানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী রকেট।

নাসা জানিয়েছে, মহাকাশে যে জায়গায় এই অবলোহিত রশ্মির টেলিস্কোপটিকে বসানো হবে সেই জায়গাটি পৃথিবী থেকে ১০ লক্ষ মাইল বা ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। উৎক্ষেপণের পর সেই পথ পাড়ি দিতে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের এক মাস সময় লাগবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে। সেখানে পৌঁছে তার আয়নাগুলি ও সানশিল্ড খুলতে ও অন্যান্য যন্ত্র চালু করতে লাগবে আরও অন্তত মাসছয়েক সময়।

নাসা জানিয়েছে, এই টেলিস্কোপ প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পর থেকে এখনকার সময় পর্যন্ত বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তু, তাদের উৎপত্তি ও বিকাশ ও ধ্বংসের বহু ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। যা ব্রহ্মাণ্ডের অনেক অজানা তথ্য বিজ্ঞানীদের জানাতে পারবে। এই টেলিস্কোপ সৌরমণ্ডলের জন্মের দিনগুলির কথাও জানতে পারবে। জানতে পারবে ভিন নক্ষত্রদের মুলুকে প্রাণের পক্ষে টিকে থাকার পরিবেশ রয়েছে কি না। থাকলে কতটা। এমনকি, বিগ ব্যাংয়ের দীর্ঘ সময় পর প্রথম প্রজন্মের ছায়াপথগুলি কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, সেই ইতিহাসও বিজ্ঞানীদের জানতে প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপই, জানিয়েছে নাসা।

উল্লেখ্য, জেমস ওয়েব-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রটি হলো এর শক্তিশালী ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ। ইনফ্রারেড, মহাকাশ পর্যবেক্ষণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে এর দ্বারা অদৃশ্য জগতেও আবিষ্কার করা সম্ভব হয় অজানা সব উপাদান। এছাড়া যেহেতু ইনফ্রারেড হলো লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শেষ মাত্রা, তাই এর দ্বারা মহাকাশীয় বস্তুসমূহের রেডশিফ্‌ট, বা দূরে সরে যাওয়া সনাক্ত করা খুব সহজ হবে। আর এর ফলে আমাদের থেকে অনেক অনেক দূরবর্তী বস্তুর দূরে সরে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট রেডশিফ্‌ট সনাক্ত করার মাধ্যমে সেগুলোকে দেখাও সম্ভব হবে, মহাকাশের আরো গহীনে দৃষ্টি দেয়া সহজ হবে। আর, ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশের ধূলার কৃষ্ণমেঘ বা ডার্ক ক্লাউড অফ ডাস্ট ভেদ করে তাকাতে পারবে বলে জেমস ওয়েবের দৃষ্টি হবে আরো প্রসারিত। ইনফ্রারেড দিয়ে সনাক্ত করা সম্ভব হবে রেডিয়েশন বা বিকীরণ। সুতরাং স্রেফ একটা ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশে আমাদের চোখটা হয়ে উঠবে অনেক অনেক শক্তিশালী।

দেখুন ভিডিও-

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর