২৬/১১ হামলার ১৩ বছর, শহিদদের শ্রদ্ধার্ঘ্য মুম্বইয়ে - Bangla Hunt

২৬/১১ হামলার ১৩ বছর, শহিদদের শ্রদ্ধার্ঘ্য মুম্বইয়ে

By Bangla Hunt Desk - November 26, 2021

২৬/১১, ২০০৮ সালে আজকের দিনেই জঙ্গি হামলায় কেঁপে উঠেছিল মুম্বাই। ভয়াবহ সেই দিন আজও আতঙ্কিত করে তোলে দেশবাসীকে। আজ মুম্বাইয়ের সেই ভয়াবহ হামলার ১৩ বছর পূর্ণ হল। পাকিস্তান ভিত্তিক জিহাদি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ১০ জন জঙ্গি মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে হামলা চালায় এবং ৪ দিনে ১২টি হামলার ঘটনা ঘটায়। সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। সেই হামলার ১৩ বছর পার। ১৩ বছর আগের সেই হামলায় শহিদদের স্মরণ করে এদিন শ্রদ্ধা জানানো হয় মুম্বইতে। মহারাষ্ট্রের গভর্নর ভগত সিংহ কোশিয়ারি, উপ মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাতিল সন্ত্রাসী হামলায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

১৩ বছর আগের সেই সন্ধের স্মৃতি এখনও টাটকা দেশবাসীর মনে। আরব সাগর পেরিয়ে মুম্বইয়ে ঢুকে সশস্ত্র জঙ্গিরা প্রথমে তাজ হোটেলে হামলা চালায়। তারপর একে একে সন্ত্রাসবাদীরা ছড়িয়ে পড়েছিল লিওপোল্ড কাফে, নরিম্যান হাইস, ছত্রপতি শিবাজী বাস টার্মিনাস, ট্রাইডেন্ট হোটেল, কামা হাসপাতালের মতো শহরের একাধিক জায়গায়। এরপর টানা চার দিনের সন্ত্রাসাবাদী আক্রমণ। আর এই হামলায় নিহত হন ২৮ জন বিদেশ নাগরিক-সহ ১৬৪ জন। আহত হন ৩০৮ জন। সংশ্লিষ্টরা বেঁচে গেলেও অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। এই হামলার পরেই প্রথমবার বিশ্বস্তরে ব্যাপক নিন্দার ঝড় ওঠে।

এই হামলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তার জঙ্গিবিরোধী অভিযানকে গুরুত্ব সহকারে প্রসারিত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক পুনরুদ্ধার করতে বাধ্য করে। নিরাপত্তা বাহিনী আজমল কাসাব নামে এক আক্রমণকারীকে গ্রেফতার করে, যে পরে নিশ্চিত করে, এই হামলার পুরো পরিকল্পনা লস্কর এবং পাকিস্তানে অবস্থিত অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি করেছিল৷

দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কাসাবের মাধ্যমে জানতে পারে, সমস্ত আক্রমণকারী পাকিস্তান থেকে এসেছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণকারীরাও সেখান থেকেই কাজ করছে।হামলার দশ বছর পর, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ একের পর এক চাঞ্চল্যকর প্রকাশের মাধ্যমে ইঙ্গিত দেন, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলায় ইসলামাবাদের ভূমিকা ছিল।

বর্তমানে প্রমাণ থেকে বোঝা যায়, ২৬/১১ হামলায় পাকিস্তানের সন্ত্রাসীরা জড়িত ছিল এবং তাদের পাকিস্তান রক্ষণাবেক্ষণ করে। আজমল কাসাব, ডেভিড হেডলি এবং জাবিউদ্দিন আনসারী – তিন জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এটি প্রমাণিত হয়। কিন্তু জনসমক্ষে গ্রহণ করার পরেও, ভারতের কাছে সমস্ত প্রমাণ ভাগ করে নেওয়ার পরেও, পাকিস্তান এখনও ২৬/১১ হামলার ১৩ তম বার্ষিকীতেও নিহতদের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিকতা দেখায়নি।

৭ নভেম্বর পাকিস্তানের একটি আদালত, ছয় সন্ত্রাসীকে মুক্তি দেয়, যারা ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। লস্কর-ই-তৈবা কমান্ডার এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার মাস্টারমাইন্ড জাকি-উর-রহমান লাখভিও পাঞ্জাব প্রদেশের দেশটির সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বিভাগ (CTD) দ্বারা সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর ২০১৫ সাল থেকে জামিনে মুক্তি পান।

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি তদন্ত এবং পাল্টা দাবি এড়াতে তাদের নাম পরিবর্তন করে চলেছে, কারণ জাতিসংঘের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে।



সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর