BigBreaking: 'ISF -এর সঙ্গে জোট ভুল ছিল', পর্যালোচনা বৈঠকে মানল আলিমুদ্দিন - Bangla Hunt

BigBreaking: ‘ISF -এর সঙ্গে জোট ভুল ছিল’, পর্যালোচনা বৈঠকে মানল আলিমুদ্দিন

By Bangla Hunt Desk - May 30, 2021

বাংলা হান্ট ডেক্সঃ বিধানসভা নির্বাচনে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। শেষ পর্যন্ত আলিমুদ্দিনে পর্যালোচনা বৈঠকে মেনে নিলেন একাধিক নেতা। জোটের ভবিষ্যত্ নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। তবে দলের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লেগেছে জোটের কারণে। এদিন এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন অনেকে। রাজ্য কমিটির একাধিক নেতা এদিন জোট নিয়ে সরব হয়েছিলেন। শরিক দল গুলির দাবি ছিল, রাজ্য কমিটিতে কোনওরকম আলোচনা ছড়াই আব্বাস সিদ্দিকির দলের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এদিন অনেকেই জোট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন- মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুকুল ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত’র, জোর জল্পনা

এবিষয়ে আগামী দিনে সিপিএম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও বিতর্কের ঝড় ওঠার ইঙ্গিত রয়েছে। ১৯৬৭ সালে কেরালায় মুসলিম লিগের সঙ্গে জোট করেছিল সিপিএম। খোদ ইএমএস নাম্বুদিরিপাদ সেই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ছিলেন। তা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয় সিপিএমে। ১৯৬৭-৬৯, মাত্র দু’বছর সিপিএম ও মুসলিম লিগের জোট থাকলেও তার জেরে তৈরি বিতর্কের রেশ এখনও যায়নি। পরে সিপিএম পার্টি কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়, মুসলিম লিগের মতো কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে জোট করা যাবে না।

এখানেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আব্বাসের দল ধর্মনিরপেক্ষ না সাম্প্রদায়িক- এ নিয়েই সিপিএম দ্বিধাবিভক্ত। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমের মতো প্রথম সারির নেতারা বারবার যুক্তি দিয়েছেন যে, আইএসএফ সাম্প্রদায়িক শক্তি নয়। এই দলের প্রার্থী হিসাবে মুসলিম থেকে তফসিলি জাতির মানুষ রয়েছেন। আব্বাস এই দলের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তিনি কোনও পদে নেই। দলের শীর্ষ দুই পদে রয়েছেন নৌসাদ সিদ্দিকি। তবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতৃত্বের এই যুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ও তন্ময় ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। সিপিএমের রাজ্য কমিটির আসন্ন নির্বাচনী পর্যালোচনা বৈঠকে আরও অনেক নেতা মুখ খোলার জন্য তৈরি হচ্ছেন। এই নেতারা মনে করেন, আব্বাসের দলকে ধর্মনিরপেক্ষতার মোড়ক দেওয়া হলেও আমজনতার বড় অংশের কাছে তারা সাম্প্রদায়িক শক্তিই। উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকায় আব্বাসের সঙ্গে জোট বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বাম সমর্থকদের কাছে কেন আব্বাসের সঙ্গে জোট করলেন, তা নিয়ে সুজন চক্রবর্তীকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও সেলিমের বক্তব্য, ‘যে যাঁর মতো বলেছেন। কথা বলার জন্য তো কোনও লাইসেন্স নেই!’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা মনে করেন ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকতে থাকতে গরিব, পিছিয়ে থাকা বিভিন্ন সংখ্যালঘু জনতার বদলে সিপিএম মধ্যবিত্তের দলে পরিণত হয়েছিল। যার খেসারত দিতে হয়েছে। তবে তিনি এটা মানছেন, আব্বাসের সঙ্গে জোট নিয়ে দলের রাজ্য কমিটিতে আলোচনা হয়নি। এ-ও বলেছেন, নির্বাচনের সময় রাজ্য কমিটি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে রণকৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগাম ক্ষমতা দেয়। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সেই ক্ষমতার বলে জোট করেছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘এখন অনেকে অনেক কথা বলছেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে আব্বাসকে মূল বক্তা চেয়ে কোন জেলা থেকে কত চিঠি এসেছে, তা-ও তো রয়েছে।’

আরো পড়ুন- প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর পায়ে ধরতে রাজি আছি। কিন্তু বাংলাকে অপমান করবেন না; মমতা

আব্বাসের অতীতের বিভিন্ন মন্তব্যে সিপিএমের একাংশ আইএসএফ-কে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি বলে মানতে যখন চাইছেন না, তখন সিপিএমের একটি অংশের পর্যবেক্ষণ হলো, মূলত চট্টোপাধ্যায়, গঙ্গোপাধ্যায় পদবিধারী একদল বর্ণহিন্দু সিপিএম নেতা আব্বাসের সঙ্গে জোট কোনও ভাবে মানতে পারছেন না।

তাই সিপিএম ছেড়ে যাওয়া রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর কথায়, ”দেশ ভাগের আগের কমিউনিস্ট পার্টি আর পরবর্তী সময়ের পার্টির চরিত্র আলাদা। এই পার্টির নেতৃত্বে বড় অংশ উদ্বাস্তু আন্দোলন থেকে উঠে এসেছে। মুসলিম ইস্যুতে সিপিএমের এই অংশ প্রবল সংবেদনশীল।’ হয়তো তাই উদ্বাস্তু এলাকার সিপিএম অনেকেই আব্বাসের সঙ্গে এই জোট মেনে নিতে পারেনি।

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন


প্রাসঙ্গিক খবর