পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্য প্রত্যেক রাশিতে এক মাস (৩০ দিন) অবস্থান করে। প্রত্যেক ৩০ ডিগ্রি অন্তর রাশি পরিবর্তনকালকে বিভিন্ন সংক্রান্তি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে রাশিচক্রে ১২টি রাশির অবস্থান। প্রত্যেক রাশি ৩০ ডিগ্রি। বাংলার প্রথম মাস বৈশাখে সূর্যের অবস্থান মেষ রাশিতে, জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ রাশিতে। এইরূপে ধনু রাশিতে ৩০ দিনের অবস্থানের পর মকর রাশিতে গমনকাল ‘মকর সংক্রান্তি’ নামে পরিচিত। এই তিথি ‘উত্তরায়ণ সংক্রান্তি’ নামেও পরিচিত। এই তিথি প্রাকৃতিক এবং জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনই গুরুত্বপূর্ণ পৌরাণিক কারণেও।
প্রাকৃতিক কারণ হিসাবে বলা যায়, এই তিথি থেকেই একটি ঋতুর পরিবর্তন হয়। জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে মকর এবং কুম্ভ রাশির অধিপতি গ্রহ শনিদেব। শাস্ত্রমতে, রবি এবং শনির পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। এই হিসাবে রবির মকরে প্রবেশ পিতার পুত্রগৃহে গমন। যদিও জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক মধুর নয়
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে রাজা সগরের ষাট হাজার মৃত পুত্রের প্রাণ দানের কারণে গঙ্গাদেবীর মর্তে তথা কপিল মুনির আশ্রমে আগমনের তিথি এই মকর সংক্রান্তি তিথি।
আরো পড়ুন- মকর সংক্রান্তিতে ৬ রাশির জাতকরা পাবেন সূর্যদেবের আশীর্বাদ, ভাগ্য হয়ে উঠবে অতি উজ্জ্বল
মকর সংক্রান্তি এবার ১৫ জানুয়ারি পালিত হবে। মকর সংক্রান্তি ১৪ জানুয়ারি রাত ৮টা বেজে ৪৩ মিনিটে শুরু হবে। মকর সংক্রান্তির শুভ সময় ১৫ জানুয়ারি সকাল ৬টা বেজে ৪৭ মিনিটে শুরু হবে এবং শুভ সময় শেষ হবে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে। একই সময়ে, মহাপুণ্য কাল সকাল ৭টা ১৫ মিনিট থেকে ৯টা ৬. মিনিট পর্যন্ত হবে। মকর সংক্রান্তির দিনে পুণ্য ও মহৎ পুণ্যময় সময়ে স্নান ও দান করা উচিত।
মকর সংক্রান্তির দিন এই বিশেষ ব্যবস্থাগুলি করুন
মকর সংক্রান্তির দিন স্নানের জলে কালো তিল রাখুন। তিলের জল দিয়ে স্নান করা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়৷ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷
মকর সংক্রান্তির দিন স্নানের পর সূর্যদেবকে জল অর্পণ করুন এবং সূর্যদেবকে নিবেদন করা জলে তিল দিন। এটা জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। এটা করলে পিতৃপুরুষের আত্মা শান্তি পায়।
আর্থিক সমস্যা থাকলে এই দিনে ঘরে সূর্য যন্ত্র স্থাপন করুন এবং সূর্য মন্ত্র ৫০১ বার জপ করুন। রাশিফলের যে কোনও উপায়ে সূর্যের দোষ কমাতে প্রবাহিত জলে একটি তামার মুদ্রা বা একটি বর্গাকার তামার টুকরো ফেলে দিন।