বৌদ্ধ ভারতে নারী শিক্ষা - Bangla Hunt

বৌদ্ধ ভারতে নারী শিক্ষা

By Bangla Hunt Desk - May 17, 2023

রানা চক্রবর্তীঃ বৌদ্ধযুগের ভারতে যেসব নারী বৌদ্ধধর্মের বৃত্তের বাইরে ছিলেন, তাঁদের শিক্ষা সম্বন্ধে প্রাচীন বৌদ্ধগ্রন্থগুলি থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে তখন যেসব নারী বৌদ্ধধর্মের দ্বারা প্রভাবান্বিতা হয়েছিলেন, তাঁদের সম্বন্ধে প্রাচীন বৌদ্ধগ্রন্থগুলিতে যে বিবরণ পাওয়া যায়, সেটা থেকে মনে হয় যে, তাঁরা ধর্মোপদেশ বেশ ভালোই বুঝতে পারতেন; অর্থাৎ, তাঁরা একেবারে অশিক্ষিতা ছিলেন না। প্রকৃতপক্ষে বৌদ্ধযুগের অনেক নারীই শিক্ষা-দীক্ষায় পুরুষদের সমকক্ষ ছিলেন। তখন কোন অবিবাহিতা বালিকাকে কোন বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে শিক্ষা দেওয়া হত, কিংবা গৃহেই তাঁর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হত – সেই ধরণের কোন কথার ইঙ্গিত অবশ্য প্রাচীন বৌদ্ধ-সাহিত্যে পাওয়া যায় না; কিন্তু সেগুলিতে তখনকার শিক্ষিতা নারীদের উল্লেখ প্রচুর পরিমাণেই পাওয়া যায়। পালিধর্ম গ্রন্থ সমূহের মতে ‘থেরীগাথা’র শ্লোকগুলি ঋষিকল্পা নারীদের দ্বারা রচিত হয়েছিল। বৌদ্ধযুগের নারীদের প্রতিভার প্রমাণ-স্বরূপ ‘সুক্কা’র ধর্মবক্তৃতা, এবং ‘ক্ষেমা’ ও ‘ধম্মদিন্না’র দার্শনিক আলোচনা প্রভৃতির উল্লেখ করা যেতে পারে। সুতরাং সে যুগের নারীদের জন্য কোন ধরণের শিক্ষার ব্যবস্থা যে একেবারেই ছিল না, একথা বললে বৌদ্ধ-সাহিত্যে যেসব ঐতিহাসিক সত্যি রয়েছে, সেগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। প্রাচীন ভারতে পাণ্ডিত্যের জন্য যেসব বৌদ্ধ নারী খ্যাতি লাভ করেছিলেন তাঁদের দু’-চার জনের নাম এখনও অন্ততঃ বহু ভারতবাসীর স্মৃতিতে জেগে রয়েছে। তখন যাঁরা থেরীগাথা গান করতেন, তাঁরাই যে সেই গাথাগুলি রচনা করেছিলেন, সেই বিষয়ে অবশ্য ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতদ্বৈধ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু, এই বিষয়ে বিরুদ্ধ-মতাবলম্বীদের যুক্তি অতি সামান্য ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। যত দিন পর্যন্ত না তাঁদের মধ্যে কেউ, এই বিষয়ে কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ দেখাতে পারছেন, ততদিন তাঁদের কথা বিশ্বাস করবার কোনও সার্থকতা অন্ততঃ দেখতে পাওয়া যায় না। বস্তুতঃ এটাই যুক্তি সঙ্গত বলে মনে হয় যে, বুদ্ধের সময়ে যাঁরা সাংসারিক জীবন পরিহার করে অতীন্দ্রিয় আনন্দের রসাস্বাদনে সমর্থ হয়েছিলেন, বহু সময়ে বিশেষভাবে তাঁরা যখন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও ইন্দ্রিয়-লালসার লোভ বা নানাবিধ বিভীষিকা দ্বারা বিপথগামী হতেন, তখন তাঁরাই মুখে মুখে পাণ্ডিত্যপূর্ণ ভাবময় শ্লোকগুলি রচনা করিয়া গান করতেন। তাঁদের রচিত সেই গাথাগুলি যে নারীদের দ্বারাই গাওয়া হত, সেকথা নিঃসংশয়ে বলা যেতে পারে। তাছাড়া, তখন যে সমস্ত নারী শিক্ষাদানের ব্রত গ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের কয়েক জনের বিবরণও প্রাচীন বৌদ্ধগ্রন্থগুলি থেকে পাওয়া যায়। বুদ্ধের সময়ে ভারতে বৌদ্ধধর্মালম্বী নারীদের মধ্যে শিক্ষার ব্যবস্থা যে প্রচলিত ছিল, সেটা এই দৃষ্টান্তগুলি থেকে বুঝতে পারা যায়।


সেযুগে ভালো বক্তৃতা করতে পারতেন এমন একজন নারীর উল্লেখ ‘সংযুক্তনিকায়’ গ্রন্থে পাওয়া যায়। ‘সুক্কা’ নামের একজন ভিক্ষুণী রাজগৃহের এক বৃহৎ জনতার সম্মুখে ধৰ্ম-সম্বন্ধে বক্তৃতা করেছিলেন। তাঁর সেই বক্তৃতা শুনে একজন যক্ষ এতই প্রীতি লাভ করেছিলেন যে, তিনি রাজগৃহের রাস্তায় রাস্তায় বলে বেড়িয়েছিলেন, “সুক্কা সুধা বিতরণ করিতেছেন, যাঁহারা বুদ্ধিমান তাঁহাদের সেই সুধা পান করিয়া আসা উচিত।” (১ম খণ্ড, পৃ: ২১২-২১৩) ‘ক্ষেমা’ নামের আরেক বৌদ্ধ নারী বিনয়গ্রন্থটি অতি উত্তমরূপে আয়ত্ত করেছিলেন। তিনি শিক্ষিতা ও বুদ্ধিমতী ছিলেন, চমৎকার বক্তৃতা করতে পারতেন, এবং তাঁর অসাধারণ প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ছিল। একদা রাজা প্রসেনজিৎ তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “মৃত্যুর পর জীবের পুনর্জন্ম হয় কি না?” তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ভগবান বুদ্ধ এ কথার কোনও উত্তর দেন নাই।” তারপরে রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “ভগবান এ প্রশ্নের উত্তর দেন নাই কেন?” তখন সেই ভিক্ষুণী রাজাকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, “আপনি এমন কাহাকেও কি জানেন যিনি গঙ্গার বালুকা এবং সমুদ্রের জলবিন্দু গণনা করিতে পারেন?” রাজা জানিয়েছিলেন যে, সেরকম কোন মানুষের কথা তাঁর জানা নেই। তখন ভিক্ষুণী তাঁকে বলেছিলেন, “যদি কেহ পঞ্চ খন্ধের আকর্ষণ হইতে আপনাকে মুক্ত করিতে পারে তবে সে অসীম অতলস্পর্শ সমুদ্রের আকার ধারণ করে; সুতরাং মৃত্যুর পর এইরূপ জীবের পুনর্জন্ম ধারণার অতীত বস্তু।” তাঁর উত্তর শুনে রাজা পরিতৃপ্ত হয়ে তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। (সংযুক্তনিকায়, ৪র্থ খণ্ড, পৃ: ৩৭৪-৩৮০)
‘ভদ্দা কুণ্ডলকেশা’ সংসার ত্যাগ করে নিগন্ঠ সম্প্রদায়ে প্রবেশ করেছিলেন। তারপরে নিগণ্ঠদের ধর্ম-মত অধিগত করে তাঁদের সাহচর্য্য পরিত্যাগ করে তিনি বৌদ্ধ পণ্ডিতদের কাছ থেকে তাঁদের জ্ঞান-পদ্ধতি আয়ত্ত করবার চেষ্টা করেছিলেন। তর্কে ‘সারিপুত্ত’ ছাড়া অন্য কেউই তাঁর সমকক্ষ ছিলেন না। একমাত্র সারিপুত্তই তাঁকে তর্ক-বিচারে পরাজিত করতে পেরেছিলেন। (থেরীগাথা ভাষ্য, পৃ- ৯৯)
‘মজঝিমনিকায়’ গ্রন্থে বৌদ্ধদর্শনে সুপণ্ডিতা ‘ধম্মদিন্না’ নামের একজন শিক্ষিতা মহিলার উল্লেখ পাওয়া যায়। একদিন ধম্মদিন্নার স্বামী তাঁকে ‘সক্কায়দিটঠি’ (দেহকে আত্মা বলে বিশ্বাস ), ‘সক্কায় নিরোধ’ (দেহের বিনাশ), ‘অরিয় অটঠঙ্গিক মগগো’ (আর্য্য-অষ্টাঙ্গিকমার্গ), ‘সংখার’ (সংস্কার), ‘নিরোধসমাপত্তি’ (ধ্যানের একটি স্তর যেখানে কায়-মন-বাক্যের সংস্কারের বিনাশ সাধিত হয়), ‘নিরোধসমাপত্তি’ থেকে উত্থানের উপায়, এবং নানা প্রকার বেদনা সম্বন্ধে অনেকগুলি প্রশ্ন করেছিলেন। ধম্মদিন্না তাঁকে প্রত্যেকটি প্রশ্নেরই যথাযথ উত্তর প্রদান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “পঞ্চ উপাদানখন্ধের দ্বারা সক্কায় (দেহ) নিৰ্ম্মিত। তৃষ্ণার অর্থ সক্কায়সমুদয়। তৃষ্ণা ধ্বংসের অর্থ সক্কায় বিনাশ, মহান আটটি পথের দ্বারা সক্কায়-নিরোধ লাভ করা যায়। অজ্ঞ ব্যক্তিরাই পঞ্চ উপাদানখন্ধকে একত্রে এবং পৃথকভাবে অত্তা (আত্মা) বলিয়া দেখে। জ্ঞানী শিষ্যেরা বাক্য, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস এবং মনের কার্য্যকে এইরূপ ভাবে গ্রহণ করেন না। বেদনা তিন প্রকারের – যথা ‘সুখ, দুঃখ এবং অদুঃখ-অসুখ’। …” (১ম খণ্ড, পৃ- ২৯৯) ধম্মদিন্না বিনয়গ্ৰন্থ বিশেষভাবে আয়ত্ত করেছিলেন। (দীপবংশ, ৮ম পৰ্ব)
‘বিমানবত্থুভাষ্যে’ (পৃ- ১৩১) বৌদ্ধযুগের একটিমাত্র শিক্ষিত নারীর উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি শ্রাবস্তীর
জনৈক উপাসকের কন্যা ছিলেন, তাঁর নাম ছিল – ‘লতা’। তিনি শিক্ষিতা, জ্ঞানী ও বুদ্ধিমতী ছিলেন। ‘সঙ্ঘমিত্তা’ (অশোকের কন্যা সঙ্ঘমিত্রা) ত্রিবিধ বিজ্ঞানে পারদর্শিনী ছিলেন। যাদুবিদ্যাতে তাঁর বিশেষ অভিজ্ঞতা ছিল। (দীপবংশ, ১৫ পৰ্ব) তিনি ‘বিনয়পিটক’ গ্রন্থটি এমনভাবে আয়ত্ত করেছিলেন যে, অন্যদের সেই শাস্ত্র সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে পারতেন। বস্তুতঃ অনুরাধপুরে বিনয়পিটক, সুত্তপিটকের পাঁচটি গ্রন্থ, এবং অভিধর্মের সাতটি গ্রন্থ সম্বন্ধে তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন। (দীপবংশ, ১৮ পৰ্ব) ‘অঞ্জলি’ ছয়টি অলৌকিক গুণ এবং মহান দৈবশক্তির অধিকারিণী ছিলেন। সঙ্ঘমিত্তার মত তাঁরও বিনয়পিটকে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি ছিল। তিনিও অন্যদের সেই গ্রন্থ থেকে শিক্ষাদান করতে পারতেন। তিনি অনুরাধপুরে ১৬ হাজার ভিক্ষুণীসহ গমন করেছিলেন, এবং তাঁদের বিনয়পিটক থেকে শিক্ষাও দান করেছিলেন। ‘উত্তরা’ ত্ৰিবিধ বিজ্ঞান আয়ত্ত করেছিলেন, এবং যাদুবিদ্যা সম্বন্ধেও তাঁহার গভীর জ্ঞান ছিল। তিনি প্রচুর অধ্যয়ন করেছিলেন। অনুরাধপুরে গিয়ে তিনি বিনয়পিটক, সুত্তপিটকের পাঁচটি গ্রন্থ এবং অভিধর্মের সাতটি গ্রন্থের অধ্যাপনার ভার গ্রহণ করেছিলেন। ‘কালি’ একজন দুশ্চরিত্রের কন্যা ছিলেন, কিন্তু তাঁর নিজের মন অত্যন্ত পবিত্র ছিল, এবং তিনি সমস্ত ধৰ্ম-শাস্ত্রেই সুপণ্ডিতা ছিলেন। তিনিও অনুরাধপুরে বিনয়পিটক সম্বন্ধে উপদেশ দান করেছিলেন। এছাড়া বৌদ্ধযুগের যেসব ভিক্ষুণী বিনয় আলোচনার দ্বারা জ্ঞানার্জন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ‘সপত্তা’, ‘ছন্না’, ‘উপালি’ এবং ‘রেবতী’র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ‘সীবলা’ এবং ‘মহারুহা’ অনুরাধপুরে বিনয়পিটক, সুত্তপিটকের পাঁচটি গ্রন্থ এবং অভিধর্মের সাতটি গ্রন্থের অধ্যাপনা করতেন। ‘সমুদ্দনাভা’ অনুরাধপুরে বিনয়পিটক শিক্ষা দান করেছিলেন। (দীপবংশ, ১৮ পৰ্ব) ‘হেমা’ ত্রিবিধ বিজ্ঞানে পারদর্শিনী ছিলেন, এবং অলৌকিক শক্তি সম্বন্ধেও তাঁর জ্ঞান ছিল। (দীপবংশ, ১৫ পর্ব) তিনি বিনয়পিটক, সুত্তপিটকের পাঁচটি গ্রন্থ এবং অভিধর্মের সাতটি গ্রন্থ সম্বন্ধে উপদেশ দিতেন। (১৮ পৰ্ব) ‘অগ্‌গিমিত্তা’ (অগ্নিমিত্রা) ত্রিবিধ বিজ্ঞান আয়ত্ত করেছিলেন এবং অলৌকিক শক্তি সম্বন্ধেও তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল। (১৫ পৰ্ব) ‘চূলনাগা’, ‘ধন্না’, ‘সোণা মহাতিসসা’, ‘চুল-সুমনা’ এবং ‘মহাস্থমনা’ প্রভৃতি নারীরাও শিক্ষিতা, প্রতিভাসম্পন্না এবং শাস্ত্রজ্ঞা ছিলেন। (১৮ পৰ্ব) ‘নন্দুত্তরা’ বিদ্যা এবং শিল্পে পারদর্শিনী ছিলেন। (থেরীগাথা ভাষ্য, পৃ- ৮৭) তখনকার যে সমস্ত ভিক্ষুণী বিনয়পিটক আয়ত্ত করেছিলেন, ‘পটাচারা’ তাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠস্থানের অধিকারিণী ছিলেন (অঙ্গুত্তরনিকায়, ১ম খণ্ড, পৃ- ২৫; দীপবংশ, ১৮ সর্গ) এখানে উল্লেখিত থেরীগণ (ভিক্ষুনী) ছাড়াও তখনকার আরও অনেক নারীর নাম বৌদ্ধগ্রন্থগুলি থেকে পাওয়া যায়, যাঁরা তাঁদের বিদ্যাবত্তার জন্য সেই সময়ে খ্যাতিলাভ করেছিলেন। ‘উপলবন্না’, ‘সোভিতা’, ‘ইসিদাসিকা’, ‘বিশাখা’, ‘সবলা’, ‘সঙ্ঘদাসী’, এবং ‘নন্দা’ – বিনয় গ্রন্থ বিশেষরূপে আয়ত্ত করেছিলেন। ‘থেরী উত্তরা’, ‘মল্লা’, ‘পৰ্ব্বতা ফেগগু’, ‘ধৰ্ম্মদাসী’, ‘অগুগিমিত্তা’ এবং ‘পসাদপালা’ অনুরাধপুরে বিনয়পিটক ও সুত্তপিটকের পাঁচটি গ্রন্থ, এবং অভিধর্মের সাতটি গ্রন্থ থেকে উপদেশ প্রদান করতেন। ‘সধম্মনন্দি’, ‘সোমা’, ‘গিরিদ্ধি’, ‘দাসী’, এবং ‘ধম্মা’ – বিনয় গ্রন্থ বেশ ভাল ভাবেই পাঠ করেছিলেন। ‘সুমনা’, ‘মহিলা মহাদেবী’, ‘পছমা’ এবং ‘হেমসো’ অনুরাধপুরে বিনয়পিটক থেকে শিক্ষাদান করতেন। (দীপবংশ, ১৮ পৰ্ব) এছাড়া ‘দিব্যাবদান’ গ্রন্থে রাত্রিকালে বুদ্ধবচন-পাঠ নিরতা নারী-ছাত্রীর উল্লেখ পাওয়া যায়। (পৃ- ৫৩২)

(তথ্য সহায়ক গ্রন্থ:
১- Tāranātha’s History of Buddhism in India.
২- Power, Wealth and Women in Indian Mahayana Buddhism; Douglas Osto.
৩- The Position Of Women In Ancient Indian Buddhism, Kavita Chauhan.)

সব খবর পড়তে আমাদের WhatsApp গ্রুপে যুক্ত হোনএখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


প্রাসঙ্গিক খবর