Bangla Hunt Digital

কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রমরমিয়ে চলছে পুকুর ভরাট, হেলদোল নেই প্রশাসনের

কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রমরমিয়ে চলছে পুকুর ভরাট, হেলদোল নেই প্রশাসনের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রকাশ্য দিবালোকে রমরমিয়ে চলছে পুকুর ভরাট। কাউন্সিলারের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছে পুকুর ভরাট। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলার এবং পৌরপ্রধানকে বারবার জানিয়েও তারা কোন ব্যাবস্থা নেননি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন বারবার পুকুর ভরাটের (Pond Filling) বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলছেন, প্রশাসনিক আধিকারিকদের, ঠিক তখন মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিকে পাত্তা না দিয়েই কাঁচরাপাড়া পৌর অঞ্চলের মধ্যে কাউন্সিলারের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছে পুকুর ভরাট।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঁচরাপাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এটি একটি বহু পুরনো পুকুর। এলাকায় এটি সূর্যপুকুর নামে পরিচিত। এক সময় বহু মানুষ এখানে স্নান করতে আসতেন। কিন্তু সিপিএমের রাজত্বকালের পরে নতুন সরকার আসার পরেই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্মে পুকুরটি ভরাট হতে থাকে। এখন যদি এই পুকুরটি পুরো ভরাট হয়ে যায় তাহলে এলাকার জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা পুরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। এখন যদি এই পুকুরটি ভরাট হয়ে যায় তাহলে সেই জল কোথায় যাবে? পৌর প্রশাসন কেন এদিকে নজর দিচ্ছে না? কোন স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে কি?

এদিকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানোর পরে পৌরপ্রধান কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রীতিমত তারা অপমানিত বোধ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, এই পুকুরটির ব্যাপারে জানাতে কোথায় না গিয়েছি? থানা, পৌর প্রশাসন, বি এল আরও অফিস কিন্তু কোন সুরাও হচ্ছে না। প্রকাশ্য দিবালোকে কিছু লোক মুখ ঢেকে এসে পুকুর ভরাট করে চলেছে। প্রশাসনের কোন হেল দোল নেই।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলার শর্মিষ্ঠা মজুমদারকে প্রশ্ন করা হল, তিনি বলেন বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। স্থানীয় মানুষ লিখিতভাবে আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। পুরো বিষয়টি আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানিয়েছি।

আইন কি বলছে?

সম্প্রতি, একটি মামলায় বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট রুখতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরেই এবার জলাভূমি ভরাট নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের মৎস্য দফতর।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলাভূমি ভরাটের কোনও অভিযোগ পেলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুধু তাই নয়, এই সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার পরেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকরাও কোনও পদক্ষেপ না করলে তাদেরকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া অন্যায়ভাবে কেউ জমির চরিত্র বদল করলেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি এনিয়ে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলাভূমির চরিত্র কোনভাবেই বদল করা যাবে না, জলাভূমির চরিত্র বদলের কোনও অভিযোগ পেলেই সেই মুহূর্তে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ব্যবস্থা না নিলেই ওই সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার।

কিন্তু, এখন প্রশ্ন হল প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এই পুকুর ভরাটের কাজ চলছে বহাল তবিয়তে ! কীভাবেই বা এত সাহস পাচ্ছেন আইনভঙ্গকারীরা? তাহলে কি পিছনে প্রভাবশালী কারোর মদত রয়েছে? যে কারণে আইনকে তোয়াক্কা না করে পুকুর ভরাট করতেও হাত কাঁপছে না তাঁদের? এমনই সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে । যদিও, পুকুর ভরাটের অভিযোগ সামনে আসতেই চাপে পড়ে শেষ বেআইনি সেই কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ প্রশাসন ।

Related Post