গ্রীক পুরাণ অনুযায়ী ভালোবাসা সৌন্দর্য এবং চিরযৌবনের দেবী ছিলেন আফ্রোদিতি। যার জন্ম কাহিনী নিয়ে রয়েছে বহু মতামত। হেসিয়ডের ‘THEOGONY’অনুযায়ী তাঁর জন্ম হয়েছিল সাইপ্রাস দ্বীপের পেফোসের জলের ফেনা থেকে এবং তাঁর পিতা ছিলেন ইউরেনাস। আবার, হোমারের ‘ইলিয়াড’ অনুযায়ী জিউস এবং ডিয়নের কন্যা ছিলেন আফ্রোদিতি৷ আফ্রোদিতি ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী। যার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে নিয়ে দেবতাগন নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়তেন৷ এইজন্য জিউস আফ্রোদিতির সাথে হেপাইসটাসের বিবাহ দিয়েছিলেন। কারন হেপাইসটাস ছিলেন অসুন্দর মুখাবয়ব ও বিকলাঙ্গ যার জন্য তার কোন প্রতিদ্বন্দী ছিলো না। তবে আফ্রোদিতিদের বিবাহ হেপাইসটাস সঙ্গে হলেও তাঁর প্রচুর প্রেমিক ছিলো৷ যেমন যুদ্ধের দেবতা এরেস৷ তবে শুধুমাত্র দেবতারাই নয় মানুষও সেই তালিকার মধ্যে ছিল।
আরো পড়ুন- আগামী দশকে মঙ্গলে বসতি স্থাপনে কী কী সমস্যা রয়েছে?
আফ্রোদিতি তার পুত্র ঈরোস এবং সাইকির প্রমকাহিনীতে একটি বড় ভূমিকা ছিল।
আফ্রোদিতি সম্পর্কে কিছু তথ্য:
১. ভালবাসা, সৌন্দর্য ও জননের দেবী হিসাবে পরিচিত ছিলেন আফ্রোদিতি ৷
২.তার জন্ম নিয়ে প্রচলিত রয়েছে দুইটি কাহিনী ৷ একটি হল হেসিয়ডের ‘THEOGONY’ অনুযায়ী তাঁর জন্ম হয়েছিল সাইপ্রাস দ্বীপের পেফোসের জলের ফেনা থেকে এবং তাঁর পিতা ছিলেন ইউরেনাস। এবং অপরটি হল, হোমারের ‘ইলিয়াড’ অনুযায়ী জিউস এবং ডিয়নের কন্যা ছিলেন আফ্রোদিতি৷
৩. আফ্রোদিতির বিবাহ হেপাইসটাসের সাথে হওয়া সত্ত্বেও হেপাইসটাসের সংকল্পের সাথে কখন তাঁর মনের ইচ্ছের মিল হয়নি।
৪. হারমোনিয়া নামের এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিল আফ্রোদিতি এবং এরেস। যে হেরেডোটাসকে বিয়ে করেছিল ৷
৫. হারমাফ্রোদিতাসেরও মা ছিলেন আফ্রোদিতি, তবে হেরমেস ছিলেন তার এই সন্তানের পিতা।
৬. জিউসের ইউরোপা নামক এক মানুষের প্রেমে পড়ার পিছনে হাত ছিল আফ্রোদিতি এবং তাঁর পুত্র ঈরেসের।
৭. আফ্রোদিতি ছিলেন এডোনিসের সৎ মা। তবে এডোনিসের জন্মের পর আফ্রোদিতির মনে মনে বাসনা ছিল এডোনিসকে পাওয়ার। এরপর এডোনিসকে ভালবেসে ফেলেন সে৷ সে এডোনিসের দেখভালের দ্বায়িত্ব দিয়েছিলো পারসিফোনিকে। তবে এডোনিসের প্রেমে পারসিফোনি নিজেও পড়ে গিয়েছিলো, এবং তাকে ফেরত দিতে চাইছিলো না৷ এই অবস্থায় জিউস আসেন তাদের মধ্যে মধ্যস্থতায় করার জন্য। তিনি আদেশ দেন যে দুই জনের সাথেই থাকবে এডোনিস। এক বছরে অর্ধেক সময় অতিবাহিত করতে হবে আফ্রোদিতির সাথে বাকি অর্ধেক অতিবাহিত করতে হবে পারসিফোনির সাথে৷
৮. তার চিত্রে তার বাহন হিসেবে দেখা যায় এক ধরনের রাজহাঁস। যেটি হাওয়ায় ভেসে চলত৷
৯. ট্রোজান যুদ্ধের কথা আমরা সবাই জানি। জানা যায় যে এই যুদ্ধের পিছনে দায়ী ছিল প্যারিসের বিচারকার্যের ফলাফল। কারন একসময় আফ্রোদিতি, হেরা, এথেনা এই তিন জনের মধ্যে একটি প্রতিযোগী ছিল কে সবচেয়ে সুন্দরী? সে পাবে একটি স্বর্ণের আপেল। জিউসকে এই প্রতিযোগীতার বিচারকার্য পরিচালনা করা দায়িত্ব নেন না। তখন এই প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব নেন ট্রয় নগরের রাজার পুত্র প্যারিস। এই প্রতিযোগিতায় প্যারিস আফ্রোদিতির পক্ষে রায় দিয়েছিলেন৷
১০. প্যারিসের পক্ষে থেকে আফ্রোদিতি লড়াই করেছিলেন ট্রোজান যুদ্ধের সময়।